ভারতে তিন তালাক শাস্তিযোগ্য অপরাধ গণ্য করে অধ্যাদেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক::
তাৎক্ষণিক তিন তালাককে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করে অধ্যাদেশ পাস করেছে ভারত সরকার।

বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে অধ্যাদেশটি পাশ হয়েছে বলে আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ জানিয়েছেন।রাষ্ট্রপতি ওই অধ্যাদেশে সই করার পরই তিন তালাক ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

লোকসভায় পাস হলেও দেশটির রাজ্যসভায় মুসলিম নারী (বিয়েসংক্রান্ত অধিকার সুরক্ষা) আইন-২০১৭ পাসে ব্যর্থ হওয়ার পর সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে।

এখন থেকে কোনো নারী নিজে কিংবা তার রক্তের সম্পর্কীয় কেউ অভিযোগ করলে এটি অপরাধ হিসেবে আমলে নেয়া হবে।

কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর দুজন আপসরফায় চলে গেলে মামলা উঠে যাবে। মামলায় স্বামীকে জামিন দেয়া হবে কিনা স্ত্রীর বয়ান শোনার পরই আদালত সেই সিদ্ধান্ত নেবেন।

এ মামলায় পুলিশও জামিন দিতে পারবে না। একমাত্র আদালতের বিচারপতিরই জামিন দেয়ার অধিকার রয়েছে।

নতুন সংশোধিত আইনে নিকাহ হালালার কথাও উল্লেখ রয়েছে। যেখানে সংশ্লিষ্ট নারী তালাকের পর অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারবেন।

ইচ্ছে হলে স্বামীর কাছে ফিরে গিয়ে তাকেও ফের বিয়ে করতে পারবেন। এ আইনে নারীরা ভরণপোষণের দাবিদার হবেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

অধ্যাদেশের নিয়ম অনুযায়ী, এখন শুধু ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সই বাকি। তারপরই তিন তালাক ফৌজদারি অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে।

গত বর্ষা অধিবেশনেই লোকসভায় পেশ হয় আইনটি। পাশও হয়ে যায়। কিন্তু বিরোধীরা বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি তোলে। এছাড়াও আরও কিছু জটিলতায় শেষ পর্যন্ত রাজ্যসভায় পেশ হয়নি এই বিল।

তবে ভারতীয় সংসদীয় নিয়ম অনুযায়ী, ছয় মাসের মধ্যে সংসদের উভয় কক্ষেই অধ্যাদেশ পাশ করাতে হয়। সেটা সম্ভব না হলে আবার নতুন করে জারি করতে হয়। লোকসভা ইতিমধ্যেই পাশ করেছে। এবার রাজ্যসভার শীতকালীন অধিবেশনেই এই বিল পাশ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

গত বছরের অগস্টে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট তিন তালাককে অবৈধ ঘোষণা করে। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, মুসলিম সম্প্রদায়ের এই বিবাহ বিচ্ছেদ প্রথা মহিলাদের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করে।

তার পর থেকেই আইনটি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়। অন্যদিকে আইনটি রাজ্যসভায় পেশ না হওয়া নিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও বহুবার বিরোধীদের আক্রমণ করে বলেছেন, বিরোধীদের জন্যই রাজ্যসভায় বিল পেশ করা যায়নি।

বিরোধীদের পাল্টা অভিযোগ, সরকারই চায় না সংসদে পাশ হোক বিল। অধ্যাদেশ জারির পর কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা বলেন, আমরা আলোচনায় রাজি ছিলাম। কিন্তু সরকার বিরোধীদের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনাই করেনি। এটাই মোদী সরকারের কাজ করার ধরন।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *