দায়িত্ব নিলেন মেয়র আইভী, প্রথম দিনেই ‘কয়েকজন কাউন্সিলরের ক্ষোভ’

সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক:: আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়রের চেয়ারে বসেছেন তৃতীয় দফায় নির্বাচিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি শপথ নেওয়ার পর রোববার বেলা পৌনে ১২টায় শহরের নিতাইগঞ্জে নির্মাণাধীন নগর ভবনের অষ্টম তলায় অস্থায়ী মেয়রের কার্যালয়ে বসেন তিনি।

এদিকে প্রতিবার মেয়রের আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব নেওয়ার দিনটিতে সব নির্বাচিত কাউন্সিলরদের অফিসিয়ালি জানানোর রেওয়াজ থাকলেও এ বছর তার ব্যত্যয় ঘটেছে।

অভিযোগ উঠেছে, মেয়র আইভীর ঘনিষ্ঠ কিছু কাউন্সিলর ছাড়া সিংহভাগ কাউন্সিলরকেই এ অনুষ্ঠানের বিষয়ে জানানো হয়নি।

সিটি করপোরেশনের ৩৬ জন কাউন্সিলরের মধ্যে মাত্র ১৩ জন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে কয়েকজনকে সিটি করপোরেশন থেকে না জানালেও তারা স্বেচ্ছায় সেখানে হাজির হয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে অধিকাংশ কাউন্সিলর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

তবে কাউন্সিলরদের না জানানোর বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো ‘হাস্যকর’ ব্যাখ্যা দিয়েছেন নাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আবুল আমিন।

তিনি দাবি করেন, করোনার কারণে আয়োজন সীমিত করা হয়েছে। যদিও মেয়র আইভীর এ দায়িত্ব গ্রহণের অনুষ্ঠানে সিটি করপোরেশনের ঠিকাদারসহ কয়েকশ লোক উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে রোববার সকালে মেয়র আইভী তার দেওভোগের বাসা থেকে বের হয়ে মাসদাইর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করেন। পরে গাড়ি দিয়ে নগর ভবনে পৌঁছলে তাকে সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ফুল দিয়ে বরণ করেন।

পুনরায় মেয়রের চেয়ারে বসে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। তিনি বলেন, আমি সাধারণ মানুষকে প্রাধান্য দিয়ে মানুষ যা চায়, এ শহরকে সেভাবেই পরিচালনা করার চেষ্টা করেছি। বিগত পরিষদকে নিয়ে আমরা মানুষের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করেছি। আগামী পাঁচ বছর একইভাবে সাধারণ মানুষের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করব। নারায়ণগঞ্জ শহরের মানুষ অত্যন্ত আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমাদের ভোট দিয়েছেন। যারা আমাদের ভোট দিয়েছে আর যারা দেয়নি তাদের সবার জন্য কাজ করব।

তিনি আরও বলেন, এবারো অতীতের মতো সব কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে এ সিটি করপোরেশনে আমি কাজ করব। আমি আমার পরিষদকে আহ্বান জানাব আমরা মানুষের কল্যাণে কাজ করব। এখানে কোনো ধরনের দলাদলি, ধান্দাবাজি, চাঁদাবাজি হতে পারবে না। আমি ১৮ বছর যেভাবে কাজ করেছি সেভাবেই এখানে কাজ করব। আশা করি, আপনারা আমাকে সহযোগিতা করবেন। নগরবাসী সহযোগিতা করবে।

এ অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সিটি করপোরেশন থেকে কোনো কিছুই জানানো হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, শওকত হাশেম, আফজাল হোসেন, কামরুল হাসান মুন্না, নারী কাউন্সিলর আয়েশা আক্তার দীনাসহ বেশ কয়েকজন।

এ ব্যাপারে তারা কেউ কোনো মন্তব্য করেননি। তবে কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, করোনার দোহাই দিলেও সেখানে কি কম মানুষ ছিল! ৩৬ জন কাউন্সিলর কি স্বাস্থ্যবিধি মেনে উপস্থিত থাকতে পারত না! অনুষ্ঠানে তো ঠিকাদারই দেখলাম ২০ জনের বেশি।

এ ব্যাপারে নাসিকের প্রধান নির্বাহী আবুল আমিন জানান, করোনার কারণে এবার আয়োজন সীমিত করা হয়েছে। মেয়রের কক্ষটিও অস্থায়ী কক্ষ। এবার ভিড় কমাতে নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে পদযাত্রা করে নগর ভবনে আসা কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।

তবে সব কাউন্সিলরকে জানানো হয়নি কেন- এমন প্রশ্নের কোনো সরাসরি উত্তর দেননি তিনি।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *