রংপুরে জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী আ.লীগে প্রত্যাশী অর্ধডজন

নিউজ ডেস্ক:: রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন আগামী ২৭ ডিসেম্বর। দলীয় প্রতীকের এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আগেভাগেই তাদের দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির প্রায় অর্ধডজন নেতা ‘নৌকা’ পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তারা নানাভাবে নগরবাসীর দৃষ্টিতে আসার চেষ্টা করছেন। অনেকে ব্যানার-ফেস্টুন সাঁটিয়ে দোয়া কামনা করছেন। কেউ কেউ বিভিন্ন সভা-সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন। অন্যসব দলও এখন কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে।

জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশনের এটি তৃতীয় নির্বাচন। এর আগে ২০১২ ও ২০১৭ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই দুটি নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মধ্যে। বিএনপি খুব একটা সফলতা দেখাতে পারেনি। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে না এলে এবারও মূল লড়াইটা হবে আওয়ামী লীগ ও তার রাজনৈতিক মিত্র জাতীয় পার্টির মধ্যেই। এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার দুই সপ্তাহ আগে ২৫ অক্টোবর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের তাদের দলীয় প্রার্থী হিসাবে বর্তমান সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার নাম ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই মোস্তফা দলকে সুসংগঠিত করতে মনোনিবেশ করেন। তিনি তফশিল ঘোষণার আগের রাতে অর্থাৎ ৬ নভেম্বর নগরীতে বিশাল মোটরসাইকেল শোডাউন করেছেন।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী কে হবেন, তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দলের হাইকমান্ড ঘোষণা না দিলেও মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন অর্ধডজন নেতা। নৌকা পেতে চান রংপুর নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সফিয়ার রহমান সফি, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল, রংপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম, কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার লতিফুর রহমান মিলন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আতাউর জামান বাবু ও রংপুর মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ। তারা নগরীজুড়ে দোয়া কামনা করে ব্যানার ফেস্টুন লাগিয়েছেন। সভা-সমাবেশেও যোগ দিচ্ছেন।

এছাড়াও নগরীতে পোস্টার-ফেস্টুন না সাঁটালেও লোকমুখে আছে আরও দুজনের নাম। তারা দলের হাইকমান্ডের দিকে তাকিয়ে আছেন। তারা হলেন-কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা চৌধুরী খালেকুজ্জামান ও রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সাখাওয়াত হোসেন সফিক বলেন, শুধু সিটি করপোরেশন নির্বাচন নয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়েও আওয়ামী লীগ চূড়ান্ত পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। আমরা প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া চালাচ্ছি। আমাদের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় রংপুর সিটি নির্বাচন বিচ্ছিন্ন কোনো অংশ নয়। তিনি বলেন, বিগত দিনের চেয়ে রংপুর মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ অনেক সুসংগঠিত। আমরা খুব শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।

২০১২ সালের ২৮ জুন রংপুর পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করে সরকার। একই বছরের ২০ ডিসেম্বর প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে ১ লাখ ৬ হাজার ২৫৫ ভোট পেয়ে প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন প্রয়াত সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু। ৭৭ হাজার ৮০৫ ভোট পেয়ে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বর্তমান মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। আর ২০১৭ সালের নির্বাচনে মেয়র ঝন্টুকে প্রায় এক লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। এ নির্বাচনের কয়েক মাসের মধ্যে মারা যান ঝন্টু।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *