শীতের ছোঁয়ায় সিকৃবি

রায়হানুল নবী :: সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি ) ক্যাম্পাসে এখন ভরা শীতকাল। সবুজের নৈস্বর্গিক শোভামণ্ডিত সিকৃবিতে শীত আসে চিরচেনা রূপের বাইরে আরো কিছু মুগ্ধতা নিয়ে। আসে অনবদ্য কিছু বৈশিষ্ট্য নিয়ে। এবারো সারাদেশের শীত এসেছে আগেভাগেই।সিকৃবিতে এসেছে একটু দেরিতে। তবে তাতে ক্যাম্পাসে শীতের যে বর্ণিল রূপ তাতে একটুও ছেদ পড়েনি।

শীত যে আসছে তা বোঝা যাচ্ছে গোধূলীর সোনালী সূর্য অস্ত না যেতেই মাঝারি কুয়াশার চাদরে আকড়ে ধরা প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে। হিমেল বাতাসে হাড়ে কাঁপন ধরানো অনুভূতি ক্যাম্পাসবাসীর গায়ে এখনই জড়িয়ে দিয়েছে শীতের গরম কাপড়। তবে মজার ব্যাপর হলো এক্ষেত্রে বয়ষ্কদের চেয়ে ফ্যাশন সচেতন তরুণেরাই বেশি এগিয়ে। কেননা শীতকে শুধু প্রতিরক্ষাই নয় বরং শীতের কাপড়কে কি করে আরো ফ্যাশনেবল করে তোলা যায় সে চেষ্টার অন্ত নেই।

শীতের রুক্ষ আর শুষ্ক প্রকৃতি নাকি রঙ-রূপ হীন! অথচ প্রকৃতির প্রাচুর্যতায় ভরপুর এ ক্যাম্পাসটিতে রূপ লাবণ্যের কোন ঘাটতি হয় না কখনোই। শীতে ক্যাম্পাসটির প্রকৃতি ও পরিবেশ সেজে ওঠে অন্যরকম সাজে।

সিকৃবিতে শীত মানেই জাঁকালো। কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে গুটিসুটি পায়ে শীত আসার শুরুতেই ক্যাম্পাসের প্রতিটি রাস্তার দুই পাশ ভরে উঠেছে ফুলে ফুলে ।

সিকৃবির লেকগুলোতে যেনো শাপলা ফুলের মেল‍া বসেছে। লেকগুলোতে ফুটেছে লাল শাপলা যা দেখলে যে কারও মনে পড়বে শৈশবের দুরন্তপনার দিনগুলোর কথা, যখন মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে বকুনির ভয়কে উপেক্ষা করে খালে-বিলে কলার ভেলা, তালের ডোঙা অথবা ছোট্ট নৌকায় চেপে শাপলা ফুল তোলার স্মৃতি!

সিকৃবিতে শীতের আরেক বড় আকর্ষণ ক্যাম্পাসের পিঠার দোকানগুলো। শীতের পিঠা-পুলির আয়োজনেও পিছিয়ে নেই সিকৃবির পিঠার দোকানীরা। দুপুরের পর থেকেই রাত পর্যন্ত এসব দোকানে চলে শীতের নানা রকম পিঠা তৈরি। সারাক্ষণ এসব দোকানে ভিড় লেগেই থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় গেট,১ম গেট,৩ গেট,ফুসকা চত্ত্বর, পরিবহন চত্বরসহ বিভিন্ন জায়গায় শীতের পিঠা তৈরি ও খাওয়ার ভিড় এতটাই যে, পিঠা পেতে গেলে অর্ডার দিয়ে রীতিমতো আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে।

সিকৃবির বিভিন্ন হল এর সামনে তৈরি করা হয়েছে ব্যাডমিন্টন কোড।বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে খেলা।
সন্ধ্যা হলেই হলের গেমরুমে সময় কাটায় অনেক শিক্ষার্থীরা। অনেকেই টেবিল টেনিস, ক্যারম, দাবা, কার্ড খেলার প্রতি ঝুঁকে পড়ছে। মেয়েদের হলেও দাবা ক্যারম বা লুডুর মতো বিভিন্ন ইনডোর গেম চলে সময় কাটানোর ব্যবস্থা হিসেবে।

খেজুরের রস ছাড়া শীতকে যেন কল্পনাই করা যায় না। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল সিলেট অঞ্চলে খেজুর গাছ চোখেই পরে না।

তবে আর দেরি কেন? শীতের অনুভূতি পেতে হলে আজই চলে আসুন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লিলাভুমি, পর্যোটন নগরীতে গড়ে ওঠা সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *