সিলেট নগরে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রায় নিজদলের দুর্বৃত্তদের হামলায় মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসনাত শিমু হত্যার ঘটনায় চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ।
চার্জশিটে সিলেট মহানগর ছাত্রদলের ১০ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। চার্জশিটভুক্তদের মধ্যে চারজন কারাগারে রয়েছেন। তবে মামলার প্রধান আসামি নাবিল রাজা চৌধুরীসহ ছয়জন পলাতক রয়েছেন।
তদন্তকালে নতুন করে মামলায় এক আসামির জড়িত থাকার প্রমাণ পায় পুলিশ। তাই তার নামও যুক্ত করা হয়েছে চার্জশিটে। ওই আসামি হলেন মো. জহুরুল হক ওরফে শিবলী সাদিক (২১)। তিনি সুবিদবাজারের সি-ব্লকের মিতালী ১০/৩ নম্বর বাসার মাওলানা আশরাফুল হকের ছেলে। এছাড়া মামলার এজাহারে আর কেউ এ ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ পায়নি পুলিশ। এমনটিই দাবি করা হয়েছে চার্জশিটে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর গোপনে আদালতে দেয়া চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- মহানগর ছাত্রদল নেতা নাবিল রাজা চৌধুরী, মদন মোহন কলেজ ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক কাজী মেরাজ, ছাত্রদল নেতা জাহেদ ওরফে জায়েদ, মিজানুর রহমান সুজন, ইমাদ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, দেওয়ান আরাফাত জাকির, মো. সালাহ উদ্দিন ভূঁইয়া তুষার, রুমন মিয়া, নাহিয়ান আহমদ রিপন ও মো. জহুরুল হক ওরফে শিবলী সাদিক।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিষ্ণুপদ রায় চার্জশিটে উল্লেখ করেন, নিহত আবুল হাসনাত শিমু মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম গ্রুপের কর্মী। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নাবিল রাজা চৌধুরীসহ অন্য আসামিদের সঙ্গে শিমুর বিরোধ ছিল। এরই জেরে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ছাত্রদলের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রায় কালেক্টরেট মসজিদের সামনে শিমুকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন কাজী মেরাজ। তিনি শিমুর দুই হাত ধরে রাখেন। আর নাবিল রাজা তাকে ছুরিকাঘাত করেন। এ সময় অন্যরা শিমুকে লাঠিসোঁটা দিয়ে মারাত্মকভাবে মারধর করেন। পরে তাকে মেডিকেল নিয়ে গেলে মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার দুইদিন পর কোতোয়ালি মডেল থানায় নয়জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাত ৬-৭ জনকে অভিযুক্ত করে একটি হত্যা মামলা করেন নিহত শিমুর মামা তারেক লস্কর।
পরে এ ঘটনায় রুমন মিয়াকে আম্বরখানা থেকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যদের মধ্যে কাজী মেরাজ, ইমাদ উদ্দিন ও দেওয়ান আরাফাত জাকি আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে তারা চারজনই কারাগারে আছেন।
এদিকে, মামলার বাদী শিমুর মামা তারেক লস্কর চার্জশিট প্রদান করায় পুলিশ প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি দ্রুত প্রধান আসামি নাবিল রাজাসহ অন্যদের গ্রেফতারের ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে পুলিশের প্রতি অনুরোধ জানান।