মাত্র কয়েক বছর আগেও বিপদে না পড়লে পাবলিক টয়লেটে যেতেন না সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয়, পাবলিক টয়লেটের পাশ দিয়ে গেলে নাকে রুমাল কিংবা হাত চেঁপে হাঁটতেন পথচারীরা। কিন্তু সেদিন এখন আর নেই। সুসংবাদ, কিছুদিন পর এগুলো কেবল স্মৃতি হয়ে যাবে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পাবলিক টয়লেটে (গণশৌচাগার) এখন আভিজাত্য ও নান্দনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। এসবের ভেতরে প্রবেশ করলে মনে হবে, কোনো অভিযাত হোটেলের ওয়াশরুম। আগামী কাল (৫ নভেম্বর) নগরীর ধোপাদিঘীপাড় এলাকায় উদ্বোধন হবে আধুনিক আরো একটি পাবলিক টয়লেটে (গণশৌচাগার)। গত ৬ জুন নগরীর চৌহাট্টা এলাকায় নারী-পুরুষ উভয়ের ব্যবহার উপযোগী প্রথম পাবলিক টয়লেটের উদ্বোধন করেছিলেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর সোমবার ৫ নভেম্বর ধোপাদিঘীপাড়ের এই পাবলিক টয়লেটে (গণশৌচাগার) উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ওয়াটার এইড’ এবং এইচএন্ডএম ফাউন্ডেশনের অর্থয়নে অর্ধকোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ধোপাদিঘীরপাড় পাবলিক টয়লেটে রয়েছে আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা। রয়েছে নারী ও প্রতিবন্দিদের জন্য পৃথক পৃথক টয়লেটের ব্যবস্থা। আধুনিক এই পাবলিক টয়লেটে সৌন্দর্যের পাশাপাশি লকার সুবিধা থাকায় স্বাচ্ছন্দ্যে গোসল সেরে ফেলতে পারেন যে কেউ। পাবলিক টয়লেটের বিষয়ে নগরবাসীর নেতিবাচক অভিজ্ঞতা দূর এবং পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ার জন্য সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এ উদ্যোগ গ্রহন করেন।
পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর ব্যবস্থাপনায় পরিচালনা করা হবে এই শৌচাগার উল্লেখ করে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানান, “টয়লেটে নারী, পুরুষ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য রয়েছে আলাদা কক্ষ, লকার, হাত ধোয়ার জায়গা এবং বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা। হাত ধোয়ার জন্য রয়েছে লিকুইড হ্যান্ডওয়াশও। পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং সিসি ক্যামেরাসহ পেশাদার পরিচ্ছন্নকর্মী ও নারী কেয়ারটেকার”।
সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, ওয়াটার এইড বাংলাদেশের সহযোগিতায় এবং এইচ অ্যান্ড এম ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে টয়লেটটি তৈরি করেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। তিনি জানান, এর আগে নগরীর চৌহাট্টায় আরেকটি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করেছেন তারা। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে কদমতলীতে আরো একটি টয়লেট নির্মাণ করা হবে জানান তিনি। সোমবার বিকেলে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী আনুষ্ঠানিকভাবে আধুনিক এ পাবলিক টয়লেটের উদ্বোধন করবেন। এরপরই সর্বসাধারণের জন্য টয়লেটটি উন্মুক্ত করা হবে বলেও জানান নূর আজিজুর রহমান।
মাত্র ৫ টাকার রশিদ গ্রহণ করে সেবা মিলবে এসব টয়লেটে। গোসলের সু-ব্যবস্থা রয়েছে। এক্ষেত্রে খরচ করতে হবে ১০ টাকা। ওয়ান টাইম গ্লাস ১ টাকা দিয়ে সংগ্রহ করলেই বিশুদ্ধ খাবার পানি পাওয়া যাবে। একজন সেবা গ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গে তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। নামাজ ও ওজুর ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে। পাশাপাশি রয়েছে লকারের ব্যবস্থা। টয়লেট ব্যবহারকালে লকার ব্যবহার করতে পারবে ব্যবহারকারী। তবে এক্ষেত্রে ৫ টাকা গুণতে হবে। আর্থিকভাবে অসচ্ছল মানুষজন বিনামূল্যে এখান থেকে সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। প্রতিবন্ধীদের জন্য রয়েছে হুইলচেয়ারে চড়ে টয়লেটে প্রবেশ ও উন্নত মানের কমোড ব্যবহার। একসঙ্গে অন্ত:ত ১০ জন সেবা গ্রহণ করতে পারবেন এখানে।