কুমিল্লা বোতলের তেল ড্রামে ঢেলে খোলা বিক্রি!

সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক:: কুমিল্লার চান্দিনায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের প্রভাবে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে সয়াবিন তেলের বাজর। বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল ৭৬০ টাকার স্থলে ৯৬০ থেকে ১ হাজার টাকায় এবং খোলা তেল ২শ টাকা লিটার দরে বিক্রি হচ্ছে। নিয়ন্ত্রণহীন তেলের মূল্য নিয়ে ডিলার ও দোকানিরা একে অপরকে দোষারোপ করছেন।

সরেজমিনে চান্দিনা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চান্দিনা বাজারে তীর, পুষ্টি, বসুন্ধরা ও ফ্রেশ কোম্পানির বোতলজাত ভোজ্য তেল সরবরাহকারী ডিলার নিয়োগ রয়েছেন। এছাড়া কুমিল্লা থেকে কয়েকজন ডিলারের মাধ্যমে খোলা ভোজ্য তেলে চলছে পুরো চান্দিনা বাজার।

গত কয়েক মাস যাবত ভোজ্য তেলের দাম চড়া। সম্প্রতি ঈদকে সামনে রেখে লিটার প্রতি বোতলজাত সয়াবিন তেল নির্ধারিত মূল্যে থেকে ৪০-৪৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে বোতলজাত তেলের চেয়ে খোলা তেলের দাম বেশি হওয়ায় এবং খোলা তেলে মূল্য নির্ধারণ স্টিকার না থাকায় অসাধু ব্যবসায়ীরা বোতলজাত তেল ড্রামে ঢেলে খোলা বিক্রি করছে! তেল নিয়ে ব্যবসায়ীদের এমন তেলেসমাতিতে বিপাকে পড়েছে সাধারণ ক্রেতারা।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ডিলারদের কাছ থেকেই বেশি দামে কিনি আমরা। পাঁচ লিটার বোতল আমরা ৭৬০ টাকার স্থলে ৮৯০ টাকা করে কিনে আনছি এবং তা ৯৩০-৯৬০ টাকায় বিক্রি করি।

এদিকে ডিলারদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা মমেলেনি অনুসন্ধানে। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ডিলাররা ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতি ৫ লিটার তেল বিক্রি করছেন ৭৫৫ টাকা দরে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে সেটাকে সাধারণ ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন ৯৬০-১০০০ টাকায়। আর কৌশলে দোষ চাপাচ্ছেন ডিলারদের উপরে।

সোমবার চান্দিনা বাজারে আসা ক্রেতা বাবুল হোসেন জানান, আমি বেসরকারি চাকরিজীবী। ঈদের কেনাকাটায় মুদি দোকানে তেল কিনতে এসে বিপাকে পড়ে গেছি। পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের গায়ের মূল্য ৭৬০ টাকা আর দোকানদার দাম নিচ্ছেন ৯৬০ টাকা! খোলা তেল কিনতে গিয়েও আরও বেশি বেকায়দায়। প্রতি লিটার খোলা তেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা! এই অরাজকতা দেখার কি কেউ নেই! বাজার মনিটরিং করা অতীব জরুরি বলে মনে করেন তিনি।

উপজেলার বানিয়াচং গ্রামের এক গৃহবধূ ঈদের বাজার করতে এসে বলেন, স্বামী দেশের বাহিরে থাকেন। বাধ্য হয়ে আমি নিজেই বাজার করতে হয়। মহিলা মানুষ দোকানে গিয়ে সব কিছুর দর কষাকষি করাও সম্ভব হয় না। মুদি দোকান থেকে ৩ হাজার ২৫০ টাকার খরচ করে দোকানের স্লিপ হাতে নিয়ে দেখি ৫ লিটার তেলের দাম ৯৮০ টাকা রেখেছেন! কিন্তু বোতলের গায়ে লেখা ৭৬০ টাকা। গায়ের দামের চেয়ে এত বেশি দাম রাখা হয় তা আমার জানা ছিল না।

শওকত জামান নামে এক ডিলার ব্যবসায়ী জানান, আমরা গায়ের রেট এর বাহিরে কোনো মালামাল সরবরাহ করি না। প্রায় ১৫/১৬ দিন আগে ৫ লিটার সয়াবিন তেল খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেছি ৭৫০-৭৫৫ টাকা করে। মাল বিক্রির মেমোও আমাদের কাছে আছে। বেশি দামে বিক্রির ডকুমেন্ট যদি কোন ব্যবসায়ী দেখাতে পারে আমি জরিমানা দিব।

অতিরিক্ত দামে সয়াবিন তেল বিক্রির ব্যাপারে চান্দিনা বাজারের মুদি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. বাহারুল ইসলাম বাহার জানান, অতিরিক্ত দামে তেল বিক্রির ঘটনায় ব্যবসায়ীরা জড়িত নয়, এর জন্য দায়ী ডিলার ব্যবসায়ীরা।

এ ব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. জিয়াউল হক মীর জানান, বিষয়টি জেনেছি। বাজার মনিটরিং করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *