শত্রুতার জেরে ৯ বছরের শিশুকে অমানবিক নির্যাতন

 নিউজ ডেস্ক:: কক্সবাজারের ফদনার ডেইল গ্রামে মায়ের সঙ্গে বিরোধের জেরে ৯ বছরের এক শিশুকে অপহরণ করে পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার রাতে ওই শিশুকে কক্সবাজার পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের ফদনার ডেইল গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে মাছন বৈদ্যর বাড়িতে নিয়ে ওই নির্যাতন চালানো হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদক চোরাচালান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার শহরের ফদনার ডেইল এলাকার ইলিয়াছের স্ত্রী রোজিনা বেগমের সাথে একই এলাকার রফিকের স্ত্রী সাজেদা বেগম সাজুর বিরোধ রয়েছে। আর এই শত্রুতার প্রতিশোধ নিতে রোজিনার ছোট মেয়ে সাদিয়া সুলতানা নুরী (৯) কে অপহরণ করে পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে সাজু ও তার অনুসারীরা।

আহত শিশু ও কক্সন মাল্টিমিডিয়া স্কুলের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী নুরী বলেন, প্রতিবেশী রহমানের বিয়ে বাড়ি থেকে আসার পথে সাজু আমার হাত ধরে মাছন বৈদ্যর বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তারা দু’জনসহ সাজুর স্বামী রফিক আমার মুখ বেঁধে প্লাস্টিকের স্ট্রিং দিয়ে মারধর ও চামচ দিয়ে আগুনের ছ্যাকা দেয়। এক পর্যায়ে আবারো তারা চামচ গরম করতে গেলে মাছন বৈদ্যর স্ত্রী আমাকে পালিয়ে আসতে সাহায্য করে। তখন আমি দৌড়ে রাস্তায় এসে চিৎকার শুরু করি। আমার চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে আসে।

উদ্ধারকারী আরজু নামের এক কলেজ ছাত্র বলেন, শিশুর চিৎকার শুনে আমরা বায়তুর মামুন জামে মসজিদের সামনে নুরীকে পড়ে থাকতে দেখি। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে তার বাড়িতে ও পরে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করি।

স্থানীয়রা জানান, মাদক চোরাচালান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ওই দুই গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে শত্রুতা চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় উভয়পক্ষ গত ১০ দিনে কক্সবাজার সদর থানায় হামলার অভিযোগ এনে পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে। একটি মামলায় রোজিনা গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে বের হয়েছে। জামিনে বের হয়ে তিনিও একটি মামলা করায় প্রতিপক্ষের লোকজন তার শিশুর উপর নির্যাতন চালিয়েছে।

আহতের মা রোজিনা আক্তার বলেন, তার মামলার আসামী সাজেদা বেগম ও তার সহযোগীরা তার মেয়ে সাদিয়া সুলতানা নুরীকে বেঁধে রেখে মারধর করে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী এসআই রাজিব পোদ্দার বলেন, নুরীকে অমানবিক ও পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি নির্যাতন চালিয়েছে মাছন বৈদ্য, আবছার ও আরো কয়েকজন।

অভিযুক্ত মাছন বৈদ্য বলেন, ১৮ ফেব্রুয়ারি রোজিনা বাদি হয়ে আমাদের নামে একটি মিথ্যা মামলা করে। সেই থেকে আমরা এলাকাছাড়া। গতকাল রাতের ঘটনার সময় আমরা খাদ্য গুদাম এলাকায় ছিলাম যা এলাকা থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে। সেখানে থেকেই আমরা জানতে পারি রোজিনা তার ছোট মেয়েকে মারধর করে। নিজের নিস্পাপ শিশুকে মারধর করে আমাদের ফাঁসাতেই রোজিনা পরিকল্পিতভাবেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, রোজিনা ইয়াবা কারবারি। ইয়াবা কারবারে বাধা দেওয়াটাই আমাদের অপরাধ। সেই কারণে রোজিনা আমাদের ফাঁসাতে এমন জঘন্য কাজ করেছে।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, শিশুটিকে আমি দেখেছি। তার উপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। এই ঘটনার সাথে জড়িতদের শীঘ্রই আইনের আওতায় আনা হবে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *