সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক:: সিলেটের গোয়াইনঘাটে ট্রিপল মার্ডার নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট। এ ঘটনার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সন্দেহের তীর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নিহত মহিলার স্বামী হিফজুর রহমানের দিকে। হত্যার পেছনে পরিবারে কলহ ছিল বলে পুলিশ তথ্য পেয়েছে। গত দুই মাসে দুবার সালিশ করেছেন তিনি।
আগামীকাল শুক্রবার (১৮ জুন) তার শ্যালিকার বিয়ে হওয়ার কথা। সেই বিয়েতে যাওয়া না যাওয়া নিয়েও অন্তঃসত্ত্বা আলেয়া বেগমের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। পারিবারিক কলহের জের ধরে সিলেটের গোয়াইনঘাটে দুই শিশুসহ তাদের মাকে গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানায় পুলিশ।
বুধবার (১৭ জুন) সকাল ৮টার দিকে গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি দক্ষিণপাড়া গ্রাম থেকে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে মঙ্গলবার রাতের কোনো একসময় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ এখনও পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি।
নিহতরা হলেন,উপজেলার বিন্নাকান্দি দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হিফজুর রহমানের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা আলেয়া বেগম (২৭), ছেলে মিজান আহমদ (১১) ও মেয়ে তানিসা (৫)।
আহত হিফজুর রহমানকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশি প্রহরায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকৎসকরা। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ তিনটি একই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পারিবারিক কলহ থেকেই এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। এবং হিফজুর রহমানই পুলিশের প্রধান সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন।
ইসলাম নামে এক প্রতিবেশী জানান, হিফজুর পরিবারে কলহ ছিল। গত দুই মাসে দুবার সালিশ করেছেন তিনি। শুক্রবার হিফজুরের শ্যালিকার বিয়ে হওয়ার কথা। সেই বিয়েতে যাওয়া না যাওয়া নিয়েও তাদের মধ্যে সোমবার ঝগড়া হয়।
গোয়াইনঘাট থানার ওসি আব্দুল আহাদ জানান, বুধবার ভোরে আত্মীয় ফয়েজ মিয়াকে মোবাইলে কল দিয়ে হিফজুর বলেন, আমি অসুস্থ হাসপাতালে নিতে হবে, টাকা-পয়সা নিয়ে দ্রুত চলে আসেন।
জানা যায়, স্থানীয়রা ছবি তুলতে গেলে ক্যামেরার ফ্লাশে চোখ খুলে আবারও চোখ বন্ধ করে ফেলেন হিফজুর। স্থানীয়রা তখন তার কাছে গিয়ে দেখেন শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক। তার শরীরে বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন আছে। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে পুলিশি প্রহরায় তার চিকিৎসা চলছে। হিফজুর শরীরে গুরুতর কোনো আঘাত নেই। কিন্তু তার জ্ঞান ফেরেনি।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানান, প্রাথমিকভাবে পুলিশ দুটি বিষয় নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয় দুটি হলো—জমি ও পারিবারিক কলহ।
তবে ঘটনাস্থলের আলামত, হিফজুরের শরীরের আঘাত এবং ফোনকলের বিষয়গুলো দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে,পারিবারিক কলহের কারণেই হিফজুর স্ত্রী-সন্তানদের বঁটি দিয়ে কুপিয়ে ও জবাই করে খুন করেন। এর পর নিজের শরীরে কিছু আঘাত করে মৃতের মতো পড়ে থাকার ভান ধরেন।