মোদির বিরুদ্ধে গণরায়?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::  দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরিয়েছে গতকাল মঙ্গলবার। এতে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল আম আদমি পার্টি (এএপি) ৭০ আসনের মধ্যে ৬২ আসনেই জয়ী হয়েছে। নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) পেয়েছে আট আসন। কংগ্রেস খাতাই খুলতে পারেনি। নির্বাচনের এ ফলকে অনেকেই মোদির বিরুদ্ধে গণরায় হিসেবে দেখছেন।

বিবিসির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, আসলেই কি তাই? এটিকে কি মোদির বিরুদ্ধে গণরায় বলা যায়? মূলত এ প্রশ্নের সোজাসাপ্টা জবাব হয় না। কেননা দিল্লির ক্ষমতা থেকে বিজেপি দূরে রয়েছে দুই দশকের বেশি সময়। গোটা দেশ যখন ‘মোদি জোয়ারে’ ভাসছিল, সেই সময়ই দিল্লি ছিল কেজরিওয়ালের দখলে। এবার চোখ ফেরানো যাক- কেজরিওয়ালের কর্মকাণ্ডের দিকে। তিনি কী এমন করেছেন, যার জন্য দিল্লিবাসী তাকেই বারবার বেছে নিচ্ছেন।

শুধু এক-দুই ভোটের ব্যবধান না তো- পুরো ভূমিধস জয়। আসলে এর মূলে রয়েছে কেজরিওয়ালের সরকারের নানা পদক্ষেপ। এএপি সরকার প্রথমেই যেটি করেছিল, তা হলো- স্কুলগুলোতে স্বাস্থ্য ক্লিনিক চালু করেছে। এ ছাড়া কম দামে খাবার পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে। এটি এএপি সরকারের জনগণের সরকারে রূপান্তর করেছে।

এর পরও বলা হচ্ছে, বিজেপি সরকার সম্প্রতি বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধন আইন করেছে, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছে এবং বাবরি মসজিদের স্থানে রামমন্দির স্থাপনের সিদ্ধান্ত এসেছে। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন- তার পরও এ রায়কে মোদির রাজনৈতিক পরাজয় বলা যাচ্ছে না। এ বিষয়টি অনুমান করা যেতে পারে বিধানসভা নির্বাচনের আগে একটি জরিপের ফল দেখে।

সেন্টার স্টাডি অব ডেভেলপিং সোসাইটির (সিএসডিএস) ওই জরিপে দেখা গেছে, নরেন্দ্র মোদির বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধন আইন দিল্লির ৭০ শতাংশ লোক সমর্থন করে। এ ছাড়া এ আইনের প্রতিবাদে দিল্লির শাহিনবাগে রাস্তা বন্ধ করে নারীদের চলমান বিক্ষোভকে তারা ঠিক কাজ বলে মনে করে না। এ নির্বাচনের আগে দিল্লিতে প্রচারের সময় এক বিজেপি নেতা কেজরিওয়ালকে সন্ত্রাসী আখ্যা দেন। সেই সময় বিজেপির সমর্থকরাও জানান দেয় যে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তারা কেজরিওয়ালকেই বেশি পছন্দ করেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষক সঞ্জয় কুমার বলেন, দিল্লির জনগণ কেজরিওয়ালের কাজের সমর্থন দিয়েছে, এটি নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরুদ্ধে কোনো রায় নয়।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *