যে কারণে ট্রেনে কিয়েভে তিন প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে তীব্র সংঘাত চলছে। ইউক্রেনের একের পর এক শহরে ধ্বংসের ছবি সামনে এসেছে। তারই মধ্যে ট্রেনে করে মঙ্গলবার কিয়েভে পৌঁছান পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র ও স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী।

মূলত সংহতি জানাতেই তিন প্রধানমন্ত্রী এই সফর করেন। কিয়েভ সফর শেষে বুধবার সকালে তারা পোল্যান্ডে ফিরে আসেন।

পোলিশ সরকারের মুখপাত্র পিওর মুলার টুইটারে বলেছেন, পোলিশ, স্লোভেনিয়া ও চেক প্রতিনিধি দল নিরাপদে কিয়েভ থেকে পোল্যান্ডে ফিরে এসেছেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর পশ্চিমা নেতাদের মধ্যে প্রথম ওই তিন প্রধানমন্ত্রী ইউক্রেন সফর করলেন। এএফপি, বিবিসি ও ডয়েচে ভেলে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দিক থেকে নিরাপত্তা ঝুঁকির সতর্কবাণী সত্ত্বেও তিন প্রধানমন্ত্রীর এ সফরের উদ্যোক্তা ছিল পোল্যান্ড। তিন প্রধানমন্ত্রী ট্রেনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কারণ পোলিশ সামরিক জেটের উড্ডয়ন রাশিয়ার কাছে বিপজ্জনক উসকানি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। পোল্যান্ডসহ তিনটি দেশই ইইউ ও ন্যাটোর সদস্য। এই তিন নেতাই ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রতিনিধি হিসাবে কিয়েভ সফর করেন। পোল্যান্ডের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তিন প্রধানমন্ত্রী ইইউর তরফে সাহায্যের প্যাকেজও ইউক্রেনকে দেওয়ার কথা জানান। কিয়েভে তাদের উপস্থিতির অর্থই হলো, ইউক্রেনকে সমর্থনের বার্তা দেওয়া।

পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতিউস মোরাভিয়েস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, এখানে এই যুদ্ধবিধ্বস্ত কিয়েভে, ইতিহাস তৈরি হচ্ছে। এখানেই স্বাধীনতা সংগ্রামীরা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়েছেন। আমাদের ভবিষ্যৎ একটা সরু সুতোর ওপর ঝুলছে। পোল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী কাচয়েনস্কি দাবি করেছেন, ইউক্রেনে একটি আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। তিনি বলেন, আমি মনে করি, ইউক্রেনে একটা শান্তি মিশন জরুরি। ন্যাটোর একটা আন্তর্জাতিক কাঠামো আছে। এই বাহিনীর নিজেদের রক্ষা করার ক্ষমতা থাকবে ও তা ইউক্রেনের মাটিতে দাঁড়িয়ে কাজ করবে।

চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী পিটার ফিয়ালা টুইট করে বলেছেন, এই সফরের উদ্দেশ্য হলো, ইউক্রেন ও তাদের স্বাধীনতার প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সুস্পষ্ট সমর্থন জানানো।

স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী জেনেজ জানসাও টুইট করে বলেছেন, আমাদের এই মহাদেশে ইউক্রেনের থেকে বড় ইউরোপীয় দেশ আর নেই। ইউক্রেনের মানুষ যেভাবে জীবন দিয়ে ইউরোপীয় মূল্যবোধ রক্ষা করছেন তার প্রশংসাও করতেই হবে।

কারফিউ বলবৎ হওয়ার পর মঙ্গলবার বিকালে কিয়েভে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিন প্রধানমন্ত্রী। পরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ব্রিফিং করেন তারা। উভয় নেতা তিন প্রধানমন্ত্রীকে তাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান। ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে যখন তিন প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক চলছিল, সেই সময় কিয়েভজুড়ে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

জার্মানির চ্যান্সেলর শলৎস এই তিন প্রধানমন্ত্রীর ইউক্রেন সফরকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দিক থেকে চেষ্টা ও সাহায্য করাটা ভালো। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশ ইউক্রেনকে সাহায্য করার স্পষ্ট রাজনৈতিক নীতি নিয়েছে। তিনি বলেন, এখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলা যেমন দরকার, তেমনই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গেও কথা বলে তাকে যুদ্ধবিরতির জন্য উৎসাহ দেওয়া দরকার। আমরা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করব। আর এটাই হওয়া উচিত।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *