নিউজ ডেস্ক:: শখের বশে টার্কি জাতের মুরগি পালন করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী এলাকার আ.কাদের মিয়া এবং তার সহধর্মিনী পূর্নিমা আক্তার। স্বাবলম্বী এই পরিবারের স্বচ্ছলতা দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক এখন টার্কি পালনে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।
বিনা ভ্যাকসিনে, স্বল্প বিনিয়োগে, আল্প জায়গায় এই টার্কি মুরগি পালন করা যায়। আ.কাদের ২০১৬ সালে তার বাসা বাড়ির আঙিনায় গড়ে তুলেছেন টার্কি মুরগির ছোট খামার। তিনির পেশায় একজন দর্জি। এই কাজের পাশাপাশি স্ত্রী পূর্ণিমার সহযোগীতায় শখ করে গড়ে তুলেছেন টার্কি খামার। প্রথমে ১০ টি টার্কির বাচ্চা দিয়ে শুরু করেন। এখন তার খামারে রয়েছে ছোট বড় ১৫০টি টার্কি মুরগি।
আ.কাদের ও স্ত্রী পূর্ণিমার সাথে কথা বলে জানা যায়, টার্কি মুরগি পালনে তেমন কোন ঝামেলা নেই। রোগবালাইও খুব কম হয় এবং এর মাংসও খুব সুস্বাদু। আমাদের খামারে এখন ১০০ বড় টার্কি রয়েছে। এদের ২০ টি মুরগি এখন ডিম দিচ্ছে। প্রতি হালি ডিম ৩০০-৪০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। এই ডিম সংগ্রহ করে ইনকিউবেটর যন্ত্রের সাহায্যে বাচ্চা ফুটানো হয়। এই পদ্ধতিতে বাচ্চা ফুটাতে ২৬-২৭ দিন সময় লাগে। একটি টার্কির বাচ্চা ডিম পারার উপযোগী হতে সময় লাগে ৭-৮ মাস। প্রতিটি বাচ্চার দাম ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
পূর্ণিমা বলেন, ‘গত দুই মাসে প্রায় ৩০,০০০ টাকার মতো ডিম বিক্রি করেছি। তাছাড়া প্রতি মাসে ৫-৬ টি বড় টার্কি বিক্রি করছি। টার্কি মুরগি পালন করে আমাদের সংসার এখন আলোর মুখ দেখেছে। সংসারে কোন অভাব অনটন নেই। সংসারের সব খরছ চালিয়েও বাড়তি সঞ্চয় করতে পারছি। প্রতিদিন অনেক লোকজন আসে টার্কি মুরগি দেখতে। অনেকেই উৎসাহিত হচ্ছেন টার্কির খামার করার জন্য। টার্কি পালনে দামি কোন খাবার বা অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে হয় না। টার্কি মুরগি খাবার হিসাবে শস্যদানা, শস্যবীজ, কচি ঘাস, শাকসবজি, ফলমূল, পোকামাকড় ও লতাপাতা খেয়ে জীবন ধারণ করে থাকে। তাই খাবারেও তেমন কোন ঝামেলা নেই।’
আ.কাদের মিয়া বলেন, ‘আমাদের দেশের বেকার যুবকরা বাড়ির আঙিনায় বা পুকুর পাড়ে সল্প পরিসরে টার্কি পালন করতে পারেন। এতে কম বিনিয়োগে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি।’
ঘাটাইল উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানন, টার্কি এক ধরনের মুরগি। টার্কির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একটু বেশি। তাই এর রোগবালাই কম এবং যে কোন পরিবেশের সাথে নিজেকে মানানসই করে নিতে পারে। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় এ মুরগি এখন বাণিজ্যিকভাবে পালন করা হচ্ছে। বর্তমানে টার্কি পালন অনেক লাভজনক হওয়ায় অনেক বেকার যুবক টার্কি পালনে উৎসাহিত হচ্ছেন।