সিলেটে কঠোর লকডাউন:রাস্তায় পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটে করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা ও সংক্রমণ প্রতিরোধে ‘কঠোর লকডাউন’ শুরু হয়েছে।

বুধবার (১৪ এপ্রিল) ভোর ৬টা থেকে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত জনগণকে চলাচলে বিধি-নিষেধ মানতে বাধ্য করতে মাঠে রয়েছেন সিভিল প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সকাল ১০টা থেকে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ‘কঠোর লকডাউন’ কার্যকর করার জন্য সিলেট নগরীতে পুলিশের তৎপরতা দেখা যায়।

সিলেট নগরীর গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়েছে অভিযানও চালাতে দেখা গেছে। এসব চেকপোস্টে গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের পরিচয় এবং রাস্তার বের হবার কারণ জিজ্ঞেস করা হচ্ছে। যেসব পেশার মানুষ জরুরি সেবার সাথে সম্পৃক্ত তাদের চেকপোস্ট অতিক্রম করার অনুমতি দিয়ে অন্যদের ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে।

বুধবার (১৪ এপ্রিল) সকাল থেকে সিলেট নগরীর আম্বরখানা, বন্দরবাজার, কোর্ট পয়েন্ট, মদীনা মার্কেট, সুবিদবাজার, কোর্ট পয়েন্ট, দক্ষিণ সুরমার কদতলী পয়েন্টসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এসময় বেশ কয়েকজন বাসায় ফিরেয়ে দেয় পুলিশ। তবে লকডাউনের প্রথম দিনে পুলিশ কিছুটা ছাড় দিলেও দ্বিতীয় দিন থেকে কোন ছাড় দেয়া হবেনা বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদিকে জনসচেতনার জন্য সিলেট মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে প্রচারণাও করা হয়।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে সরকারের দেয়া নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। একমাত্র স্বাস্থ্যবিধি মেনে সচেতন থাকলে এই মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। সিলেট মহানগর পুলিশের ছয়টি থানা এলাকা পুলিশের কঠোর নজরদারিতে রয়েছে। কেউ নির্দেশনা না মানলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এসময় তিনি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ওসি এসএম আবু ফরহাদ জানান, করোনা পরিস্থিতিতে পুলিশ সার্বিকভাবে নিরাপত্তাসহ জনসচেতনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কোতোয়ালি থানার একাধিক টিম থানাধীন এলাকায় নজরদারি করে যাচ্ছে। সরকারের নির্দেশনার বাহিরে যেসব প্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছিলো সেগুলো পুলিশ বন্ধ করে দেয়।

জানা যায়, বুধবার (১৪ এপ্রিল) ভোর ৬টা থেকে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ১৩ দফা কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এই আট দিন গণপরিবহন-বাস, ট্রেন, লঞ্চ, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে। সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে (কর্ম এলাকা) থাকতে হবে। শপিংমল ও অন্যান্য দোকানপাটও বন্ধ থাকবে। তবে নির্দিষ্ট সময় খোলা থাকবে ব্যাংক, কাঁচাবাজার ও নিত্যপণ্যের দোকান। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। তবে এই সময়ের মধ্যে শিল্পকারখানাগুলো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে।

শ্রমিকদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা-নেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। কৃষিশ্রমিক পরিবহন ও গণমাধ্যমসহ সব ধরনের জরুরি পরিষেবা চালু থাকবে। এদিকে, নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ব্যাংক লেনদেন চলবে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। তবে, অন্যান্য আনুষঙ্গিক কার্যাবলি সম্পন্ন করার জন্য ব্যাংক খোলা থাকবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *