আজিজুল ইসলাম সজীব:: হবিগঞ্জের মাধবপুরে প্রবাসীর স্ত্রী রেহানা আক্তার রিমা হত্যার দায় স্বীকার করেছে ঘাতক শিপন।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় হবিগঞ্জের আমলী আদালত-৬ এর বিচারক নাসরিন আক্তারের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে তিন বন্ধু মিলে রিমাকে হত্যা করে বলে আদালতকে জানান তিনি।
মাধবপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এসএম রাজু জানান, শনিবার বিকেলে উপজেলার ঘাটুয়া গ্রাম থেকে শিপনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি উপজেলার শ্রীধরপুর গ্রামের শাহেদ মিয়ার ছেলে।
শিপন তার স্বীকারোক্তিতে বলেন, বেশ কিছুদিন আগে একই গ্রামের মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী আব্দুল আউয়ালের স্ত্রী রিমার সঙ্গে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে উঠলে তারা একসঙ্গে বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে যেত। স্বামী প্রবাসী হওয়ায় রিমা তার বাবার বাড়ি রাজাপুরে ৮ এবং ১০ বছর বয়সী দুই মেয়েকে নিয়ে বসবাস করতো।
পরে বাবার বাড়িতে দুই সন্তানকে রেখে রাজধানীর গাজীপুরে কাজের সন্ধানে যায় রিমা। সেখান থেকে শিপনের সঙ্গে যোগাযোগ করে রিমা। গত ৯ জুন রিমার কথামতো ঢাকা থেকে তাকে আনতে যায় শিপন। রাতে ঢাকা থেকে ফিরে মাধবপুর হাইওয়ে ইন হোটেলের সামনে গাড়ি থেকে নামে তারা। সেখান থেকে অটোরিকশায় করে কমলানগর গ্রামে যায়। কমলানগরে শিপন তার দুই বন্ধুকে নিয়ে রিমাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। রিমা চিৎকার শুরু করলে ব্যর্থ হয় তিন ঘাতক। একপর্যায়ে তারা লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয় রিমাকে।
হত্যার পর কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়ে একটি শসা খেতে মাটি চাপা দিয়ে চলে যায় ঘাতকরা রেহেনার সঙ্গে থাকা দু’টি মোবাইল ফোন, কানের দুল, নাকফুলসহ স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে মাধবপুরে স্থানীয় দোকানে বিক্রি করে তারা।
১৩ জুন পুলিশ রিমার বিকৃত মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহটি পচে যাওয়ায় তার পরিচয় শনাক্ত হয়নি। ওইদিনই কাশিমনগর ফাঁড়ির উপ পরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।এ ঘটনার প্রায় তিন মাস পর নানা কৌশল অবলম্বন করে পুলিশ জানতে পারে এটি রিমার মরদেহ।
এ ব্যাপারে মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী জানান, দীর্ঘদিন অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে শিপনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত শিপনের দুই বন্ধুর নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ।