রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যেমন খোলাখুলি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররাই তার প্রধান টার্গেট। ঠিক একইভাবে কোনো রাকঢাক না করেই পশ্চিম বলছে, রাশিয়াকে আর্থিকভাবে পঙ্গু করে ফেলা হবে।
এই মুহূর্তে রাশিয়ার গোলায় ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে ইউক্রেন। কিন্তু ভয়াবহ এই হামলা থেকে দেশটির জনগণকে বাঁচাতে তেমন কিছুই করছে না যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো। তবে এই সুযোগে মস্কোকে অর্থনৈতিকভাবে আঘাত করার কোনো সুযোগই হাতছাড়া করছে না তারা। বিভিন্ন অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞার নামে রাশিয়ার ওপর একের পর এক অর্থনৈতিক গোলা ছুড়ছে।
ইউক্রেনকে একাকী ‘রুশ ভালুকের থাবা’য় ঠেলে দিয়ে মস্কো নিয়ন্ত্রিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর পশ্চিমারা আরোপ করছে ভয়াবহ সব নিষেধাজ্ঞা। ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের অপেক্ষাতেই যেন ছিল পশ্চিম।
অভিযান শুরু হতে না হতেই একের পর এক রুশ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সম্পদ জব্দ অব্যাহত রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যে কয়েক দফায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
এসব নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার সরকার ও প্রেসিডেন্ট পুতিন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে টার্গেট করা হয়েছে। পশ্চিমের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কানাডা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াও।
নিষেধাজ্ঞা আরোপের ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ আর্থিক লেনদেনের বার্তা প্রেরণের আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান সুইফট পেমেন্ট নেটওয়ার্ক থেকে বেশকিছু রাশিয়ান ব্যাংকগুলোকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মিত্ররা।
এতে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদগুলো জব্দ করা হবে। সেই সঙ্গে বৈদেশিক রিজার্ভে রাশিয়ার প্রবেশাধিকার সীমিত করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্রদের নিষেধাজ্ঞা ও অবরোধের মূল টার্গেট রাশিয়ার আর্থিক খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে রাশিয়ার বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর। রাশিয়ার ৮০ ভাগ ব্যাকিং সম্পদের নিয়ন্ত্রক এই ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানগুলো।
বৃহস্পতিবার ইউক্রেন অভিযানের দিনই রাশিয়ার প্রধান দুই ব্যাংক এসবার ও ভিটিবির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। রাশিয়ার মোট ব্যাংকিং সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ এসবার ব্যাংকের অধীন। এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে ব্যাংক ওতক্রিটি, সোভকম ব্যাংক ওজেএসসি, নোভিকম ব্যাংক এবং অন্যান্য ৩৪টি সাবসিডিয়ারির ওপর।
ভিটিবি রাশিয়ার ব্যাংকিং খাতের এক-পঞ্চমাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধের শিকার হয়েছে এরকম মাত্র ১৩টি প্রতিষ্ঠানেরই মোট সম্পদের মূল্য এক লাখ চল্লিশ হাজার কোটি ডলার।
এগুলো হলো এসবার ব্যাংক, আলফা ব্যাংক, ক্রেডিট ব্যাংক অব মস্কো, গ্যাজপ্রম ব্যাংক, রাশিয়ান এগ্রিকালচারাল ব্যাংক, গ্যাজপ্রম, গ্যাজপ্রম নেফট, ট্রান্সনেফট, রোসটেলিকম, রোসহাইড্রো, আলরোসা, সোভকমফ্লোট এবং রাশিয়ান রেলওয়েস।