অভুক্ত বিধবার বাড়িতে খাবার নিয়ে গেলেন কোম্পানীগঞ্জের ওসি

কোম্পানিগঞ্জ প্রতিনিধি:: তিন দিন ধরে খাবার নিয়ে চরম সংকটে ভুগছিলেন হতদরিদ্র বিধবা আছমাসহ পরিবারের চারজন সদস্য। খবর পেয়ে বুধবার রাতে ওই বিধবার বাড়িতে খাবার নিয়ে ছুটে যান কোম্পানীগঞ্জের ওসি সজল কুমার কানু। এতে পেট ভরে ভাত খান তিন দিনের অভুক্ত এই পরিবারের সদস্যরা। ঘটনাটি উপজেলার তেলিখাল ইউনিয়নের খেছুটিলা গ্রামের।

পুলিশ জানায়, ছেলে আশরাফ (১২) মাটির কাজ করে দৈনিক ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পেত। এই টাকায় কোনরকম চলত তাদের সংসার। কিন্তু করোনার কারণে আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যায় এই শিশু শ্রমিকের। এই অবস্থায় তিনটি সন্তান নিয়ে গত তিন দিন ধরে চরম খাদ্যসংকটে পড়েন বিধবা আছমা। এই পরিস্থিতিতে কেউ এক মুঠো চাল নিয়ে এগিয়ে আসেননি। বুধবার রাতে ওই গ্রামের এক ব্যক্তি বিষয়টি ওসিকে ফোন করে জানায়। ফোন পেয়েই আছমার নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে বাড়িতে খাবার নিয়ে ছুটে যান ওসি সজল কুমার কানু।

ওসি জানান, অভুক্ত আছমার পরিবারের জন্য বাসায় রান্না করা ভাত, ডাল, সবজি ও টেংরা মাছ দুইটি টিফিন ক্যারিয়ারে করে মোটরসাইকেলযোগে দূর্গম খেছুটিলা গ্রামে পৌঁছে দেই। তখন রাত পৌনে ১২টা। খাবার হাতে দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন আছমা। না খেয়ে ঘুমিয়ে থাকা সন্তানদের চোখে-মুখে তখন তৃপ্তির হাসি ফুঠে ওঠে। ওসি জানান, এটা আমার চাকুরী জীবনের অনেক বড় প্রাপ্তি। অনেক রাত হয়ে যাওয়ায় দোকান থেকে চাল, ডাল, আলু কিনতে পারেননি। তাই নগদ ৫০০ টাকা বিধবার হাতে দেন।
ওসি আরো বলেন, এই ধরনের অভুক্ত পরিবার যারা থাকবে, সংবাদ পেলে তাদের বাড়িতেও খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে যাবে।

আছমা বেগম বলেন, মেয়ে খোদেজা (৮) পেটে থাকাবস্থায় তার স্বামী চুনু মিয়া ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে দিনযাপন করছি। আজ ওসি স্যার খাবার নিয়ে আসায় রাতে পেট ভরে পরিবার সদস্যরা ভাত খেয়েছি।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *