ভোট কেন্দ্র দখল ও সন্ত্রাসের এই নির্বাচনকে আমি প্রত্যাখ্যান করলাম : আরিফ

সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে কেন্দ্র দখল, গুলি, সংঘর্ষ ও জাল ভোটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। দুটি ভোটকেন্দ্রের ভোট বাতিল করা হয়েছে।

একইসঙ্গে ২২ নম্বর ওয়ার্ডের ৫ জন কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচন বয়কট করেছেন। সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে টানা ভোটগ্রহণ।

এদিকে, বিকেল ৪টায় বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, সিলেটে নজিরবিহীন জাল ভোট হয়েছে। কেন্দ্র দখল ও সন্ত্রাসের এই নির্বাচনকে আমি প্রত্যাখ্যান করলাম। বিএনপির উচিত এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়া।

এদিকে, সিসিকের ১৩৪টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ কার্যক্রমে বেশিরভাগ কেন্দ্রে বিক্ষিপ্ত সংঘাত ও অনিয়মের খবর পাওয়া গেছে। নগরের ১৯নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব মিজাবাজারস্থ বখতিয়ার বিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর কেন্দ্র দখল ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়লে দুইজন গুলিবিদ্ধ হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ১৯নং ওয়ার্ডের ওই কেন্দ্রে দুপুর সোয়া ১টার দিকে কাউন্সিলর প্রার্থী শওকত আমীন তৌহিদ এবং দিনার খান হাসু তাদের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে কেন্দ্র দখলের চেষ্টা চালালে দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় ভোটকেন্দ্রের চারপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে।

এতে কাউন্সিলর প্রার্থী দিনার খান হাসুর সমর্থক তালহার পেটে গুলি লেগে মারাত্মকভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানা গেছে। অপরদিকে কাউন্সিলর প্রার্থী তৌহিদ আমীন শওকতের সমর্থক এবং তার ফুফাতো ভাই ফাহাদ গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

এদিকে, নগরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের খাসদবির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখলে নেয় কাউন্সিলর প্রার্থী রিমাদ আহমদ রুবেলের সমর্থকরা। বেশ কিছু সময় পর ওই কেন্দ্রে পুনরায় ভোট শুরু হয়।

নগরের ঝর্নারপাড়স্থ কাজী জালাল উদ্দিন বহুমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্র, নগরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডে শিবগঞ্জস্থ সৈয়দ হাতিম আলী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, নগরের পাঠানটুলাস্থ শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা কেন্দ্র, রায়নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, ২০ নং ওয়ার্ডে টিলাগড়স্থ এমসি কলেজ কেন্দ্র, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের দরগাহ গেট প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শাহজালাল জামেয়া ইসলাময়া কামিল মাদরাসা কেন্দ্র, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাগবাড়ি বর্ণমালা স্কুল কেন্দ্র, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ঘাসিটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, দক্ষিণ সুরমায় ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের হবিনন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের উমরশাহ তেররতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, গাজী বুরহান উদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে।

এছাড়া নগরের কুমারপাড়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাচালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর রহমান আহত হন। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে দক্ষিণ সুরমার রেলওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে একটি বুথের দরজা বন্ধ করে জাল ভোট দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরে ওই বুথ থেকে তিন যুবককে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *