কালবৈশাখী ঝড়: সিলেটসহ সারাদেশে নিহত ১১

সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক:: হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে সিলেটসহ সারাদেশে ১১ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।এর মধ্যে মৌলভীবাজারে ২, হবিগঞ্জে ১, সুনামগঞ্জে ১,ঢাকায় ৩, নেত্রকোনায় ১, কিশোরগঞ্জে ১ ও নারায়ণগঞ্জে ২ জন নিহত হয়েছেন।

জানা গেছে, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় বজ্রপাতে দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার উত্তর পতনউষার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলো গ্রামের দিনমজুর জুনেদ মিয়ার ছয় বছরের শিশুকন্যা সাদিয়া আক্তার ও চার বছরের মুন্নী আক্তার। তারা পতনঊষার মহিলা মাদ্রাসার শিশু শ্রেণির ছাত্রী ছিল। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশেকুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে নিহত দুই শিশুর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। গ্রামবাসী জানায়, সকালে সাদিয়া, মুন্নীসহ তিন শিশু বাড়ির উঠানে খেলা করছিল। এ সময় বজ্রপাতে দুই শিশু গুরুতর আহত হয়। তাদের দ্রুত মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় রোববার দুপুর ১টার দিকে বজ্রপাতে দেলোয়ার হোসেন (১৭) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। দেলোয়ার উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের জুহুর মিয়ার ছেলে। জামালগঞ্জ থানার ওসি আবুল হাসেম জানান, দেলোয়ার হোসেন বাড়ির পাশের হাওরে ঘাস কাটতে গিয়েছিল। দুপুর ১টার সময় আকস্মিক বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ সময় বৃষ্টি হচ্ছিল। দেলোয়ারের হোসেনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এদিকে দুপুরের পর থেকে জেলার বিভিন্ন হাওরে শিলাবৃষ্টি হওয়ায় বোরো ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে প্রবল কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। তবে এই ঝড়ে চারটি গ্রিড বন্ধ হয়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে নগরীর বিশাল এলাকা। এছাড়া ঝড়ে পল্টন এলাকায় মাথায় ইট পড়ে একজন দোকানদারসহ ৪ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। মগবাজারে একটি বেসরকারি হাসপাতালের দেয়াল ধসের ঘটনাও ঘটেছে।

রোববার (৩১ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শুরু হওয়া ঝড় চলে প্রায় ২০ মিনিটের মতো। এরপর হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে আরও কিছুক্ষণ। ঝড়ের তোপে রাজধানীর অনেক এলাকার গাছ ভেঙে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকায় ছোট-বড় বিলবোর্ডও খসে রাস্তায় এসে পৌঁছেছে। বেশিরভাগ রাস্তায় গাছের ছোট-ছোট ডাল-পাতা পড়ে রয়েছে।

ভোরবেলা মেঘলা আকাশ। এরপর দুপুরে ভ্যাপসা গরম। বিকালে আবার মেঘলা আকাশ। অবশেষে সন্ধ্যায় দমকা হাওয়ার সঙ্গে ধূলিঝড়। পরে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি। তারপর শুরু কালবৈশাখীর ছোবল। সঙ্গে রাজধানীর কিছু কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টিও হয়েছে।

ঝড় শুরুর কিছুক্ষণ পড়েই রাজধানীর ধানমণ্ডি, শুক্রাবাদ, পান্থপথ, কলাবাগান, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার আশপাশ, আজিমপুর, লালবাগ, মগবাজার, মৌচাক, মাতুয়াইলসহ বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ চলে গিয়ে আঁধার নেমে আসে। বজ্রচেরা আলোয় এ সময় এসব এলাকা ভুতুড়ে হয়ে ওঠে।

ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির (ডিপিডিসি) পরিচালক (অপারেশন) হারুন উর রশীদ জানিয়েছেন, ঝড়ে ধানমণ্ডি, লালবাগ, মগবাজার ও মাতুয়াইল এলাকার চারটি ১৩২ কেভি গ্রিড লাইন বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে এসব এলাকাসহ আশপাশের অনেক এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে।

তিনি জানান, এসব এলাকার গ্রিড চালু করার চেষ্টা চলছে। তবে সবকিছু ঠিকঠাক করতে আরও এক থেকে দেড়ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। ফলে কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে রাত দশটা বেজে যেতে পারে।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের ডিউটি অফিসার আতাউর রহমান জানান, ঢাকার মগবাজারের আদ্-দ্বীন হাসপাতালের একটি দেয়াল ধসের খবর পেয়ে সেখানে একটি ইউনিট পাঠানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদরা জানান, পশ্চিমা লঘুচাপের সঙ্গে মৌসুমী লঘুচাপের প্রভাবে এই কালবৈশাখী ঝড় হচ্ছে। এই মৌসুমে এই ঝড় বৃষ্টি স্বাভাবিক।

সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, রোববার সন্ধ্যায় রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় ৭০ কিলোমিটার বেগে কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে। ঝড়ের স্থায়ীত্ব ছিল ২০ মিনিটের মতো। ঢাকায় ঝড় কমে গেলেও এই ঝড় ঢাকা থেকে দক্ষিণ-পূর্বদিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি কক্সবাজার পর্যন্ত যাবে। মধ্যাঞ্চল থেকে আধঘ্ণ্টার মধ্যে এই ঝড়ের প্রভাব কেটে যাবে। মেঘ সরে যাবে। কিন্তু, ঝড়টি দক্ষিণ দিকে যত অগ্রসর হবে, ততই সেসব এলাকায় ঝড়ের প্রভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হবে। রাত ১২টার মধ্যে ঢাকার আশপাশের এলাকাসহ পুরো মধ্যাঞ্চল ঝড়ের আওতামুক্ত হবে।

পল্টনে ঝড়ের সময় নির্মাণাধীন ভবনের ইট পড়ে নিহত চা দোকানদারের নাম আব্দুল হানিফ। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে রাজধানীসহ আশেপাশের এলাকাগুলোর ওপর দিয়ে এই ঝড় বয়ে যাওয়ার সময় পল্টন এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী আবু নাঈম নোমানের আক্ষেপ, বুকটা ফেটে যাচ্ছে, চোখের সামনে মানুষটার মৃত্যু দেখে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে পল্টনে দারুস সালাম মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে মুড়ি খাচ্ছিলাম। হঠাৎ ঘূর্ণিঝড় শুরু হয়। আমি ওপরের দিকে তাকাচ্ছিলাম ফুলের টব বা অন্য কিছু আছে কিনা দেখার জন্য। ঝড়ের গতি বেড়ে যাওয়ায় মুড়ির প্লেট নিয়ে দৌড় দেই। এরমধ্যে একটি নির্মাণাধীন ভবনের ওপর থেকে ইট পড়ে চায়ের দোকানদারের মাথায়। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পথচারী ও ফুটপাতের কয়েকজন দোকানদার তাকে দ্রুত রিকশায় তুলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।

পল্টন থানার এসআই সুজন কুমার জানান, আব্দুল হানিফ পল্টন মোড়ে একটি চায়ের দোকান চালাতেন। কালবৈশাখী ঝড়ের সময় পাশের নির্মাণাধীন একটি ভবন থেকে ইট উড়ে এসে তার মাথায় পড়ে। এর আঘাতে তিনি গুরুতর আহত হলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়ার সময় তার মৃত্যু হয়। বর্তমানে মরদেহটি ঢামেক হাসপাতালে রয়েছে।

মহানগরীর শেরে বাংলা নগর থানার মনিপুর এলাকায় গাছ ভেঙে পড়ে মারা গেছেন মিলি ডি কস্তা (৪০)। তিনি মনিপুরী এলাকায় সন্ধ্যায় বাসার সামনে হাঁটছিলেন। শেরেবাংলা নগর থানার ওসি জানে আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মিরপুরের পশ্চিম শেওড়াপাড়া এলাকায় ঝড়ের সময় একটি ভবন থেকে ইট পড়ে দুলাল (৪০) নামে একজন গাড়িচালক নিহত হয়েছেন। তার মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। মিরপুর মডেল থানার এসআই আসিকুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রাজধানীর হেয়াররোড এলাকায় গাছ পড়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেটকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়াও মহানগরীর মিরপুর রোড, সায়েন্সল্যাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, ধানমন্ডি এলাকায় গাছ পড়েছে।

রমনা থানার ডিউটি অফিসার শহীদুল উসমান মাসুম বলেন, হেয়ার রোডে ঝড়ের সময় গাছ পড়ে দুটি সিএনজি ও দুটি প্রাইভেটকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চালক ও গাড়ির ভেতরে থাকা ব্যক্তিরা সামান্য আহত হলেও কারো অবস্থা গুরুতর না।

এদিকে, কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা সদরে বজ্রপাতে রাব্বি মিয়া (১৮) নামের একজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে রোকন মিয়া (২১) নামের একজন। নিহত রাব্বি মিয়া ইটনা সদরের নয়ানন্দী হাটি গ্রামের কাদির মিয়ার ছেলে। জানা যায়, রোববার ধনু নদীর বলদা ঘাটে স্টিল বডি নৌকা থেকে তীরে পাথর নামানোর কাজ করছিলেন কয়েকজন শ্রমিক।

দুপুর ১২টার দিকে দমকা হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয়। শ্রমিকরা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বাড়ির দিকে রওনা হন। দাসপাড়া গ্রামের সামনের রাস্তায় পৌঁছলে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এতে রাব্বি মিয়া ও একই গ্রামের রোকন মিয়া আহত হন। এলাকাবাসী তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডা. নাদিরুল আলম রাব্বিকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত রোকন মিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা। তার বাবার নাম শুক্কুর আলী। ইটনা থানার ওসি মুর্শেদ জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অপরদিকে, নেত্রকোনা সদর উপজেলার কচু ডোয়ারি এলাকায় বজ্রপাতে মো. আছর উদ্দিন নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (৩১ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আছর উদ্দিন সদর উপজেলার রৌহা ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা।

নেত্রকোনা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মানিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ঝড়ো বাতাসে শুরু হওয়া গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে ধান ক্ষেতে কাজ করছিলেন আছর উদ্দিন। এ সময় বজ্রপাত হলে পুরো শরীর ঝলসে যায় তার। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নেত্রকোনা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমনা আল-মজিদ জানান, বজ্রপাতে মারা যাওয়া বৃদ্ধের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে।

নির্বাচনি সরঞ্জাম নিয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা সদরে ফেরার পথে মেঘনায় ঝড়ের কবলে পড়ে একটি ট্রলার ডুবে এক পুলিশ ও এক নারী আনসার সদস্য নিখোঁজ রয়েছেন। আহত অবস্থায় ১৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটেছে।

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার হারুন উর রশিদ জানান, মেঘনার দক্ষিণ তীরে মুন্সিগঞ্জ লাগোয়া সোনারগাঁ উপজেলার চর কিশোরগঞ্জ এলাকা। উপজেলার ভোট গ্রহণ শেষে সন্ধ্যায় প্রিজাইডিং অফিসারসহ ১৬ জন ট্রলারে করে সোনারগাঁ উপজেলা সদরে ফিরছিলেন। মেঘনা নদীর মাঝ পথে ট্রলারটি কালবৈশাখীর কবলে পড়ে ডুবে যায়। এরপর সাঁতরে ১৪ জন তীরে উঠতে পারলেও এক পুলিশ ও এক নারী আনসার সদস্য নিখোঁজ রয়ে যায়। ঘটনাস্থলে কোস্টগার্ড উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।

বৈরী আবহাওয়ার কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে এক ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর আবার ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। রোববার সন্ধ্যা সা‌ড়ে ৬টার দিকে ঝ‌ড়ো বাতাস কমে গেলে এই নৌপথের সব ফেরি পর্যায়ক্রমে চালু করা হয়। এরপর থেকে উভয়পাড়ের ঘাট এলাকায় আটকে পড়া বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ফেরিতে পারাপার করা হচ্ছে। এর আগে বি‌কেল সা‌ড়ে ৫টার দিকে ঝ‌ড়ো বাতা‌সের কারণে এ নৌপথের ফেরি চলাচল বন্ধ করা হলে যাত্রীসহ যানবাহন শ্রমিকরা দুর্ভোগে পড়েন।

তখন বিআইডব্লিউটিএর আরিচা কার্যালয়ের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পরিচালক ফরিদুল ইসলাম জানান, বি‌কে‌লে ঝড়ো হাওয়ায় পদ্মা-যমুনায় প্রবল ঢেউ আর স্রোতের কারণে লঞ্চ চলাচল ব্যাহত হচ্ছিল। লঞ্চগুলো অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছিল। সা‌ড়ে ৫টার দিকে প্রবল বাতাসে ঢেউয়ের মাত্রা বেড়ে যায়। এতে নৌদুর্ঘটনা এড়াতে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।

বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মহিউদ্দিন রাসেল জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দি‌কে ঝ‌ড়ো বাতাস ক‌মে গে‌লে ফেরি চলাচল শুরু হয়।

বৈশাখ মাস আসতে না আসতেই রোববার বিকেল পৌনে ৫টায় জেলায় কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টি হয়। বিভিন্ন উপজেলার ওপর দিয়ে চলে প্রকৃতির তাণ্ডব। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কারণে উঠতি ফসলসহ গাছপালা ও কাঁচাপাকা ঘড়বাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

অন্যদিকে, বিকেলের পর রাজধানীর বাইরে সিলেট, খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলেও তীব্র কালবৈশাখী হানা দিয়েছে বলে জানা গেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর আশপাশের এলাকায় বাংলাদেশের পশ্চিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

এক সতর্কবার্তায় বলা হয়, রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, ঢাকা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, কুমিল্লা এবং সিলেট অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ- হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এছাড়া দেশের অন্য এলাকায় পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *