পশ্চিমবঙ্গে সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দাদের জমির মালিকানা দিতে বিল আনা হচ্ছে

নিউজ ডেস্ক:: ২০১৫ সালে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময়ের তিন বছর পার হলেও ভারতের যুক্ত হওয়া সাবেক ছিটমহলবাসীদের এখনও জমির স্বত্ব দেওয়া হয় নি। দেয়া হয় নি অন্যান্য সুযোগ সুবিধাও। এর প্রতিবাদে সাবেক ছিটমহলবাসীরা বহুবার কোচবিহারের জেলাশাসকসহ অন্য আধিকারিকদের দপ্তরে ধরণা দিয়েছে। তবে এতদিনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে সাবেক ছিটবাসীদের জমির মালিকানা দেয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে একটি বিল আনা হবে রাজ্য বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে।

সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে জমি আইন সংশোধন করে বিল আনার প্রস্তাবটি গৃহীত হয়েছে। গত ২৯ অক্টোবর কোচবিহারে প্রশাসনিক বৈঠকে গিয়ে সাবেক ছিটমহলবাসীদের দুর্দশার কথা জেনে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী  প্রশাসনিক কর্তাদের দ্রুত ব্যবস্থা নেবার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি তিনদিনের মধ্যে অর্ডিন্যান্স জারি করে জমির মালিকানা দেবারও নির্দেশ দিয়েছিলেন।
পরে অবশ্য ঠিক হয়েছে, অর্ডিন্যান্স জারি না করে জমি আইন সংশোধন করে জমির মালিকানা দেওয়া হবে। ভারতের অভ্যন্তরে থাকা ৫১টি ছিটমহলের বাংলাদেশি বাসিন্দারা এখন ভারতীয় বাসিন্দা হয়ে গেছেন। তাদের ভোগদখলে থাকা জমি তাদেরই হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন তারা। এই ৫১টি সাবেক ছিটমহলে রয়েছে ৭ হাজার ১১০ একর জমি। এই জমি ফিরিয়ে দিতে তৈরি করা হচ্ছে ১৪ হাজার খতিয়ানের পরচা।
জানা গেছে, যারা যে স্থানে দখলে রয়েছে, সেভাবেই জমির মালিকানা দেওয়া হবে। আবার যাদের কাছে কোনো কাগজপত্র নেই, আইন সংশোধন করে তাদের দখল করা জমি দিয়ে দেওয়া হবে। তবে যেসব জমি নিয়ে বিবাদ আছে, তা মিটলে চূড়ান্তভাবে স্বত্ব দেওয়া হবে। তবে বাংলাদেশ থেকে সব ছেড়ে ছুড়ে যে ৯২১ জন ভারতের নাগরিক কোচবিহারের তিনটি অস্থায়ী শিবিরে রয়েছে তাদের কিভাবে জমি দেওয়া হবে তা নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেন নি কেউ। এই সব সাবেক ছিট বাসীদের দাবি, তারা ভারত সরকারের আশ্বাসে জমিজমা ছেড়ে দিয়ে এসেছেন। তাদের সেই জমির বিকল্প জমি দেবারও দাবি জানিয়েছেন তারা। ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে ভারত ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ১৬২টি ছিটমহল বিনিময় হয়। এর মধ্যে ভারতের ভূখন্ডে ছিল বাংলাদেশের ৫১টি ও বাংলাদেশের ভূখন্ডে ভারতের ১১১টি ছিটমহল ছিল।
হিসাব অনুযায়ী, ভারতের অভ্যন্তরে ছিল বাংলাদেশের ১৪ হাজার ২১৪ জন বাসিন্দা। আর বাংলাদেশের ভেতরে ভারতীয় ছিটমহলে ছিল ৩৭ হাজার ৩৬৯ জন বাসিন্দা। ছিটমহল বিনিময়ের পর বাংলাদেশের ৯২১ জন বাসিন্দা ওই বছরের ২২ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কোচবিহার জেলায় চলে আসেন। তবে ভারতের অভ্যন্তরে থাকা বাংলাদেশের ছিটমহলের কোনো বাসিন্দা বাংলাদেশে ফিরে যান নি।
কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *