সাবেক ডিআইজি প্রিজন্স বজলুরের ৫ বছর কারাদণ্ড

নিউজ ডেস্ক:: তিন কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯০২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় কারা অধিদপ্তরের সাময়িক বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) বজলুর রশীদের ৫ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এছাড়া তাকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেন এ রায় দেন।

গত ২২ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ধার্য করেন আদালত।

২০১৯ সালের ২০ অক্টোবর সকাল ১০টায় সস্ত্রীক বজলুর রশীদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকে দুদক। জিজ্ঞাসাবাদের পর বজলুরকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিনই দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাউদ্দিন বাদী হয়ে বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

২০২০ সালের ২৬ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. নাসির উদ্দীন ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন।

২২ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

যুক্তিতর্কের সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতকে বলেন, আসামির বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের বাইরে ৩ কোটি ৮ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

তিনি অভিযুক্তের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছিলেন।

এর আগে গত বছরের ২১ ডিসেম্বর ডিআইজি প্রিজন্স বজলুর রশীদকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গুরুদণ্ড দিয়ে তাকে সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর দৈনিক একটি জাতীয় পত্রিকায় প্রথম পাতায় ‘বেপরোয়া ডিআইজি প্রিজন্সের ঘুসকাণ্ড, স্ত্রী কুরিয়ার সার্ভিসে নেন কোটি কোটি টাকা’শীর্ষক প্রকাশিত সংবাদের সঙ্গে একটি ভিডিও ক্লিপের কিউআর কোডও প্রকাশ করা হয়েছে। বজলুর রশীদের স্ত্রী রাজ্জাকুন নাহারের নামে মিথ্যা ও ভুল তথ্য দিয়ে নিবন্ধিত ০১৮৫৬৫৫৩৫৮নং মোবাইল ফোনের সিম ব্যবহার করা হয়েছে। এই সিম নাম্বারে বিভিন্ন সময়ে এসএ পরিবহণের মাধ্যমে তৌহিদ হোসেন, বিথি ও দুলালের নামে ৩০টি রসিদে ৯৮ লাখ ৩৫০ টাকা পাঠানো হয়েছে। এতে প্রমাণিত হয় যে প্রকাশিত সংবাদে বর্ণিত ঘটনার সঙ্গে বজলুর রশীদ সরাসরি জড়িত।

চাকরি ক্ষেত্রে এমন আচরণ সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ এর ৩(খ) বিধি মোতাবেক অসদাচরণ। এ ধারাবাহিকতায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা নং ০৯/২০২ রুজু করা হয়।

এ বিষয়ে ২ মার্চ ২০২০ তারিখে স্মারক উল্লেখ করে অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী পাঠানো হয়।

পত্রিকার  রিপোর্ট প্রকাশের পর ডিআইজি বজলুর রশীদের জ্ঞাতআয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়ে দুদক অনুসন্ধানে নামে। ২০১৯ সালের ২০ অক্টোবর জবানবন্দি নিতে তাকে দুদকে তলব করা হয়। সেখানে তাকে বেইলী রোডে রূপায়ন সেন্টারে প্রায় ৩ হাজার স্কয়ার ফিটের একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কেনার অর্থের উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ফ্ল্যাটটি তিনি ৩ কোটি ৮ লাখ টাকায় কেনেন। কিন্তু এ বিপুল অঙ্কের টাকার কোনো বৈধ উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। এরপর ওইদিনই তার বিরুদ্ধে মামলাসহ তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *