তিনশ’ আসনের দুইশ’ চায় আ.লীগের শরিকরাই

নিউজ ডেস্ক:: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কাছে তার জোটের শরিকরা অন্তত দুইশ’ আসন চায়। তবে ছাড় দিতে নারাজ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। এ নিয়ে চলছে দর-কষাকষি। শেষ মুহূর্তে ১৪ দলীয় জোটের শরিকরা কয়টি আসন পাবে, তা জোট প্রধান শেখ হাসিনাই নির্ধারণ করবেন।

জানা গেছে, বর্তমানে জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের শরিকদের মধ্যে সংরক্ষিত আসন মিলিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির ৭টি, জাসদের ৬টি, তরিকত ফেডারেশনের ২টি, জাতীয় পার্টি-জেপি ২টি মিলে মোট ১৭টি সংসদীয় আসনে সদস্য দিতে পেরেছে। তবে এবার শরিকরা আরও আসন চাইবে। এ নিয়ে তারা ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের কাছে দাবিও প্রকাশ করেছেন। তবে শরিকরা যত আসনই দাবি করুক না কেন আসন ভাগাভাগিটা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার হাতেই থাকবে। তিনিই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ (ইনু) এবার কমপক্ষে ২০টি আসনের জন্য জোর দাবি জানাবে। ওয়ার্কার্স পার্টি ১৫টি আসন দাবি করবে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-বাংলাদেশ জাসদ (আম্বিয়া) ৮টি আসনে প্রার্থী দিতে চায়। বর্তমানে সংরক্ষিত নারী আসনের একটিসহ বর্তমানে সংসদে জাসদের ছয়জন এমপি রয়েছেন। এদের মধ্যে ইনুর নেতৃত্বাধীন জাসদে তিনজন ও আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন জাসদে দুজন সংসদ সদস্য রয়েছেন। অন্য এক সদস্য দল ভাঙার পরে দুই পক্ষের সঙ্গেই যোগাযোগ রেখে যাচ্ছেন। তার বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত নয়।

এদিকে, তরিকত ফেডারেশন দুটি, জাতীয় পার্টি জেপি ২০টি, ন্যাপ ২০টি, গণতন্ত্রী পার্টি ১৫টি, সাম্যবাদী দল তিনটি, কমিউনিস্ট কেন্দ্র দুটি, বাসদ (রেজা) ১৫টি আসন দাবি করবে বলে দলগুলো জানিয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ জাসদের কার্যকরী সভাপতি ও সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন খান বাদল বলেন, আমরা জোটের কাছে আটটি আসন চাইব। আমরা সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।

গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি ব্যারিস্টার আরশ আলী বলেন, জোটের প্রধান দল আওয়ামী লীগের কাছে আমাদের প্রার্থী তালিকা তুলে দিব। আমরা চাই সঠিক জায়গায় সঠিক প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক।

এবারের সংসদে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি-জেপি অন্তত ২০টি আসন দাবি করবে বলে জেপির মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জোটের আসন নিয়ে এখনো কোনও কথা হয়নি। তবে আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।

জোটের আরেক শরিক ন্যাপ কয়টি আসন চায়, তা এখনো চূড়ান্ত করেনি বলে জানিয়েছেন ন্যাপের কার্যকরী সভাপতি আমিনা আহমেদ এমপি। তবে ৫টি আসন চাইতে পারে বলে জানান তিনি। গত নির্বাচনে এ দলটি কোনও প্রার্থিতা দেয়নি।

দিলীপ বড়ুয়ার নেতৃত্বাধীন সাম্যবাদী দল এবার তারা পাঁচটি আসনে মনোনয়ন চাইবে বলে দিলীপ বড়ুয়া জানিয়েছেন। কমিউনিস্ট কেন্দ্র আগামী নির্বাচনে তিনটি আসন চাইবে বলে দলটির আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান নিশ্চিত করেছেন।

তবে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শরিকদের আসন ষাটটির বেশি হবার কথা না। এর বেশি আওয়ামী লীগ ছাড় দেবে না। মহাজোটে জাতীয় পার্টি এলে সেই ছাড় ১৫ থেকে ২০ জনে নেমে আসবে। তবে শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এসব বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং দলের সংসদীয় বোর্ডের সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ আরটিভি অনলাইনকে বলেন, জাতীয় পার্টি ৭০টি, জাসদ ২০টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ১০টি আসন চায়। এই তিন দলের যদি ১০০টি দিতে হয়, তাহলে বাকিদের কী করবো?

তিনি আরও বলেন, আমরা প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে বিবেচনা করবো যে, কে জিতে আসতে পারবে। শেষ সিদ্ধান্ত কী হবে সেটা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বলা সম্ভব নয়। সব সম্ভাব্যতা বিবেচনা করেই প্রধানমন্ত্রী জোটের প্রার্থীদের মনোনয়ন দেবেন।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *