শ্রীমঙ্গলের বহুল আলোচিত ‘স্বপ্না হত্যাকাণ্ডের’ রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পরকীয়ায় জড়িত হয়ে স্বপ্না বেগমকে প্রেমিকের হাতে খুন হতে হয়েছে বলে দাবি করছে পুলিশ।
শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর পুলিশের একটি দল স্বপ্না বেগমের প্রেমিক আজাদ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সোহেল রানা দীর্ঘ এক বছরের অধিক সময় মামলার তদন্তকার্য পরিচালনা করে মূল আসামি শ্রীমঙ্গল থানার সাইটুলা গ্রামের মৃত হাবিব মিয়ার ছেলে আজাদ মিয়া (২৮) কে গ্রেপ্তার করেন।
থানায় এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে গ্রেপ্তারকৃত আজাদ স্বীকার করে, একই গ্রামের সাইটুলার বস্তিতে তার খালাতো ভাই গফুর মিয়ার বাড়িতে যাওয়া আসার এক পর্যায়ে নিহত স্বপ্না বেগমের সাথে তার পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় প্রতিদিনই তাদের পারিবারিক কাজে সাহায্য সহযোগিতা করতেন যার ফলে পরিবারের কেউ তাকে সন্দেহের চোখে দেখত না। তিন বছর আগে স্বপ্না বেগম ও তার স্বামীর মধ্যে পারিবারিক ঝগড়ার এক পর্যায়ে স্বপ্না তার প্রেমিক আজাদকে জানালে আজাদ স্বপ্নার ছেলে মেয়েসহ স্বপ্নাকে তার বাবার বাড়ী রাজনগর পাঠিয়ে দেয়। পারিবারিক কলহে আজাদ মিয়ার এ রকম কর্মকাণ্ডে স্বপ্নার স্বামী গফুর মিয়ার মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়।
এ সময় স্বপ্না বেগম প্রায় পাঁচ মাস বাবার বাড়ীতে অবস্থান করে নারায়নগঞ্জের একটি গার্মেন্টেসে চাকরি নেন। এর কিছুদিন পর আজাদ মিয়াও সেখানে চলে যায় এবং স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস শুরু করে। এদিকে দেড় বছর অতিবাহিত হওয়ার পর স্বপ্না ও গফুর মিয়ার আত্মীয়স্বজনদের মধ্যস্থতায় পুনরায় সংসার করার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর স্বপ্না গফুর মিয়ারে সংসারে ফিরে আসে। অন্যদিকে স্বপ্না আসার ১৫-২০ দিন পর আজাদ মিয়াও ফিরে আসে।
২০১৭ সালের ৩১ জুলাই রাত ১০টার দিকে এক পর্যায়ে আজাদ স্বপ্না বেগমের সাথে তাঁর স্বামীর বাড়িতে দেখা করতে যান। স্বপ্না দরজা খুলে বাইরে আসলে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আজাদ স্বপ্নার গলা টিপে ধরলে কিছুক্ষন পর স্বপ্না নিস্তেজ হয়ে যায়। স্বপ্নার নড়াচড়া না দেখে আজাদ স্বপ্নার লাশ টেনে তার স্বামীর ঘরে নিয়ে যায়। তারপর লাশটি ভিতরে রেখে দরজা লাগিয়ে পালিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, স্বপ্না বেগমের বোন নিহত স্বপ্নার স্বামীসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ জনকে আসামি করে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন, যার নং ২/০২-০৮-২০১৭।