করোনায় বিপর্যস্ত স্পেনে অবৈধদের বৈধতা চান মানবাধিকারকর্মীরা

কবির আল মাহমুদ-স্পেন থেকে:: প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ মহামারিতে স্পেন বর্তমানে পৃথিবীর ২য় সর্বোচ্চ আক্রান্ত দেশ। দেশটিতে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বসবাসকারী বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের ২ লাখ অবৈধদের বৈধ করে কাজ করার সুযোগ করে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটির ১৬১ টি মানবাধিকার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

তবে এই ১৬১ টি মানবাধিকার সংগঠন দেশটিতে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ করার দাবীতে পৃথক পৃথকভাবে মানববন্দন কর্মসূচি পালন করেছে । এসব মানববন্ধনে, বর্তমানে প্রচলিত অভিবাসী আইন (এস আর্টিকোলো ১২৭ নম্বর ইমিগ্রেশন আইনে বর্তামন পরিস্থিতিতে কাগজ পাওয়ার যোগ্য। যারা নিয়ম মেনে স্থানীয় কাউন্সিলে রেজিস্টেশনকৃত ভাবে বসবাস করছেন, তাদেরকে বৈধ অভিবাসীর স্বীকৃতি দেয়ার দাবি জানিয়েন তারা।

একটি সূত্রে জানা যায়, স্পেনে কয়েক হাজার বাংলাদেশিসহ অবৈধ হয়ে পড়া মোট অভিবাসীর সংখ্যা ২ লাখ।মানবাধিকার সংগঠন গুলো দাবি করেন, বছরের পর বছর অবৈধ অভিবাসীরা ব্যবসাসহ বিভিন্ন রকমের পেশায় নিয়োজিত থেকে অর্থ উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। অথচ এসব অবৈধ অধিবাসীদের বৈধতা দিলে বৈধ কাজ করে নিয়মিত সরকারকে টেক্স-পে প্রদানের মাধ্যমে স্পেনের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে। অভিবাসীরা সবসময়ই স্পেনের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু।

বাংলাদেশী মানবাধিকার সংগঠন ভালিয়েন্তে বাংলা গতকাল রাজধানী মাদ্রিদে চলমান জরুরী অবস্থার মধ্যে সংকিপ্ত পরিসরে এই মানববন্দন কর্মসূচি পালন করে। এছাড়া বাকী ৬০টি মানবাধিকার সংগঠন ও বিভিন্নস্থানে এই কর্মসূচী পালন করছে বলে জানান ভালিয়েন্তে বাংলার সভাপতি মোহম্মদ ফজলে এলাহী। সংগঠনের সাধারন সম্পাদক রমিজ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জুলহাস উদ্দীন, আল আমীম পালওয়ান, মকবুল হোসেন, মানিক আহমদ, শাহ আলম প্রমুখ।

অভিবাসীদের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করে যাওয়া বাংলাদেশী মানবাধিকার সংগঠন ভালিয়েন্তে বাংলার সভাপতি মোহম্মদ ফজলে এলাহী অবৈধদের বিনা শর্তে বৈধতা দেয়ার জন্য,বর্তমান এই মহামারী মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের অর্থনীতি আর নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা বিবেচনা করে অতিশয় অভিবাসীদের বৈধকরণ প্রক্রিয়া সহজ করার দাবী জানান।

স্পেন পৃথিবীর বড় দেশগুলোর একটি এবং দেশটি এই মহামারিকে কাটিয়ে ওঠে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য স্পেনের অর্থনীতির মূল খাতগুলোর মধ্যে কৃষি ও পর্যটন শিল্পের মধ্যে পর্যটন শিল্পে যে ধ্বস নেমেছে মূলত করোনা মহামারি সঙ্কট শুরু হওয়ার একমাস আগে থেকে। বর্তমানে দেশটি প্রায় পর্যটন শূন্য।

এছাড়া কৃষি খাতে চলছে চরম লোক সঙ্কট। নতুন ফসল তোলা এবং নতুন করে ফসল বোনার মানুষ নেই। শুধু কাস্তিইয়া আ লা মানছাসহ ভ্যালেন্সিয়াতে কৃষিকাজের জন্য প্রচুর কাজের লোকের সঙ্কট শুরু হয়েছে। তারা প্রায় তিন লাখ বেকার মানুষ ও বিদেশিদের তারা খুঁজছে কৃষি খাতকে পুনর্জীবিত করতে।

করোনা মহামারিতে স্পেনে সবচে ক্ষতিগ্রস্ত খাত হচ্ছে, বাণিজ্য ও পর্যটন খাত। পর্যটন খাতের ধ্বসের কারণে দেশটিতে বাংলাদেশি যারা পর্যটন নির্ভর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তারা চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছে। পরিস্থিতি ভালো হলেও কতদিনে আবার স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসবে সেটা নিয়ে একটা চরম অনিশ্চয়তা দিন যাচ্ছে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *