অন্তঃসত্ত্বা বলেও ধর্ষকদের হাত থেকে রেহাই মেলেনি!

নিউজ ডেস্ক:: বিপদ আঁচ করে নিজের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থার কথা বললেও ধর্ষকদের মন গলেনি। রেহাই মেলেনি পাষণ্ডদের হাত থেকে। দল বেঁধে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে বখাটেরা। ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগী পার্লারকর্মী নারী পুলিশের কাছে ঘটনার এমন বর্ণনা দেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে (ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার) চিকিৎসাধীন।    

ধর্ষণের ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুই যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরা হলেন রিয়াদ ও ইয়াছিন হোসেন সিয়াম। তবে জিতু ও তাসলিমা নামের দুই অভিযুক্ত এখনো পলাতক।
প্রসঙ্গত হোম সার্ভিসে পার্লার সেবা দিতে গিয়ে ধানমন্ডির শুক্রাবাদে মঙ্গলবার ধর্ষণের শিকার হন পার্লারকর্মী। তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

বৃহস্পতিবার দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পর ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে ডিসি (তেজগাঁও) এইচ এম আজিমুল হক বলেন, পার্লার সেবা নেওয়ার অজুহাতে ভুক্তভোগীকে ডাকা হলেও ধর্ষণের ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত। বখাটে রিয়াদ এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। তবে বাকি আসামিদের গ্রেফতার করতে পারলে ঘটনার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।

ভুক্তভোগী ওই নারী পুলিশকে জানান, তিনি ফেসবুকের মাধ্যমে হোম সার্ভিসে নারীদের পার্লার সেবা দেন। মঙ্গলবার ফেসিয়ালের জন্য এক নারী তাকে ফোন করেন। ধানমণ্ডি ২৮ নম্বর সড়কে যেতে বলা হয় তাকে। সেখানে গেলে তাকে ভবনের দোতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বাসায় তিন যুবককে দেখতে পান তিনি। এক পর্যায়ে তারা ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। ঘটনার পর তার মুঠোফোনটি কেড়ে নেয় ধর্ষকরা।

পুলিশ জানায়, রাত ১০টার দিকে সেখান থেকে ছাড়া পান ভুক্তভোগী। পরে তিনি তার স্বামীকে ঘটনার কথা জানান। তার স্বামী এসে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পুলিশকে জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেফতার দুই বখাটের মধ্যে রিয়াদ নিউ মডেল কলেজের শিক্ষার্থী। তবে সে এলাকায় টিকটক রিয়াদ নামে পরিচিত। এ ছাড়া ইয়াসিন হোসেন জিতু তেমন লেখাপড়া করেনি। সেও বখাটে এবং মাদকাসক্ত।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রুবাইয়াত জামান সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিন যুবকই বখাটে। এলাকায় তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। তবে এ ঘটনায় তসলিমা নামের যে নারীর নাম এসেছে তাকে নিয়ে ইতোমধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। তসলিমা চরিত্রটি সাজানো হতে পারে। তবে মামলার তদন্তে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

পুলিশ জানায়, ফেসবুকে স্কট সার্ভিসের (পতিতাবৃত্তি) নামে অসংখ্য পেইজ দেখা যায়। এতে বির্ভিন্ন তরুণীর ছবিসহ মোবাইল নম্বর দিয়ে যুবকদের প্রলুব্ধ করে প্রতারকরা। এমনকি এসবের আড়ালে বড় ধরনের অপরাধও সংঘটিত হয়। তাই এসব পেজের বিজ্ঞাপনে প্রলুব্ধ না হয়ে বরং সতর্ক থাকতে হবে।

বৃস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগীর স্বামী সাংবাদিকদের বলেন, তিনি হাসপাতালে স্ত্রীর পাশে আছেন। স্ত্রীর চিকিৎসা চলছে। তাকে উচ্চ মাত্রায় ঘুমের ওষুধ দেওয়ায় ঠিকভাবে গুছিয়ে কথা বলতে পারছে না। তবে আশঙ্কার তেমন কিছু নেই বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *