খেরসনে বিজয় উৎসব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: শহরের আকাশে উড়ছে স্বাধীনতার পতাকা। রাস্তায় রাস্তায় আনন্দ মিছিল। শ্যাম্পেইনের ফেনা উড়িয়ে জয়োল্লাস আর অলি-গলিতে জাতীয় সংগীতের সুর।

শনিবার দীর্ঘ নয় মাস পর রাশিয়ার কাছ থেকে মুক্তি পাওয়ার আনন্দে মুখর ছিল ইউক্রেনের বন্দরনগরী খেরসন। অঞ্চলটির দক্ষিণে দিনিপ্রো নদীর পশ্চিম তীর থেকে নিজেদের সৈন্য প্রত্যাহার করে রাশিয়া।

ধারণা করা হয় ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রতিরোধে টিকতে না পেরেই খেরসনের পশ্চিম তীর ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু। সৈন্য পুরোপুরি সরিয়ে নিলে সেখানে প্রবেশ করে ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা।

চলতি বছরের মার্চে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুতে মার্চের প্রথম সপ্তাহেই এ অঞ্চল দখলে নেয় রাশিয়া। অধিকৃত চার অঞ্চলের মধ্যে এটিই ছিল প্রথম। তবে সম্পূর্ণ খেরসন দখলে দুই মাস লেগে যায় রুশ বাহিনীর।

খেরসন পুনরুদ্ধারের পর ‘অসাধারণ বিজয়’ উল্লেখ করে অভিবাদন জানায় হুয়াইট হাউজ। মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান জানান, রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চল ইউক্রেনের পতাকায় ফিরে এসেছে। এটি একটি অসাধারণ বিজয়। রাশিয়ার ফেলে যাওয়া অঞ্চল পুনরুদ্ধারের পর খুশিতে আত্মহারা হয়ে যান দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্রাদিমির জেলেনস্কি। তিনি একে ‘ঐতিহাসিক বিজয়’ বলে আখ্যায়িত করেন। বলেন, ‘আমাদের, খেরসন এখন আমাদের। আমরা দেশের দক্ষিণাঞ্চল ফিরে পেয়েছি।’ তিনি টেলিগ্রামে লিখেছেন, ‘শহরে আমাদের বিশেষ ইউনিট অবস্থান করছে।’ এ সময় তিনি একটি ভিডিও ফুটেজও ছাড়েন, যেখানে দেখা যায় খেরসনের বাসিন্দারা ইউক্রেনীয় সেনাদের সঙ্গে জড়ো হয়ে আছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুরেবা বলেন, ‘আমরা মাটির যুদ্ধে জয়ী হয়েছি। তবে যুদ্ধ অব্যাহত আছে।’ মস্কো জানায়, খেরসন থেকে ৩০ হাজার সৈন্য সরিয়ে নিয়েছে তারা। কোনো সেনা নিহত হয়নি। কিয়েভ বাহিনী খেরসনে স্থানীয় টেলিভিশন নেটওয়ার্কে পুনঃসংযোগ স্থাপন করেছে বলে স্থানীয় মিডিয়া জানায়। তাদের তথ্য অনুসারে, রাশিয়া এ অঞ্চলের টেলিভিশন টাওয়ার, জ্বালানি সুবিধা, বিদ্যুৎ সুবিধা উড়িয়ে দিয়েছে।

প্রতিরোধ আরও শক্তিশালী করতে এবার নতুন পরিকল্পনার দিকে ঝুঁকেছেন জেলেনস্কি। ইউক্রেন দৃষ্টিপাত করবেন নৌ ড্রোন সংগ্রহে বলে শুক্রবার জানান তিনি। কৃষ্ণ সাগর থেকে উৎক্ষেপণ করা রুশ ক্ষেপণাস্ত্র থেকে আত্মরক্ষার জন্যই এ পদক্ষেপ নেবে কিয়েভ। ইতোমধ্যে ‘ইউনাইটেড ২৪’ শীর্ষক ক্যাম্পেইনের আওতায় তহবিল সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছে তারা। তবে এই তহবিল যুদ্ধের শুরু থেকে ছিল। যা যুদ্ধের খরচ সংগ্রহে ব্যবহার করা হতো। তহবিল সংগ্রহের সাইটটি থেকে জানানো, রুশ হামলা মোকাবেলায় ১০০টির বেশি ড্রোনের প্রয়োজন পড়তে পারে। ব্যয়বহুল একেকটি ড্রোনের খরচ পড়বে দুই লাখ ৭৪ হাজার ডলার। তাদের দাবি ফেব্রুয়ারিতে আক্রমণের শুরু থেকে রাশিয়া ইউক্রেনে চার হাজারেরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। যাদের মধ্যে পঞ্চমবারের হামলাটি করা হয় সমুদ্র থেকে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট টেলিগ্রামে বিবৃতিতে বলেন, ‘নৌ ড্রোনগুলো বেসামরিক শস্য পরিবহণকারী জাহাজগুলোকে মুক্তভাবে করিডোরে বিচরণ করতেও সাহায্য করবে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *