ধর্ম ও দর্শন ডেস্ক::
রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টা। কাবা শরিফ থেকে ভেসে আসছে তাহাজ্জুদ নামাজের আযান। গভীর রাতের এ সময়ে হাজার হাজার হাজি একাধারে তাহাজ্জুদ ও ফজরের নামাজ আদায় করতে ছুটে আসেন।
কাবা শরিফের প্রধান ফটক কিং আবদুল আজিজ গেট দিয়ে সোজা ভেতরে প্রবেশ করে ডান দিকে খানিকটা এগোলেই একটি ফাঁকা স্থানে চোখ পড়ে। সেখানে সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে কয়েকজন হাজির লাশ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হজ করতে এসে পবিত্র নগরী মক্কায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। ফজরের ফরজ নামাজ আদায় শেষে তাদের নামাজে জানাজা হবে।ফজরের নামাজের পর কাবা শরিফের প্রধান ইমাম কিছুক্ষণের মধ্যে জানাজা আনুষ্ঠিত হবে বলে মাইকে ঘোষণা দেন।
এ সময় উপস্থিত লাখ লাখ হাজি কাতারে দাঁড়িয়ে জানাজায় অংশ নেন। জানাজা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লাশ দাফনের জন্য কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।
এভাবে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ শেষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা হাজিদের মধ্যে যারা মারা যান তাদের নামাজে জানাজা হয়। পবিত্র কাবা শরিফে মৃত্যু ও লাখো হাজির উপস্থিতিতে জানাজা শেষে দাফন সৌভাগ্যের ব্যাপার বলে অনেকেই মনে করেন।
মক্কায় স্থায়ীভাবে বসবাসকারী কয়েকজন বাংলাদেশি জানান, এখানে আমাদের দেশের মতো গর্ত করে লাশ কবরে রেখে বাঁশ-চাটি দিয়ে ঢেকে মাটি দেয়া হয় না। মরুভূমি ও পাথরের কবরস্থানে আগে থেকেই নির্দিষ্ট আকারে গর্ত খুঁড়ে ওয়ারড্রোবের ড্রয়ারের মতো বানানো থাকে। লাশ আনার পর সিঁড়ি দিয়ে একটু নেমে লাশটি মৃদু ধাক্কা দিলে সেটি ওই ড্রয়ারের মধ্যে চলে যায়। তারপর বাঁশ দিয়ে ঢেকে পাথর-মাটি দেয়া হয়। এতে স্থান কম লাগে বলে জানান তারা। এ কারণে মক্কার প্রতিটি কবর উপর থেকে দেখতে ছোট মনে হয়।