সিলেটে দেড় বছর তরুণীকে আটকে রেখে ধর্ষণ, কবিরাজ গ্রেপ্তার

সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক::
সিলেটের বিশ্বনাথে চিকিৎসার নামে ঝাড়-ফুঁকের কথা বলে এক তরুণীকে (১৯) প্রায় দেড় বছর ধরে আটকে রেখে ধর্ষণে অভিযোগ কমরুদ্দিন (৫০) নামে এক কবিরাজকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত কমরুদ্দিন উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর ছেলে।

জানা গেছে, বর্তমানে বিশ্বনাথ পুরান বাজার (শরীষপুর) এলাকার আছদ্দর ম্যানশনে ভাড়াটিয়া হিসেবে থেকে সিফা তদবিরালয় খুলে রমরমা কবিরাজী ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রাতে ওই কবিরাজের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন ধর্ষিতার মা। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাতেই কমরুদ্দিনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিফা তদবিরালয় থেকে তরুণীকে উদ্ধার ও তার স্ত্রী সুমি বেগমকে আটক করে থানা পুলিশ। এরপর মধ্যরাতে আটক করা হয় কবিরাজ কমরুদ্দিনকে। পরে তরুণীর মায়ের দায়ের করা অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ড করে কবিরাজ ও তার স্ত্রীকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

ধর্ষিত তরুণীর মা সাংবাদিকদের জানান, প্রায় দেড় বছর পূর্বে আমার বড় মেয়ে (ওই তরুণী) নানা রকম রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হলে তাকে নিয়ে কবিরাজ কমরুদ্দিনের শরণাপন্ন হই। চিকিৎসার প্রয়োজনে আমার মেয়েকে তার কাছে রেখে যেতে এবং নগদ ১০ হাজার টাকা দিতে বলে সে (কবিরাজ)। আমি কথামত টাকা পরিশোধ করে মেয়েকে তার কাছে রেখে আসি। পরবর্তীতে মেয়েকে আনার জন্য সিফা তদবিরালয়ে যাওয়ার পরই ঘটে বিপত্তি। সে মেয়েকে আমার কাছে ফেরত দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। নানা হুমকি-ধমকি ও ভয়-ভীতি দেখায়। এভাবে প্রায় দেড় বছর ধরেই সিফা তদবিরালয়ে তালাবন্দি করে আটকে রাখে আমার মেয়েকে। তার ভয়ে কাউকে কিছু বলার সাহস পাইনি বলেও জানান তিনি।

পুলিশ সূত্র জানায়, উদ্ধারের পর তরুণী জানিয়েছে যে কবিরাজ কমরুদ্দিন চিকিৎসার নামে তার সাথে শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তুলে। তাকে দিবারাত ঘরের ভেতর তালা দিয়ে আটকে রাখত। কোথাও বের হতে দিত না। সম্প্রতি কমরুদ্দিন ভুয়া বিয়ের কাগজ তৈরি করে তাকে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছিল।

সিফা তদবিরালয়ের আশপাশে বসবাসকারি কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কমরুদ্দিনের সিফা তদবিরালয়ে মূলত সুন্দরী তরুণী-যুবতীদের আনাগোনাই ছিল বেশি। এর আগে সে পলি নামে একটা মেয়েকেও এভাবে তার বাসায় আটকে রেখে দিয়েছিল।

মামলা দায়ের ও সস্ত্রীক কবিরাজ কমরুদ্দিনকে গ্রেপ্তারের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামিম মূসা বলেন, আগামীকাল শুক্রবার তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *