নাসির উদ্দিন তারেক:: সিলেটের অন্যতম পর্যটন এলাকা গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছানাকান্দি। প্রতিদিন এই স্থানে ভিড় জমান অসংখ্যক পর্যটক। তবে কিছু দিন ধরে বিছানাকান্দিতে বেড়ে গেছে গরু আনাগোনা ও চোরাচালান। মনে হচ্ছে সেন বিছানকান্দিতে যেন গরুর মেলা বসেছে। তীব্র তাপদাহ গরমে গা ভেজাচ্ছে ঝর্নার জলে নদী পার হচ্ছে। আসলে গরু গুলো অবৈধ ভাবে নিয়া আসা হচ্ছে সীমান্তের ওপারে ভারত থেকে।
ঈদুল আযহা উপলক্ষে কোরবানীর জন্য বিছানাকান্দি দিয়ে প্রতিদিন বাংলাদেশ সীমান্তে আসছে অসংখ্য গরু। সীমান্ত পেরোনোর পর কিছু নৌপথ ও কিছুটা সড়ক পথ ভ্রমন শেষে পিকআপ যোগে সিলেট শহরে প্রবেশ করছে গুরুগুলো। ইদানিং কেবল বিছানাকান্দি দিয়েই প্রতিদিন প্রায় পাঁচশ গরু অবৈধভাবে দেশে ঢুকছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। কাস্টমস ও ভ্যাট কমিশনারেট সূত্রে জানা গেছে ভারত বৈধভাবে বাংলাদেশে গরু রপ্তানি করে না। তবু ও প্রতি বছর ঈদুল আযহার মৌসুমে সিলেটের সীমান্তগুলো দিয়ে ভারত থেকে আসে অসংখ্য গুরু। এসব গরু আমদানী বন্ধ করতে না পেরে গতবছর সিলেটের বিভিন্ন সীমান্তে চারটি করিডোর খোলা হয়েছে।
এসব করিডোর নিয়ে আনা গরু মাত্র ৫শ’ টাকা রাজস্ব প্রদানের মাধ্যমে দেশে প্রবেশের বৈধতা প্রদান কররা হয়। তবে চোরাকারবারিরা এই পাঁচশ টাকা ফাঁকি দেওয়ার জন্য করিডোর দিয়ে না এনে অন্যান্য সীমান্ত নিয়ে অবৈধভাবে গরু নিয়ে আসছে। এই চোরাচালানে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিজিবি) এর স্থানীয় দায়িত্বশীলরা জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠেছে। স্থানীয় প্রশাসন আর রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তরা বলছেন, বিজিবির প্রশ্রয়ে বন্ধ করা যাচ্ছে না এই গরু চোরাচালান। তবে বিজিবির কর্মকর্তা গরু চোরাচালানের বিষয়টি অস্বীকার করে জানিয়েছেন, সরকারকে বৈধভাবে নির্ধারিত রাজস্ব দিয়েই বৈধভাবেই সিলেট কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো: গিয়াস উদ্দিন আহমদের দাবি, সিলেটে কোরবানির চাহিদা পূরনের মতো যথেষ্ট গবাদিপশু রয়েছে।
ফলে আমদানীর প্রয়োজন নেই। আমদানী করলে স্থানীয় খামারীরাই ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। সিলেট বিভাগে এই ঈদে প্রায় ৫ লাখ গবাদিপশু কোরবানি দেয়া হবে বলে ধারনা তাঁর। গত বুধবার বিছানকান্দিতে গিয়ে দেখা যায়, সীমান্তের ওপারের ভারতীয় টিলা থেকে দলবেঁধে নেমে আসছে গরু। টিলা থেকে নেমে ঝর্নার জলে সাঁতরে গরু প্রবেশ করছে বাংলাদেশে। ওপারের টিলার উপর থেকে কয়েকজন এদিকে ছেড়ে দিচ্ছেন গুরুগুলিকে। এপারে আসার পর আর ও কয়েকজন গুনে গুনে গরু গুলি ইঞ্জিন নৌকায় তুলছেন। তারপর গুরু গুলি নিয়ে আসা হচ্ছে সিলেটের দিকে। আশে পাশেই বিজিবি সদস্যরা টহল দিলে ও এ ব্যাপারে কোনো ভ্রক্ষেপ নেই তাদের।
স্থানীয়রা জানান, এভাবে করিডোরের বাইরে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে নিয়ে আসা গরুর একটা ছোট অংশ বিজিবি আটক করে নিয়ে যায় নিকটবর্তী করিডোরে। সেখানে ৫০০ টাকা রাজস্ব প্রদান করে সেগুলোকে বৈধকরিয়ে নেয়া হয়। সীমান্ত দিয়ে অবৈধ ভাবে গরু প্রবেশের কথা স্বীকার করেছেন গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ পাল ও। এ ব্যাপারে অসহাত্ব প্রকাশ করে তিনি বলেন, বিছানাকান্দি সহ কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে গরু আসছে। বিজিবিকে ও বলেছি। কিন্ত কোনো কাজ হচ্ছে না।