ডিসেম্বরে বিএনপিকে মাঠে নামতে দেবে না আ.লীগ

নিউজ ডেস্ক::‘১০ ডিসেম্বরের পর দেশ চলবে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে’ বিএনপি নেতাদের এমন হুংকারের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতা বলেছেন, আগামী ডিসেম্বরে বিএনপিকে মাঠে নামতে দেওয়া হবে না।

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এই হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ডিসেম্বরজুড়েই আওয়ামী লীগের কর্মসূচি দেওয়া হবে।

শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ডা. অরূপ রতন চৌধুরী।

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বিএনপি বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসী এবং চিহ্নিত অপরাধীদের সমাবেশ ঘটাচ্ছে। বিএনপি একটা সুযোগের অপেক্ষায় আছে। একেক সময় একেকটা ছোট-বড় সুযোগ আসে। সেটাকে পুঁজি করেই তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। নির্বাচনের আরও এক বছর আছে। এর আগেই তারা ক্ষমতা দখলের জন্য, উল্টো পথে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য পাঁয়তারা শুরু করেছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন। আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ বাঙালি জাতিকে উপহার দিয়েছে। আওয়ামী লীগ আন্দোলন-সংগ্রামকে ভয় পায় না। বিএনপি একটি খুনি, সন্ত্রাসী, চিহ্নিত অপরাধীদের রাজনৈতিক দল। ডিসেম্বর মাস মুক্তিযোদ্ধাদের মাস। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি বিএনপির সব সন্ত্রাসী কার্যক্রমকে প্রতিহত করবে। বিএনপি কাগজের বাঘ। এই দলটি ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে হত্যার মধ্য দিয়ে ক্যান্টনমেন্টের ভেতর থেকে যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে গঠিত হয়েছিল। আওয়ামী লীগকে হুমকি দিয়ে কোনো লাভ নেই।

মায়া আরও বলেন, আমানউল্লাহ আমানের মতো নেতা বক্তব্য দেয়- ১০ তারিখের পরে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকবে না। স্বাধীনতার মাসে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে তারা ঘোষণা দেয়। বিজয়ের মাসে বিএনপিকে সারা দেশের কোথাও নামতে দেওয়া হবে না। সারা মাসব্যাপী আমাদের কর্মসূচি থাকবে। সকালে একটা, বিকালে আরেকটা।

বিএনপি-জামায়াতসহ স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির রাজনীতি বন্ধ করার দাবি জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, ডিসেম্বরে বিএনপিকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ বিএনপি হলো মাজা ভাঙা দল।  বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের নিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে এই রাজনৈতিক দলটি গঠিত হয়েছিল।

তিনি বলেন, বিএনপির আমলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজপথে কখনো মিছিল-মিটিং করতে পারেনি। আওয়ামী লীগের অফিস কার্যালয়ের সামনে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে রেখেছিল।শেখ হাসিনা তাদের (বিএনপি) অবাধে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের সুযোগ করে দিয়েছেন।

বিএনপিকে উদ্দেশ করে কামরুল ইসলাম বলেন, তাদের যে কথাবার্তা, লজ্জা লাগে। আমাদের পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করতে চায়। যে ভাষা আমাদের লোকজনের বিরুদ্ধে উচ্চারণ করে, যে ভাষায় তারা হুংকার দিচ্ছে আমাদের নেতাকর্মীদের উত্তেজিত করার জন্যে, তারা চায় আমাদের তৃণমূল নেতাকর্মীরা যাতে উত্তেজিত হয়, তাদের ওপর আক্রমণ করে। তবে আমাদের নেতাকর্মীরা ধৈর্য ধরে আছে।এজন্য তারা (বিএনপি) অরাজনৈতিক ভাষায়, নোংরা ভাষায় আস্ফালন করছে। তাই পরিষ্কার কথা- এদের আর বরদাশত করা হবে না, মাঠে থাকতে দেওয়া যাবে না।

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে কামরুল ইসলাম আরও বলেন, তিন মাসের তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুই বছর ছিল। মাইনাস থিউরিতে আমার নেত্রীকে জেলে নিয়েছিল, তোমার নেত্রীকে জেলে নিয়েছিল। আজ খালেদা জিয়া যেই মামলায় জেলে, সেই মামলা তখনকার তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে হয়েছিল। তাদের (বিএনপি) নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন করেছিল, আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন হয়েছিল। সেই কথা কি আমরা ভুলে গেছি?

‘ন্যাড়া বেলতলায় একবারই যায়’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ওই তত্ত্বাবধায়ক নির্দলীয় সরকার বাংলার মাটিতে জিন্দেগিতে প্রতিষ্ঠিত হবে না। প্রশ্নই আসে না। যত আন্দোলন করেন, যতই লাফালাফি করেন, ওই অবস্থায় বাংলাদেশ ফিরে যাবে না।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *