সেই মুসকানকে ৫ লাখ রুপি পুরস্কার দিলেন মাহমুদ মাদানী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: কর্ণাটকে হেনস্তার শিকার হওয়া বোরকা ও হিজাব পরা মুসলিম ছাত্রীর প্রতিবাদী অবস্থান ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। মুসকান খান নামের ওই ছাত্রীর সাহসীকতার জন্য ৫ লাখ রুপি পুরস্কার দিয়েছে ভারতের নেতৃস্থানীয় সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ।

বুধবার সংগঠনটির কর্নাটক রাজ্য সভাপতি মুফতি ইফতেখার আহমদ মুসকান খান ও তার পরিবারের কাছে এ চেক হস্তান্তর করেন। এর আগে মঙ্গলবার রাতে জমিয়তের সভাপতি মাওলানা মাহমুদ আসআদ মাদানী এ পুরস্কারের ঘোষণা দেন। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

জমিয়তের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে মুসকানকে অভিনন্দন জানিয়ে এবলা হয়, কর্ণাটক পিইএস কলেজ মান্ডিয়ার সাহসী ছাত্রী মুসকান খানকে তার সাহসী প্রতিবাদের জন্য আন্তরিক অভিনন্দন। তিনি সাহসের মাধ্যমে নিজের সাংবিধানিক ও ধর্মীয় অধিকারের পক্ষে আওয়াজ তুলেছেন। তার উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করে জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের পক্ষ থেকে এই সাহসী কন্যাকে উৎসাহের জন্য নগদ পাঁচ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করা হলো।

ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার জমিয়তের কর্নাটক রাজ্য সভাপতি মুফতি ইফতেখার আহমদ একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে মুসকান খানের বাসায় গিয়ে এ পুরস্কার হস্তান্তর করেন।

প্রসঙ্গত, হিজাব ইস্যুতে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারতের কর্ণাটক।  হিজাব পরে কয়েকজন ছাত্রীকে স্কুলে ঢুকতে না দেওয়া নিয়ে সেখানে সৃষ্টি হয় বিক্ষুদ্ধ পরিস্থিতির। ক্লাসে ছাত্রীরা হিজাব পরতে পারবে কী না, তার সমাধানে কর্ণাটক হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেন কর্ণাটক সরকারি কলেজের পাঁচ ছাত্রী। কিন্তু হাইকোর্টও এ ব্যাপারে কোনো সমাধানে আসতে পারেননি।  বিষয়টি সমাধানের ভার প্রধান বিচারপতির হাতেই ছেড়ে দিয়েছেন কর্ণাটক হাইকোর্ট।

গত এক মাসের বেশি সময় ধরে কর্ণাটকের বিভিন্ন স্কুল কলেজেহিজাব পরে ক্লাস করার অনুমতির দাবিতে আন্দোলন করছে মুসলিম ছাত্রীরা।

অন্যদিকে হিন্দু শিক্ষার্থীরা গেরুয়া ওড়না পরে হিজাববিরোধী আন্দোলন শুরু করেছে।

মঙ্গলবার উগ্র হিন্দত্ববাদীদের ভয় উপেক্ষা করে হিজাব পরে কর্ণাটকের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হন মুসকান নামের ওই ছাত্রী।  প্রতিষ্ঠানটিতে প্রবেশ করার পর ওই ছাত্ররা তাকে ভয়-ভীতি দেখানোর চেষ্টা করে।

কিন্তু মুসকান একা থাকা স্বত্ত্বেও সেই ছাত্রদের সামনে প্রতিবাদ করে। উগ্রপন্থীরা নানা স্লোগানে তাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু ছাত্রী ভড়কে না গিয়ে উল্টো সাহসী এক প্রতিবাদ করেছেন। ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে বলতে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করেন ওই ছাত্রী।

প্রসঙ্গত, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ ভারতীয় মুসলমানদের সর্ববৃহৎ পুরোনো প্লাটফর্ম। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে এ সংগঠনটির জন্ম। উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে এ দলটির ব্যাপক অবদান রয়েছে।

মাওলানা মাহমুদ মাদানী ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামের প্রাণপুরুষ সাইয়্যেদ হুসাইন আহমদ মাদানীর দৌহিত্র ও সাইয়্যেদ আসআদ মাদানীর ছেলে। তার বুদ্ধিবৃত্তিক প্রচেষ্টা ও সৃজনশীল কর্মপন্থায় ভারতীয় মুসলমানরা এক অভিন্ন প্লাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।

মাহমুদ মাদানির রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ভারতের সর্বমহলে স্বীকৃত। আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি, মত পথ ভুলে এক কাতারে সবাইকে নিয়ে চলার মানসিকতা ও উদ্যোগ তাকে পৌঁছে দিয়েছে এক অনন্য উচ্চতায়।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *