সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক:: সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের উপরে অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে তিনিসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
রবিবার দুপুরে উপজেলার ইসলাম বাজার আল ফুরকান মসজিদে যোহরের নামাজ আদায় করে সিলেটে ফেরার পথে হামলার শিকার হন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দেশীয় লাঠিসোঁটা, কাঠের রোল ইত্যাদি নিয়ে ১০/১২ তালামীয কর্মী এলোপাথাড়িভাবে এ হামলা চালায়। এতে শায়খের গাড়ির সব গ্লাস ভেঙ্গে যায়। গাড়ির বিভিন্ন অংশ দুমড়ে যায়। পরে আক্রমনকারীরা গাড়ির ভিতরে হামলা চালিয়ে শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ, আয়োজক আতিকুর রহমান মিঠু, শায়খের সফর সঙ্গী হুমায়ুন কবির রিপন ও আরো দুই জনকে আহত করে।
চিৎকার শুনে গ্রামবাসী এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করেন। গ্রামের ভিতরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় গ্রামবাসী, আশপাশের জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে হামলাকারীদের উপর পাল্টা হামলা করে ও তাদের ৩টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। হামলাকারীদের ৪ জনকে আটকে রাখে স্থানীয় জনতা। পরে ফেঞ্চুগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ৪ জনকে উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে আয়োজক শওকত হোসেন শামিন বলেন, এরকম ঘৃণ্য আক্রমনের নিন্দা জানাই। গ্রামের ভিতরে মেহমানদের উপর এরকম হামলা কোন ভাবেই যৌক্তিক নয়। এ ব্যাপারে আমরা কমিটি বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিব।
আহতদের ব্যাপারে তিনি বলেন, তারা এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সিলেট শহরে গেছেন। শায়খের হাতে আঘাত পেয়েছে। এক্স-রে রিপোর্ট আসলে বাকিটা বুঝা যাবে।
হামলার বিষয়টি স্বীকার করে তালামীযের সিলেট জেলার (পূর্ব) সদস্য হাবিলুর রহমান জুয়েল বলেন, শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য দেন। জঙ্গিবাদ উস্কে দেন। আমরা জানতে পেরেছি রবিবার আল ফুরকান মসজিদে উনার বয়ান করার কথা। আমরা লিখিতভাবে আপত্তি জানিয়ে ইউএনও, উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বরাবর স্বারকলিপি দিয়েছিলাম। সে প্রেক্ষিতে ফেঞ্চুগঞ্জে থানার অফিসার ইনচার্জ আশ্বস্ত করেছিলেন যে শায়খ আসবেন না। কিন্তু শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ চলে আসায় এ হামলা হয়েছে। পাল্টা হামলায় তাদের নেতাকর্মীর ৩টি মোটরসাইকেল পুড়ানো হয়েছে এবং ৬ জন আহত আছেন বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে আয়োজক শওকত হোসেন শামিন জানান, শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের বয়ানে উনাদের আপত্তি ছিল সত্য কিন্তু শায়খ বয়ান করতে আসেন নি। বয়ান পেশ আয়োজন ছিল বিকালে। শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ শুধু মাত্র মেহমান হিসাবে এসেছেন দুপুরে এবং যোহরের নামাজ আদায় করে তিনি বেরিয়ে যাওয়ার সময় হামলা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কমিটির বৈঠকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
হামলার শিকার আতিকুর রহমান মিঠু জানান, সন্ত্রাসী হামলায় তারা আহত হয়েছেন এবং তার গাড়ি ব্যাপক ভাংচুর করা হয়েছে। এতে গাড়ির সাড়ে ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। হামলাকারীরা হামলা শেষে মেহমানদের নগদ প্রায় দেড় লক্ষ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে ফেঞ্চুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাফায়াত হোসেন বলেন, আমরা যাদেরকে উদ্ধার করেছি এদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করেছি। এরা কি করে, কেন ঐ জায়গায় গিয়েছিল এসব খোঁজ নিচ্ছি। খোঁজ খবর নেওয়ার পরে বিস্তারিত বলা যাবে।