চীনের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে, জানালেন শাহবাজ শরীফ

প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে শাহবাজ শরীফ চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বলেন, চীন ও পাকিস্তানের যে সুদীর্ঘকালের বন্ধুত্ব, তা কেউ আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে পারবে না।

সোমবার পার্লামেন্টে ভাষণে শাহবাজ নতুন সরকারের পররাষ্ট্র নীতির আভাসে চীনকে সামনে আনেন। চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) স্থাপন প্রকল্প আরও দ্রুতগতিতে এগিয়ে নেওয়ার কথাও বলেন তিনি।

শাহবাজ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় চীনের সাহায্যে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রকল্পে হাত দিয়েছিলেন। ওই প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হয় বলে চীন তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিল। তিনি নিজেও বহু বার চীন সফর করেন।

বিশ্ব রাজনীতিতে এখন প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। ঐতিহ্যগতভাবে পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্র ঘেঁষা। কিন্তু সম্প্রতি চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনে বেশি আগ্রহী হয়ে দেখা যাচ্ছে পাকিস্তানকে।

ইমরান খান অভিযোগ করেছিলেন, চীন ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিরাগভাজন হন এবং ওয়াশিংটনের ‘চক্রান্তেই’ তাকে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ সতর্কতার সঙ্গে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক হবে পারস্পরিক সমতার ভিত্তিতে।

অর্থাৎ পাকিস্তানের রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃত্বের যে কথা বলা হয়ে থাকে, দৃশ্যত তা অপছন্দের কথা বললেন তিনি।

এদিকে শাহবাজ শরীফ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর চীনের প্রতিক্রিয়াও সামনে এসেছে।  ইসলামাবাদের চীনা দূতাবাস এক টুইটে জানিয়েছে, পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যাই হোক পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের অকৃত্রিম বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট থাকবে।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে মুখপাত্রের বরাতে ওই টুইটে বলা হয়, পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিবর্তন ও পরিস্থিতি চীন-পাকিস্তান সম্পর্কের মৌলিক অবস্থানে কোনো ব্যাঘাত ঘটাবে না।

সোমবারই পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন শাহবাজ শরীফ। ইসলামাবাদের আইওয়ান-ই-সদরে এক যুগান্তকারী অনুষ্ঠানে তিনি শপথ নেন।

সিনেটের চেয়ারম্যান সাদিক সানজরানি প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির অনুপস্থিতিতেই শাহবাজকে শপথবাক্য পাঠ করান।

এর আগে সোমবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে ১৭৪ জন সদস্য শাহবাজ শরীফের পক্ষে ভোট দেন। বিপক্ষে কেউ ভোট দেননি কেউ।

এই ১৭৪ জন সদস্যই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে  তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেয়।

শাহবাজ শরীফের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের কো চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ কোরেশির। কিন্তু অধিবেশন শুরু হওয়ার পর কোরেশি ঘোষণা দেন পিটিআইয়ের সব সদস্য পদত্যাগ করবেন।

তার এ ঘোষণার পর পিটিআইয়ের সকল সদস্য ও ডেপুটি স্পিকার কাসেম সুরিও বের হয়ে যান।

এর ফলে পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শাহবাজ শরীফ নির্বাচিত হয়ে যান।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *