লেবাননে অক্সিজেন শূণ্যতায় ২ প্রবাসির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:: লেবাননে অসাবধানতা আর অক্সিজেন শূণ্যতায়ই মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে তেঘরিয়ার ২ শ্রমিকের। তাদের মরদেহ লেবাননের ‘শুর’ জেলার একটি হাসপাতালের হিমাগারে রাখা হয়েছে। অতিদ্রুতই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লেবাননের রাজধানী বৈরুতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) আব্দুল্লাহ আল মামুন। এদিকে, শেষবারের মত প্রিয় মুখখানা একবার দেখতে অপেক্ষার প্রহর গুণছেন স্বজনরা। চলছে শোকের আহাজারি।

জানা যায়,প্রায় আড়াই বছর পূর্বে জীবিকার তাগিতে লেবানন যান হবিগঞ্জ সদর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের সিদ্দিক আলীর পুত্র আব্দুল্লাহ মিয়া (৩৫)। এরপর তিনি লেবাননের ‘শুর’ জেলার দূর্গম ‘হারিফ’ গ্রামের লায়লা ইব্রাহীমের বাড়িতে কেয়ারটেকারের কাজ নেন। ৬ মাস পর সেখানে যোগদেন একই গ্রামের আফসার উদ্দিনের পুত্র মোজাম্মেল মিয়া (২২)। আব্দুল্লাহ মিয়া ও মোজাম্মেল মিয়া সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা হওয়ায় সেখানে একই রুমে থাকতেন তারা। সম্প্রতি সেখানে প্রচন্ড তুষারপাত ও তীব্র শৈত্যপ্রবাহ দেখা দেয়। গত মঙ্গলবার রাতের খাবার শেষে শীত নিবারনের জন্য দরজা-জানালা বন্ধ করে একটি স্টিলের বাটিতে কয়লা জ্বালিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন তারা। পরদিন বুধবার দুপুরে তাদের রুমের দরজা বন্ধ পেয়ে সন্দেহপ্রবণ হয়ে উঠেন বাড়ির মালিক। বিকেলে খবর পেয়ে পুলিশ দরজা ভেঙ্গে রুম থেকে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে। লাশের সূরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে অক্সিজেন শূণ্যতা ও কয়লার কালো ধোঁয়ায় নিঃশ্বাস বন্ধ হয়েই মৃত্যু হয় তাদের।

এ ব্যাপারে লেবাননের রাজধানী বৈরুতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) আব্দুল্লা আল মামুন বলেন, ‘লেবাননে গত ২ সপ্তাহ ধরে প্রচণ্ড শীত পড়েছে। সঙ্গে চলছে তুষারপাত। ‘শুর’ জেলায় প্রতি বছর এ সময়ে প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়ে। তাপমাত্রা থাকে মাইনাস ডিগ্রি সেলসিয়াস। লেবাননে এর আগেও শীত মৌসুমে এ ধরনের ঘটনার শিকার হয়ে কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। শীত এলেই বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে প্রবাসীদের সতর্ক করে দেয়া হয়। তারপরও অসচেনতার কারণে এমন দূর্ঘটনা ঘটছে।’

তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনায় আমরা মর্মাহত। প্রবাসীরা একটু সচেতন হলেই এ ধরনের মৃত্যু এড়ানো সম্ভব। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ শেষে ২ বাংলাদেশির মরদেহ দেশে পরিবারের কাছে দ্রুত পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

উল্লেখ্য, মৃত প্রবাসী শ্রমিক আব্দুল্লাহ মিয়া ২ পুত্র ও ১ কন্যা সন্তানের জনক এবং মোজাম্মেল মিয়া অবিবাহিত।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *