জিম্বাবুয়েকে টানা তৃতীয়বার হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক:: ইমরুল কায়েস এবং সৌম্য সরকারের জোড়া সেঞ্চুরিতে টানা তৃতীয়বারজিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ দল। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত চতুর্থবার টাইগারদের কাছে হোয়াইটওয়াশ হলো জিম্বাবুয়ে।

এর আগে ২০১৫ সালের নভেম্বরে ঢাকায় তিন মাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে জিম্বাবুয়েকে পরাজিত করে বাংলাদেশ। তার আগে ২০১৪ সালে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়েকে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ৫-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছিল বাংলাদেশ দল।

তবে ২০০১ সালে খালেদ মাসুদ পাইলটের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ দল। সেবার ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়েকে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশ।

শুক্রবার আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ২৮৬ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। টার্গেট তাড়া করতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরেন ওপেনার লিটন দাস।

দ্বিতীয় উইকেটে সৌম্য সরকারকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের রেকর্ড ২২০ রানের জুটি গড়ে দলের জয়ের পথ সহজ করে দেন ইমরুল কায়েস। তবে যে কোনো উইকেটেওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি ২২৪ রানের। ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কার্ডিপে পঞ্চম উইকেটে২২৪ রানের জুটি গড়েন সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

শুক্রবারবাংলাদেশ দল ৪৭ বল আগেই৭ উইকেটে জয় নিশ্চিত করে।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডে দলের বাইরে থাকা সৌম্য, শুক্রবার সিরিজের শেষ ম্যাচে দলে ফিরেই সেঞ্চুরি তুলে নেন। ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজের ৩৫তম ম্যাচে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেন এই ওপেনার। সাজঘরে ফেরার আগে ৯২ বল খেলে ৯ চার ও ৬ ছক্কায় ১১৭ রান করেন সৌম্য।একদিনের ক্রিকেটে সবশেষ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ২০১৫ সালের এপ্রিলে ঢাকায়। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১১০ বল খেলে ক্যারিয়ার সেরা ১২৭* রান করেন সৌম্য।

তবে উদ্বোধনীতে খেলতে নামা ইমরুল কায়েস ব্যক্তিগতভাবে সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার পাশাপাশি দলকে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন। জয়ের জন্য শেষ দিকে ৬৩ বলে বাংলাদেশের প্রয়োজন মাত্র ১৩ রান। এমন অবস্থায় ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন কায়েস। তার আগে ১১২ বল খেলে ১০টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ১১৫ রান করেন কায়েস।

এর আগে সিরিজের প্রথম খেলায় ঢাকায় করেছেন ১৪৪ রান। গত বুধবার দ্বিতীয় ম্যাচে করেন ৯০ রান। আজ সিরিজের শেষ ওয়ানডে ম্যাচে ১১৫ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন কায়েস। তিন ম্যাচে তার সংগ্রহ ৩৪৯ রান।

জিম্বাবুয়ে ২৮৬/৫ রান

শুক্রবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে জিম্বাবুয়েকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ দল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেটে ২৮৬ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১২৯ রান সংগ্রহ করেন শেন উইলিয়ামস। এছাড়া ৭৫ রান করেন ব্রান্ডন টেইলর।

সূচনালগ্নেই দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে সফরকারীদের চেপে ধরে বাংলাদেশ দল। সিফাস জুওয়াও ক্লিন বোল্ড করে দলকে প্রথম সাফল্য এনে দেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই আরেক ওপেনার হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে ইনসাইড এজ করে প্যাভিলিয়নে পধ ধরান আবু হায়দার রনি।

৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে জিম্বাবুয়ে। তবে পরক্ষণে প্রতিপক্ষের ওপর সেই চাপটা ধরে রাখতে পারেননি টাইগার বোলাররা। তারা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করলেও দারুণ খেলেন ব্রেন্ডন টেইলর ও শন উইলিয়ামস। তাদের সোজা ব্যাটে শুরুর ধাক্কা সামলে এগিয়ে যায় সফরকারীরা।

একপর্যায়ে রীতিমতো চোখ রাঙাতে থাকেন এ জুটি। কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন। হার মানেন টেইলর। নাজমুল ইসলাম অপুর বলে মুশফিকুর রহিমকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ফেরার আগে ৭২ বলে ৮ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৫ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। এটি তার ক্যারিয়ারের ৩৬তম ফিফটি। এ নিয়ে ব্যাক টু ব্যাক ফিফটি হাঁকান তিনি। টেইলরের বিদায়ে ভাঙে ১৩২ রানের জুটি।

পরে উইলিয়ামসকে যোগ্য সহযোদ্ধার সমর্থন দেন সিকান্দার রাজা। মূলত এতেই বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। দুজনের জোটে দুরন্ত গতিতে ছুটে তারা। কিন্তু হঠাৎই হার মানেন রাজা। নাজমুল ইসলামকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সৌম্য সরকারকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ফেরার আগে ৫১ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৪০ রান করেন এ অলরাউন্ডার।

রাজা ফিরলেও একপ্রান্ত আগলে থেকে যান উইলিয়ামস। টাইগার বোলারদের শাসাতে থাকেন তিনি। তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২য় সেঞ্চুরি। তার ব্যাটে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যায় রোডেশিয়ানরা।

শেষদিকে তাকে সঙ্গ দেন পিটার মুর। ক্রিজে এসেই ঝড় তোলেন তিনি। ২১ বলে ২ ছক্কায় ২৮ রানের ক্যামিও খেলে ফেরেন মুর। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ওভারে ৫ উইকেটে ২৮৬ রান করে লালচাঁদ রাজপুতের দল। উইলিয়ামস ১২৯ রানে অপরাজিত থাকেন। ১৪৩ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় এ হার না মানা ইনিংস খেলেন বাঁহাতি ব্যাটার।

অপর প্রান্তে ১ রানে অপরাজিত থাকেন এল্টন চিগুম্বুরা। বাংলাদেশের হয়ে নাজমুল ইসলাম ২টি এবং সাইফউদ্দিন ও আবু হায়দার নেন ১টি করে উইকেট। প্রথম দুই ওয়ানডেতে দাপুটে জয়ে ইতিমধ্যে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছেন টাইগাররা।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *