মিয়ানমারের ওপর অবরোধ চান জাতীয় মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান

নিউজ ডেস্ক::
রোহিঙ্গা সংকটের কার্যকর সমাধানে মিয়ানমারের ওপর সম্মিলিতভাবে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করতে বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারকেও ইয়াংগুনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার জোর দাবি জানান তিনি। চেয়ারম্যান মিস্টার হক বলেন, মিয়ানমার যাতে এই সমস্যার সমাধান করতে বাধ্য হয় এজন্য বৈশ্বিকভাবে দেশটির ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপসহ কূটনৈতিক চাপ বাড়াতে হবে। বিশ্ব সমপ্রদায়কে এই সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ওই চাপ ধরে রাখার অনুরোধও জানান তিনি।

বাস্তুচ্যুতদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা তো বটেই সেই সঙ্গে গোটা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর বর্মী সরকার ও সেনাবাহিনী যেভাবে গণহত্যা চালিয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে তার বিচার নিশ্চিত করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কঠোর পদক্ষেপ চান বাংলাদেশের মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান। স্বাধীন ওই কমিশনের আয়োজনে রাজধানীতে ‘রোহিঙ্গা সমস্যা এবং স্থানীয় সমাজে এর প্রভাব: টেকসই সমাধানের জন্য করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনার হয় গতকাল।

জাতিসংঘ ও সিডা’র সহায়তায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে মানবাধিকার কমিশন সভাপতিত্ব করেন।
সেখানে পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব পদে সদ্য পদোন্নতি পেয়েছেন) মো. শহীদুল হক, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিন, শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম এনডিসি, ইউএনএইচসিআরের আঞ্চলিক প্রতিনিধি জেমস লিনস, নিজেরা করি’র খুশি কবির, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আজীজুল হক, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের শিপা হাফিজা, আইওএমের আঞ্চলিক প্রতিনিধি ইশিকা, সাংবাদিক অজয় দাসগুপ্ত টেকসই সমাধানের জন্য আলোচনায় অংশ নিয়ে মতামত দেন। সভাপতির বক্তব্যে কাজী রিয়াজুল হক রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশকে আরো শক্তিশালী কূটনৈতিক তৎপরতা বিশেষত বেইজিং এবং মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের পরামর্শ দেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মতামত ও সুপারিশ আসে।

বলা হয়- সংকট সমাধানে মিয়ানমার মোটেও আন্তরিক নয়। এ জন্য মিয়ানমারের ওপর বৈশ্বিক চাপ আরো বাড়াতে হবে। বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের সহযোগিতা নিতে হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিচারের জন্য যা করণীয় বাংলাদেশকে তাই করতে হবে। অনুষ্ঠানে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, এই সমস্যা যতটা না মানবিক, তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক। কেননা, ওই দেশটির সঙ্গে সকলেই বাণিজ্য করছে, সম্পর্ক রাখছে। কিন্তু মানবিক ইস্যুতে মিয়ানমারকে শক্তিশালী দেশগুলো কিছু বলছে না।

পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক অবশ্য বলেন, আমরা এখনো আশাবাদী যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হবে। প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমার কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে তা সরজমিন দেখার জন্য আগস্টের প্রথম দশকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমার সফরে যাবেন। তার সঙ্গে তিনিসহ জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের ১৫ সদস্যও মিয়ানমার যাচ্ছেন।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *