সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ থানার ওসি আলতাফ হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। জামিলা আকতার নামে এক নারীর দুদকে করা মামলায় তিনি আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত এ নির্দেশ দেন।
মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালত ১-এর বিচারক সফিকুল আলম এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবদুর রহিম। ওসি আলতাফ হোসেন আগে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া থানায় কর্মরত ছিলেন।
তিনি জানান, জমিলা আকতার নামে এক নারীর করা মামলার (মামলা নং ১৫/১৭) নির্ধারিত তারিখ ছিল আজ (১৯ জুন)। ওসি আলতাফ হোসেন আজ হাজির হয়ে জামিন আবদেন করলে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক অভাব অনটনের কারণে ২০১৪ সালের ১৮ জুন সকালে ছিন্নি খাইয়ারপাড়ায় মৃত নজির আহম্মদের ছেলে উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মচারী ফরিদুল আলমকে হত্যা করে তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম ডেজি ও ছেলে অহিদুল আলম (রিয়াদ)। এ ঘটনায় নিহতের মা নুরজাহান বেগম বাদী হয়ে মামলা করতে গেলে কুতুবদিয়া থানার ওসি আলতাফ হোসেন এক লাখ টাকা দাবি করেন। ছেলে হত্যার ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় ওই বৃদ্ধা এসআই এবিএম কামাল উদ্দিনের মাধ্যমে আলতাফ হোসেনকে ৫০ হাজার টাকা দেন। কিন্তু ওসি আলতাফ হোসেন নুরজাহানের দায়ের করা এজাহারটি আমলে না নিয়ে উল্টো নিহতের ছেলে মোহাম্মদ তৌহিদুল আলমের কাছ থেকে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে একটি মামলা নেন, যা কুতুবদিয়া থানার মামলা নং ১৫, জিআর নং ৭৫/১৪। ওই মামলায় নিহতের বৃদ্ধ মা নুরজাহান এবং দুই ভাই ইস্কান্দর মির্জা ও মাহবুব আলমকে আসামি করা হয়। সেই মামলায় তার ছেলে দীর্ঘদিন কারাগারে ছিল।
এ নিয়ে ইস্কান্দর মির্জার স্ত্রী জামিলা আকতার বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে কুতুবদিয়া থানার ওসি আলতাফ ও এসআই এবিএম কামাল উদ্দিনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।
এ বিষয়ে দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট আবদুর রহিম বলেন, বাদীর লিখিত অভিযোগ পেয়ে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের তৎকালীন বিচারক সাদিকুল ইসলাম তালুকদার মামলাটি আমলে নিয়ে দুদককে তদন্তের নির্দেশ দেয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ ওসি এবং এস আই দুইজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অজয় ঘোষ। এরপর তাদের বিরুদ্ধে আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ওসি আলতাফ হোসেন গ্রেফতারি পরোয়ানা এড়াতে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন।
তিনি আরও বলেন, ওসি আলতাফ আত্মসমপর্ণের সময় সঙ্গে বাদীকে নিয়ে আসে। বাদী মামলাটি সামাজিকভাবে সুরাহা করা হয়েছে বলে আদালতে লিখিত আবেদন করেছেন। তবে আদালত ওসির জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২৬ জুন।