আন্তর্জাতিক ডেস্ক::মিয়ানমার থেকে সামরিক অভিযানের মুখে পালিয়ে আসা লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসনে ব্যর্থতার জন্য বাংলাদেশকে দুষলেন সুচি। ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে প্রত্যাবাসন সম্পর্কিত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও জানুয়ারিতে এই প্রক্রিয়া শুরু করতে বাংলাদেশ প্রস্তুত ছিল না। এ খবর দিয়েছে বিবিসি অনলাইনে।
এতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক নানা ইস্যুতে যখন মিয়ানমার বিশ্বজুড়ে আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে তখন রীতিমত কোনো ধরণের মন্তব্য করা থেকে নিজেকে বিরত রেখেছিলেন সুচি।
বৃহস্পতিবার এ নিরবতা ভেঙে দেশটির সেনাবাহিনীর কথারই প্রতিধ্বনি করলেন তিনি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের একটি সমঝোতা হলেও এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি হয়নি। এর জন্য সুচি বাংলাদেশকেই দায়ী করেছেন। কিন্তু জাতিসংঘ ও ত্রাণ সংস্থার কর্মীরা বলছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার মতো পরিবেশ তৈরি হয়নি। এক্ষেত্রে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলেও বলেছেন কর্মকর্তারা।
ফোরামে অং সাং সুচি বলেছেন, রাখাইনে যেভাবে সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়েছে, এখন ভাবলে মনে হয় তা হয়ত ভিন্নভাবে সামাল দেয়া যেত। গত বছরের অগাস্ট মাসে রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তারা গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন।
রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর বার্মিজ সেনাবাহিনীর হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশকারী দুই সাংবাদিককে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়ার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে অং সান সুচি বলেন, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য নয় বরং আইন ভঙ্গ করার জন্য তাদের শাস্তি হয়েছে। কিন্তু এ দাবি অস্বীকার করে, রয়টার্সের ওই দুই সাংবাদিক বলেছেন, আমরা কোন অপরাধ করিনি। অং সান সুচির এসব বক্তব্যের জবাবে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, তিনি সবকিছুই ভুল বুঝেছেন।
গত বছরের অগাস্ট মাসে রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তদন্ত করা উচিত বলে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ওই রিপোর্টে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ, যৌন দাসত্ব এবং দাসত্বে বাধ্য করার বর্ণনা করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে এসবের সঙ্গে সেখানে নিরাপত্তা হুমকির কোন সম্পর্ক নেই।