সুলতান-আব্বাস ঐক্যবদ্ধ হওয়ার খবর এখন ‘টক অব দ্য জেলা’

নিউজ ডেস্ক:: দুই এমপি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার খবর এখন ‘টক অব দ্য জেলা’। নিজ নির্বাচনী এলাকায়ও পড়েছে ব্যাপক প্রভাব। চলছে নানা আলোচনা। আর জয় পরাজয়ের হিসাবনিকাশ। আব্বাস-সুলতান একাত্ম হওয়ায় পাল্টে যাচ্ছে ভোটের মাঠের দৃশ্যপট। স্থানীয় ঐক্যজোটের নেতাকর্মীরাও হয়েছেন উজ্জীবিত। বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন স্থানীয় ভোটাররাও। সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আর নওয়াব আলী আব্বাস খান।

রাজনীতিতে দু’জন দু’ধারার হলেও ভোটের মাঠে এখন দু’জনই একজোট। দু’জনই সাবেক এমপি। নিজ নির্বাচনী এলাকায় রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। আর নিজস্ব বলয়। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একজন প্রার্থী হয়েছেন। আর অন্যজন নির্বাচন থেকে দূরে রয়েছেন। তবে তাদের দু’জনই ঐক্যজোট হয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন। উদ্দেশ্য ধানের শীষ প্রতীককে বিজয়ী করা। তারা দু’জনই বিএনপি না করলেও আছেন জোটে। একজন ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক নেতা।

বর্তমানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা। আর অন্যজন আছেন বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২৩ দলীয় জোটভুক্ত জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে। একজন জোটের সিদ্ধান্তনুযায়ী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে। আর অন্যজন জোটের সিদ্ধান্ত মেনে ভোটের মাঠে তাকে সহযোগিতা করছেন। এখন ভোটের মাঠে একসঙ্গে কাজ করবেন এমন প্রত্যয়ও তাদের। নির্বাচনী সভা সমাবেশ ও উঠান বৈঠকে স্থানীয় ভোটারদের ধানের শীষে ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করবেন।

২৭শে নভেম্বর রাতে নিজ নির্বাচনী এলাকায় এনিয়ে সঙ্গে কথা বলেন সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট নওয়াব আলী আব্বাস খান। তিনি জানান, ২৭শে নভেম্বর রাত থেকেই আমি কুলাউড়ায় পৌঁছে প্রকাশ্যেই জাতীয় নেতা সুলতান মনসুর ভাইয়ের সঙ্গে নির্বাচনী কাজে তাকে সহযোগিতা করতে মাঠে নেমেছি। তার কুলাউড়াস্থ বাসায় তিনিসহ স্থানীয় জোট নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময়, ভোটের নানা বিষয় ও কৌশল নিয়ে ঘরোয়া বৈঠকও হয়েছে। একসঙ্গে নমিনেশন জমাদানের মাধ্যমে নির্বাচনী মাঠে ঐক্যবদ্ধভাবে আনুষ্ঠানিক কাজের শুরু বলে তিনি জানান। নওয়াব আলী আব্বাস বলেন ২০০৮ সালের নির্বাচনে সুলতান ভাই অংশ না নিলেও ভোটের মাঠে থেকে আমাকে সহযোগিতা করেছেন। তার সহযোগিতায় আমি জনগণের ভোটে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলাম।

২০১৪ সালে তিনিও যেমন নির্বাচনে অংশ নেননি তেমনি আমিও ওই পাতানো ভোটার বিহীন নির্বাচন করিনি। বলতে গেলে ২০০৮ সালের সেই ঋণ এখন শোধ করতে চাই। জনগণের আস্থা আর ভালোবাসায় তাদের পরামর্শ, সহযোগিতা ও মহামূল্যবান ভোটেই আমার সেই মহৎ উদ্দেশ্য সফল হবে ইনশাআল্লাহ। সুলতান ভাই নির্বাচিত হলে আমাদের দৃঢ় প্রত্যাশা তিনি মন্ত্রী হবেন। আর দেশবাসীর মতো আমরাও পাবো আমাদের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন। তিনি বলেন, দেশে এখন ক্রান্তিলগ্ন চলছে। আইনের শাসন, গণতন্ত্র, মানুষের বাকস্বাধীনতা সবই ভূ-লুণ্ঠিত। এই ভোট বিহীন সরকারের নানা অপকর্ম বলে শেষ করার মতো নয়। তাই দেশ, জাতি, উন্নয়ন ও গণতন্ত্র বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতীক ধানের শীষের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে হবে।

আব্বাস বলেন, গেল মাস দিন থেকে নির্বাচন নিয়ে আমার বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা গুজব ও অপপ্রচার চালানো হয়েছে। আমাকে মহাজোটের প্রার্থীও বানানো হয়েছে। আমি জানিনা অথচ এত খবর উনারা ছড়ালেন।

তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী আদর্শকে বিশ্বাস করি। মরার আগেও এ আদর্শকে লালন করেই মরবো। জোট থেকে নমিনেশন না দিলে আমি নির্বাচন করবো না এমন সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিলাম। জোট থেকে যখন নমিনেশন পাইনি সুলতান ভাই পেয়েছেন। এই সিদ্ধান্ত শোনে তখন থেকেই আমারও মনে একটি বিষয় কাজ করেছে এই সুযোগে তার ঋণ শোধ করার। সুলতান ভাইর সঙ্গে ছাত্রজীবন থেকে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক যা এখন পারিবারিক সম্পর্কে পৌঁছেছে। তার সততা যোগ্যতা ও দৃঢ়চেতা মনবল যে কাউকেই আকৃষ্ট করে। রাজনীতিতে তিনি আমাদের গৌরব ও অহংকার। তার প্রতি আমার আস্থা রয়েছে তিনি দেশ, জনগণ ও আমাদের এলাকার উন্নয়ন করতে পারবেন। কুলাউড়াবাসীর কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের স্বার্থে সকলের দোয়া ও আশীর্বাদে তাকে বিজয়ী হিসেবে দেখতে চাই।

এদিকে নমিনেশন জমাদানের সময় সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট নওয়াব আলী আব্বাস খানসহ বিএনপি, গণফোরাম, ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ২৭শে নভেম্বর রাতে কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির (একাংশের) অফিসে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আবেদ রাজার নেতৃত্বে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সুলতান মো: মনসুর আহমদসহ সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ। ২৮শে নভেম্বর বিকালে নমিনেশন জমাদানের পর কুলাউড়া বিএনপির উভয় গ্রুপের নেতৃবৃন্দসহ ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃবৃন্দদের নিয়ে সুলতান মো. মনসুর আহমদের কুলাউড়াস্থ বাসায় ঘরোয়া বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে নওয়াব আলী আব্বাসসহ অন্যান্য দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *