জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক,
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার তেঁতলী ইউনিয়নের ধরাধরপুরে কুড়িয়ে পাওয়া নবজাতক অবৈধ সম্পর্কে জন্য নেয় বলে তার সত্যতা পাওয়া গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী অনেকে সাথে কথাবলে জানা যায়, তেঁতলী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার আলীর বাড়িতে পাঁচ সন্তানের জননী হাজেরা নামের এক মহিলা বুয়ার কাজ করেন। তিনি কিশোরগঞ্জের হাতারিয়া পাড়ার আতাউরের প্রথম স্ত্রী বলে জানান হাজেরা নিজে’ই। তার ঘরে রনি, নাজমিন, নাছিমা, ইমন, নাইমা নামে তার পাঁচ সন্তান রয়েছে।
দশ বছর ধরে স্ত্রী সন্তানদের সাথে স্বামী আতাউরের কোনো যোগাযোগ নেই বলে জানান হাজেরার বড় সন্তান চন্ডিপুল স্ট্যান্ডের কার চালক রনি। তারা বর্তমানে ধরাধরপুর রোডের তেলিবাজারে অবস্থিত আলী মেম্বারের মালিকানাধীন কলোনীতে বসবাস করছেন ও তার মা মেম্বারের বাড়ি কাজ করেন বলে জানায় রনি।
স্বামী পরিত্যক্তা হাজেরা দীর্ঘদিন থেকে আলী মেম্বারের বাড়িতে বুয়ার কাজ করার সুবাদে মেম্বারের ছেলে শহীদের সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠে বলে অভিযোগ রয়েছে। শহীদ সময় অসময় হাজেরার ঘরে যাওয়া আসা করতে দেখেছেন প্রতিবেশীরা। অবৈধ সম্পর্কে হাজেরার শারীরিক পরিবর্তন ঘটলে অনেকের সাথে কলোনীর বাসিন্দা একাদিক মহিলা দেখেছেন বলে জানান। এমনকি কলোনীর পাশের মুদির দোকানদার আমিনুল ইসলাম গেদাও দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের স্বীকারোক্তির অডিও ও ভিডিও রেকর্ড এ প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে।
অবৈধভাবে জন্ম নেয়া শিশুটি পৃথিবীর আলো দেখলে লোকলজ্জার ভয়ে পুরাতন কাপড়ে মোড়ে গত বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ধরাধরপুর এলাকার হযরত আরকুম শাহ (রহ:) মাজার সংলগ্ন ক্ষেতের জমির ঝোপঝাড়ে কোনো এক সময় ফেলে দেয়া হয়।
সকালে খেলতে যাওয়া শিশুরা নবজাতকের নড়াচড়া করতে দেখে অন্যদের দেখায়। তখন জানা জানি হলে জামাল মিয়ার কলোনীর ভাড়াটিয়া সিএনজিচালক সুহেল মিয়ার স্ত্রী রুবী বেগম নবজাতককে তার ঘরে নিয়ে লালনপালন করছেন।
রুবী বলেন, রানা মিয়া ও রাণী বেগম নামে আমার দুটি সন্তান রয়েছে। তাদের সাথে আমার সন্তানের পরিচয়ে তাকে মানুষ করবো। যদি প্রকৃত বাবা-মা শিশুটিকে নিতে চায় তবে ফিরিত দেব। তিনি নবজাতকটির নাম রেখেছেন মো: ইব্রাহিম আলী বাদশা।
অভিযোগ রয়েছে, প্রত্যক্ষদর্শীদের মুখ বন্ধ রাখতে দেখানো হচ্ছে ভয়ভীতি। নানাভাবে দেয়া হচ্ছে হুমকি। কয়েকজন সাক্ষীকে অন্যত্র চলে যেতে চাপ প্রয়োগও করা হচ্ছে। নবজাতকের জন্মদাতা প্রভাবশালী হওয়ায় ঘটনাটি অন্যভাবে ঘুরাতে স্থানীয় একটি অতি উৎসাহী মহলকে ম্যানেজ করার অভিযোগ শোনা যাচ্ছে।
অভিযুক্ত হাজেরার সাথে তার বাসায় কথা হলে তিনি দীর্ঘদিন ধরে মেম্বারের বাড়ি বুয়ার কাজ করছেন স্বীকার করে নানা অসংলগ্ন কথা বলে নবজাতকটি তার ঔরসজাত সন্তান নয় বলে জানান। তবে তার প্রতিবেশীরা বলেছেন তিনিই শিশুটির জন্মদাতা মা। তারা হাজেরার শারীরিক পরিবর্তন দেখেছেন। একই কথা বলেছেন দোকানদার গেদা।
সিলেট ছাঁড়া করার কথা বলে ও প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে হাজেরার পরিবারের মুখ বন্ধ রাখা হয়েছে বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে।
অভিযুক্ত শহীদের ফোনে কল দিলে তিনি এ বিষয়ে এলাকার মুরব্বীদের সাথে কথা বলতে পরামর্শ দেন। তিনি কোনো বক্তব্য দিতে অনীহা প্রকাশ করেন।
তেঁতলী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার, বদীকোনার বাসিন্দা আলীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কল রিসিভ করে সংবাদকর্মী পরিচয় বুঝতে পেরে কল কেটে দেন। বারবার কল দিলে পরে আর কল রিসিভ করেন নি।
এ বিয়ের সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া (বিপিএম) বলেন, অপরাধীর বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইনের দিক থেকে কেউ ছাঁড় পাবার কোনো সুযোগ নেই।