সিলেট থেকে ঢাকায় করোনা রোগী, দিনভর আলোচনা-সমালোচনা

সিলট নিউজ টাইমস্  ডেস্ক:: সিলেটের একমাত্র করোনাভাইরাসে আক্রান্ত চিকিৎসককে বুধবার রাতে ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিকেলে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন সেন্টার থেকে তাকে ঢাকায় পাঠানোর সিদ্ধান্তের খবরে ব্যাপক তোলপাড় হচ্ছে। মাত্র একজন করোনা আক্রান্ত সরকারি হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপককে কেন সিলেটে চিকিৎসা প্রদান সম্ভব হলো না, এমন প্রশ্ন উঠেছে বেশ জোরেসোরেই। রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেলে তখন অবস্থা কী দাঁড়াবে, এমন প্রশ্নও তুলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন নবীন চিকিৎসক থেকে শুরু করে সচেতন নাগরিকরা।

দিনভর এ নিয়ে চলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। তরুণ চিকিৎসকদের অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সিলেটে করোনা চিকিৎসায় অব্যবস্থাপনা, অপ্রতুল সরঞ্জাম ও লোকবলের অভাবের অভিযোগ তুলছেন তারা।

ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মুখে রাত ৯টায় করোনা আক্রান্ত ওই চিকিৎসকের কর্মস্থল ওসমানী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে এর ব্যাখ্যা দিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ওসমানী হাসপাতাল ও শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. ইউনুছুর রহমান দাবি করেন, ওই চিকিৎসকের পরিবারের আগ্রহেই তাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। সরঞ্জাম ও লোকবলের অপ্রতুলতার কথা তিনি অস্বীকার করেন।

ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইউনুছুর রহমান ও উপপরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় সংবাদ সম্মেলনে জানান, কোভিড-১৯ আক্রান্ত সিলেটের সেই চিকিৎসককে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঢাকায় পাঠায়নি। তার চাহিদামতো ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর হতে না পেরে তিনি স্বেচ্ছায় ঢাকায় গেছেন। তবে ঢাকায় যাওয়ার আগে সিলেটে তার চিকিৎসার কোনো ঘাটতি ছিল না। তার শারীরিক অবস্থাও ছিল স্থিতিশীল। আইসিইউতে নেয়ার মতো তার শারীরিক অবস্থার কোনো অবনতিও ঘটেনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, গত ৫ এপ্রিল ওই চিকিৎসকের করোনা পজেটিভ ধরার পর থেকে তিনি নিজের বাসায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত মঙ্গলবার রাতে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে তাকে আইসিইউতে নেয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। কিন্তু ওই চিকিৎসক আইসিইউর পরিবর্তে কেবিনে থাকতে চান। কেবিনে তাকে অক্সিজেন লাগানোর পর তিনি আগের চেয়ে সুস্থবোধও করেন। সারারাত চিকিৎসক, অ্যানেস্থলজিস্ট ও স্বাস্থ্যকর্মীরা তাকে সেবা দেয়ার জন্য হাসপাতালেই ছিলেন।

সকালে ওই চিকিৎসক তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিটে ভর্তির অনুরোধ করেন। কোভিড-১৯ এর রোগী ওসমানীতে ভর্তি করা সম্ভব নয় জেনেও তিনি ও তার স্ত্রী (তিনিও চিকিৎসক) নানাভাবে চেষ্টা করেন। শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার আশ্বাস দেয়ার পরও ওই চিকিৎসক সেখানে চিকিৎসা নিতে রাজি হননি।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *