রুনা লায়লার প্রত্যেক জন্মদিনে উপহার পাঠাতেন লতা মঙ্গেশকর

বিনোদন ডেস্ক:: উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকর ইহজগতের মায়া কাটিয়ে রোববার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।  তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। তার মৃত্যুতে উপমহাদেশের সংগীতাঙ্গনে মেনে এসেছে শোকের ছায়া।  যারা কিংবদন্তি এই শিল্পীর সান্নিধ্য পেয়েছিলেন, তারা স্মৃতিচারণ করেছেন লতা মঙ্গেশকরকে নিয়ে।  বাংলাদেশের খুব অল্প কয়েকজন সুরের সম্রাজ্ঞীর সান্নিধ্য পেয়েছিলেন। তাদের মধ্যে রুনা লায়লা অন্যতম।

লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুর পর ফেসবুকে কিংবদন্তি এই সংগীতশিল্পীকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন রুনা লায়লা।  ফেসবুকে রুনা লায়লা লিখেছেন: যে কণ্ঠটি আমার মতো লাখ লাখ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছেন তিনি এখন স্বর্গে ফেরেশতাদের জন্য গান গাইছেন। বছরের পর বছর ধরে আমরা ভালোবাসা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার একটি সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলেছি….তার অনুমতি নিয়ে আমি তাকে কৌতুক পাঠাতেও সাহস করেছিলাম, যা তিনি খুবই উপভোগ করেছিল।  দিদির খুব ভালো সেন্স অব হিউমার ছিল। তিনি নিজের কিছু মজার অভিজ্ঞতা আমাকে বলেছেন, আমরা একসঙ্গে হেসেছি।

রুনা লায়লা আরও লিখেছেন, তার কথা শুনতে খুব ভালোবাসতাম আমি। তার মধুঝরা কণ্ঠস্বরই আমার কাছে সংগীত ছিল। আমি যখন তাকে শুভ সকাল জানাতাম, সেটার বিপরীতে তিনি আমাকে তার প্রিয় ছবি, গান, ফুল, বাচ্চাদের ছবি-ভিডিও পাঠাতেন।  আমার প্রত্যেক জন্মদিনে তিনি শাড়ি পাঠাতেন।  এই বছর তিনি বলেছিলেন, ‘তুমি যেহেতু লন্ডন যাচ্ছো, সেখান থেকে ঢাকায় ফিরলে তোমার উপহার পাঠিয়ে দেব’।  দিদি, আপনিই আমার কাছে সর্বোচ্চ উপহার।

১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে জন্ম হয় লতা মঙ্গেশকারের। জন্মপত্রে লতার নাম ছিল হেমা। পরবর্তী সময় তার বাবা দীনানাথ মঙ্গেশকারের এক নাটকের চরিত্র লতিকার নামানুসারে বদলে যায় হেমার নাম। আত্মপ্রকাশ ঘটে লতা মঙ্গেশকরের। মাত্র ১৩ বছর বয়সে গানের ক্যারিয়ার শুরু তার।

জন্মপত্রে লতার নাম ছিল হেমা। পরে বাবার এক নাটকের চরিত্র লতিকার নামানুসারে বদলে যায় হেমার নাম। আত্মপ্রকাশ ঘটে লতা মঙ্গেশকরের। মাত্র ১৩ বছর বয়সে গানের ক্যারিয়ার শুরু। সাল ১৯৪২। লতা যখন স্টুডিওতে গান গেয়েছেন, সে বছরেই জন্ম হচ্ছে অমিতাভ বচ্চনের।

তবে মুম্বাই প্রথমেই লতাকে গ্রহণ করেনি। প্রযোজক শশধর মুখোপাধ্যায় তার শহিদ ছবিতে গান গাওয়ার ইচ্ছা বাতিল করে দিয়েছিলেন নিমেষেই। লতার গলা পাতলা, মন্তব্য ছিল তার। সংগীত পরিচালক গুলাম হায়দার অবশ্য সেদিন বেশ কটি কথা শুনিয়ে এসেছিলেন শশধরকে। জোর গলায় বলেছিলেন— প্রযোজকরা এর পর লতার পা ধরে তাদের ছবিতে গাওয়ার জন্য অনুরোধ জানাবে।

উপমহাদেশের এই প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে রোববার সকালে ৯২ বছর বয়সে চিকিৎসাধীন মারা যান।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ১১ জানুয়ারি তিনি মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি হন। গত চার সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *