সিলেট ওসমানীর মেডিকেলের অর্থ আত্মসাৎ ৩ জনের নামে দুদকের চার্জশিট

সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক
সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চুক্তি অনুযায়ী এমএসআর সামগ্রী সরবরাহ না করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভুয়া বিলের মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অভিযোগপত্রে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তাহের এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী নগরীর সুবিদবাজারের ফাজিলচিস্ত আবাসিক এলাকার বাসিন্দা আবু তাহেরকে প্রধান আসামি করে এবং তৎকালীন হিসাবরক্ষক আব্দুল কুদ্দুস আটিয়াকে ২য় ও তৎকালীন উপ-পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আব্দুস সালামকে ৩য় আসামি করে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে। এতে ২৯ লক্ষ ৭৮ হাজার ১শ ৭২টাকা আত্মসাত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত ১ অক্টোবর দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন-১৯৪৭ এর ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এর আগে ২০১৮ সালের ২৪ মে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালী থানায় মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সিলেটের উপ-সহকারী পরিচালক (সাবেক) বর্তমানে প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম। তবে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও বিস্তারিত জনসংযোগ কর্মকর্তার কাছ থেকে জানা যাবে বলে জানান তিনি।

এদিকে মামলায় হাসপাতালের তৎকালীন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুস সবুর মিয়াসহ ২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। আর মামলার প্রধান আসামি তাহের এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী আবু তাহের ২য় আসামি তৎকালীন হিসাবরক্ষক আব্দুল কুদ্দুস আটিয়ার আপন জামাতা বলে সূত্র জানিয়েছে। মূলত শ্বশুরের যোগসাজশে উপ-পরিচালককে ম্যানেজ করেই এমন কাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসমানী হাসপাতালের সাবেক এক কর্মকর্তা।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে- ২০১৫ সালের ২৮ জুন তারিখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এমএসআর সামগ্রী ক্রয়ের জন্য দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। দরপত্র বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশে সিলেটের রিকাবিবাজারস্থ মেসার্স তাহের এন্টারপ্রাইজ এসব সামগ্রী সরবরাহের জন্য অনুমতি পায়। পরবর্তীতে এমএসআর সামগ্রী সরবরাহ না করেই ৫টি ভুয়া বিল হাসপাতালে দাখিল করা হয়। এ সময় হাসপাতালের তৎকালীন হিসাবরক্ষক আব্দুল কুদ্দুস আটিয়া কোনো মালামাল বুঝে না পেয়েও পারস্পরিক যোগসাজশে ভুয়া বিলগুলো প্রস্তুত করে হাসপাতালের তৎকালীন উপ-পরিচালক ডা. মো. আব্দুছ সালামের কাছে উপস্থাপন করেন এবং তাদের ৩ জনের সমন্বয়ে অসৎ উপায়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫টি টোকেন যার নং যথাক্রমে ৮৫৮৬ (তারিখ-২০.৯.২০১৫), টোকেন নং-৫৭২২ (তারিখ-২৭.১০.২০১৫), টোকেন নং-৪২২৯ (তারিখ-১০.১১.২০১৫), টোকেন নং-৬৪৬৯ (তারিখ-২৭.১.২০১৬) ও টোকেন নং-৬৪৭০ (তারিখ-২৭.১.২০১৬) মারফত ন্যাশনাল ক্রেডিট এন্ড কমার্স ব্যাংক চৌহাট্টা শাখা যার হিসাব নং- ০২১০০১৩৭০ ও ডাচ বাংলা ব্যাংক আম্বরখানা শাখা, যার হিসাব নং- ০২০১১১০০০০৬৬৫৪ থেকে প্রথমে ৩৯ লক্ষ ৭ হাজার ৩শ ৯ টাকা উত্তোলন করা হয়।

পরবর্তীতে ঘটনাটি জানাজানি হলে মামলার ৩য় আসামি ডা. মো. আব্দুস সালাম মেসার্স তাহের এন্টারপ্রাইজকে টাকাগুলো ফেরত দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তাহের এন্টারপ্রাইজের পক্ষ থেকে ৯ লক্ষ ২৯ হাজার ১শ ২৮ টাকা ফেরত দেয়া হলেও বাকি ২৯ লক্ষ ৭৮ হাজার, ১শ ৭২ টাকা আর ফেরত আসেনি।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *