মুশফিকের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি

স্পোর্টস ডেস্ক:: নির্ভরতার অপর নাম মুশফিকুর রহিম। ফের এর প্রমাণ দিলেন তিনি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে চরম চাপের মধ্যে বুক চিতিয়ে লড়লেন। তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। ১৮৭ বলে ৮ চারে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন তিনি।

এ নিয়ে টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি হাঁকানোর তালিকায় যৌথভাবে তৃতীয় স্থানে উঠে এলেন মুশফিক। ৬ সেঞ্চুরি নিয়ে তৃতীয় ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। এ সেঞ্চুরি দিয়ে তাকে ধরে ফেললেন এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান।

শেষ খবর পর্যন্ত ৩ উইকেটে ২৬৫ রান করেছে বাংলাদেশ। মুমিনুল ১৫২ ও মুশফিক ১০২ রান নিয়ে ব্যাট করছেন। ইতিমধ্যে ২৩৯ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তুলেছেন তারা। ক্রিকেটের আদি ফরম্যাটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে যেকোনো উইকেটে এটি সর্বোচ্চ রানের জুটি।

সিলেটে পাননি, তবে রোববার ঢাকায় টস ভাগ্যকে পাশে পান বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ইনিংসের গোড়াপত্তন করেন লিটন দাস ও ইমরুল কায়েস। তবে শুভসূচনা এনে দিতে পারেননি তারা।

সূচনাতেই কাইল জার্ভিসের বলে উইকেটের পেছনে রেজিস চাকাভাকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ইমরুল। ১৬ বল খেলেও ব্যক্তিগত রানের খাতায় কোনো রান যোগ করতে পারেননি এ ওপেনার। খানিক বাদেই একই বোলারের শিকার হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন লিটন।

পরে ক্রিজে আসেন মোহাম্মদ মিথুন। তবে ক্রিকেটের অভিজাত সংষ্করণে অভিষেকটা রাঙাতে পারেননি তিনি। প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই ডোনাল্ড তিরিপানোর বলে স্লিপে ব্রেন্ডন টেইলরকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। এতে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।

২২২ পরের গল্টটা শুধুই মুমিনুল-মুশফিকের। মাত্র ২৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে সূচনালগ্নেই চাপে পড়ে স্বাগতিকরা। একে একে ফিরে যান ইমরুল, লিটন ও মিথুন। সেখান থেকে তাদের প্রতিরোধ। সেই প্রতিরোধের মুখে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেননি জিম্বাবুয়ে বোলাররা। ফলে প্রথম সেশনটা গেলেও দ্বিতীয় সেশনটা হয়ে দাঁড়ায় শুধুই টাইগারদের।

দুর্দান্ত খেলেন মুমিনুল-মুশফিক। ধরার বল ধরেন, মারার বল মারেন। এ সেশন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটেই ২০৭। এ নিয়ে আট ইনিংস পর সাদা পোশাকে ২০০ রানের গণ্ডি অতিক্রম করে টিম টাইগার। এ পথে টেস্ট ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি তুলে নেন মুমিনুল। ৫৪.১ ওভারে সিকান্দার রাজাকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন তিনি। এ নিয়ে লংগার ভার্সনের ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি হাঁকানোর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে যান পয়েট অব ডায়নামোখ্যাত এ ব্যাটসম্যান। ৮ সেঞ্চুরি নিয়ে সবার ওপরে তামিম ইকবাল।

মুমিনুলকে যোগ্য সহযোদ্ধার সমর্থন দেন মুশফিক। সেঞ্চুরির ধীরে ধীরে সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যান তিনি। ইতিমধ্যে অনন্য মাইলফলক স্পর্শ করেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। টেস্ট ক্রিকেটে ঘরের মাঠে ২০০০ রানের মাইলস্টোন ছন তিনি।

শুধু একক মাইলফলকই অর্জন করেননি মুশফিক। আরেকটি কীর্তি গড়েন তিনি। মুমিনুলের সঙ্গে বাংলাদেশের হয়ে চতুর্থ উইকেটে সর্বোচ্চ ১৮১ রানের জুটির রেকর্ড গড়েন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। আগেরটি ছিল ১৮০ রানের। চলতি বছরের শুরুতে শ্রীলংকার বিপক্ষে লিটনকে সঙ্গে এ রেকর্ড গড়েন মুমিনুল।

সিলেট টেস্টে বাজেভাবে হেরে দুই ম্যাচ সিরিজে ১-০তে পিছিয়ে বাংলাদেশ। সিরিজ বাঁচাতে ঢাকা টেস্টে হার এড়ালে কিংবা ড্র করলেই হবে না, জিততেই হবে টাইগারদের। ফলে ম্যাচটি হয়ে দাঁড়িয়েছে বাঁচামরার।

এমন সমীকরণে বাংলাদেশ একাদশে এসেছে তিন পরিবর্তন। অভিষেক হয়েছে সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও মোহাম্মদ মিথুনের। একাদশে ফিরেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। গেল ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সবশেষ টেস্ট খেলেন তিনি।

এ ত্রয়ী ঢোকায় বাদ পড়েছেন পেসার আবু জায়েদ রাহী, বাঁহাতি ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত এবং বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু।

বাংলাদেশ একাদশ: ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), মোহাম্মদ মিথুন, আরিফুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *