আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: গতকাল সোমবার অন্যরকম এক চন্দ্রগ্রহণ উপভোগ করল বিশ্ববাসী। ‘সুপার ব্লাড উলফ মুন’ বা ‘লাল নেকড়ে’ নাম পাওয়া চাঁদের এই রূপ দেখা গেল আমেরিকা, ইউরোপ ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে।
ব্রিটেনের দ্য গার্ডিয়ান জানায়, গ্রীনিচ সময় রাত ৩টা ৩৩ মিনিটে শুরু হয়ে ভোর ৬টা ৫০ মিনিটের মধ্যে ভৌগলিক অবস্থান ভেদে এই গ্রহণ শেষ হয়। তবে বাংলাদেশ-ভারতসহ এশিয়ার এই অঞ্চল থেকে মনোরম এই দৃশ্যটি দেখা যায়নি। উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা এবং পশ্চিম ইউরোপবাসী দেখতে পেয়েছেন পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ। আর ইউরোপের বাকী অংশ ও আফ্রিকা থেকে দেখা গেছে আংশিক গ্রহণ। এই দৃশ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বাসিন্দারাও। এরকম আরো একটি পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ দেখতে বিশ্ববাসীকে অপেক্ষা করতে হবে ২০২১ সাল পর্যন্ত।
চাঁদ, সূর্য ও পৃথিবী এক সরলরেখায় থাকলে এবং চাঁদের ওপর পৃথিবীর ছায়া পড়লে চন্দ্রগ্রহণ হয়। এ সময় সূর্যরশ্মি ছড়িয়ে পড়ে এবং পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রতিসরিত হয়ে চাঁদের ওপর গিয়ে পড়ে বলে চাঁদকে আংশিক রক্তিম লাগে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র নাসার তথ্যমতে, চাঁদ নিজের কক্ষপথে আবর্তনের যে পর্যায়ে পৃথিবীর খুব কাছে চলে আসে, তখন সুপারমুন দেখা দেয়। এ সময় পৃথিবী থেকে চাঁদকে ১৪ শতাংশ বড় দেখায়। এর উজ্জ্বলতাও বেড়ে যায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত। আমেরিকার আদি বাসিন্দাদের কাছে বছরের প্রথম সুপারমুনটি ‘নেকড়ে চাঁদ’ নামে পরিচিত। তাদের বিশ্বাস, ওই পূর্ণিমায় পৃথিবী চাঁদের আলোয় এতটাই ভেসে যায় যে নেকড়েরা তাদের ডেরা থেকে বেরিয়ে এসে ডাকাডাকি শুরু করে। একারণে গতকালের সুপারমুনটিকে বিশ্ববাসী ‘নেকড়ে চাঁদ’ নাম দিয়েছিল।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের সময়ও চাঁদ পুরোপুরি অন্ধকার হয় না। কারণ সূর্যের খানিকটা আলো পৃথিবী থেকে প্রতিসৃত হয়ে চাঁদে পৌছায়। গ্রহণের শেষ পর্যায়ে এই উপগ্রহ একারণেই কিছুটা রক্তিম বর্ণ লাভ করে। গতকাল গ্রিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন, পর্তুগাল এবং ফরাসি ও স্প্যানিশ উপকূলের মানুষের মধ্যে নেকড়ে চাঁদ দেখার ব্যাপারে ব্যাপক উত্সাহ ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াতেও বিষয়টি নিয়ে ছিল রীতিমতো উত্সবমুখর পরিবেশ। তারা আগে থেকেই খোলা আকাশে অবস্থান নেন এই বিরল দৃশ্যের সাক্ষী হবার জন্য।