সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ক সংস্কার দুই বছরেও শুরু হয়নি কাজ

নিজস্ব প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জ-সিলেট দুই বছরেও শুরু হয়নি সড়ক সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ প্রকল্পের কাজ। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির নির্মাণ কাজ আটকে থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এ অঞ্চলের মানুষ। ফলে প্রতিবারের মতো এবারও আসন্ন ঈদে এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী ঘরমুখো মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এদিকে সড়কের সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ প্রকল্পের কাজ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ জনস্বার্থে বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সওজ কর্তৃপক্ষ।

দ্রুত এই সড়কে কাজ শুরুর দাবি জানিয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের পরিবহন মালিক সমিতি একাধিকবার ধর্মঘট, যাত্রীদের পক্ষ থেকে পদযাত্রা ও মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করলেও দু’বছরেও শুরু হয়নি জনগুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পের কাজ।

সওজ কর্তৃপক্ষের দাবি, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী অর্থবছরের প্রথমদিকে কাজ শুরু হবে। এদিকে বিলম্বের কারণ অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সর্বনিম্নে দরদাতা হিসেবে কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠানকে বাতিল করে এখন অন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে ৮ কোটি টাকা বেশি মূল্যে কাজ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এ ঘটনায় বঞ্চিত প্রতিষ্ঠান উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেছেন।

সওজ বিভাগ সিলেটের তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয় সূত্র জানায়, সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ককে জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ২৯ মার্চ একনেকে অনুমোদন হয়। ২০১৭ সালের ৯ মার্চ কাজের টেন্ডার আহ্বান করা হয়। দুটি প্যাকেজে প্রায় ৮৪ কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হলে সর্বনিম্নে দরদাতা হিসেবে ‘তমা কনস্ট্রাকশন-সজীব রঞ্জন দাশ জেবি’ কাজ পায়।

প্রতিষ্ঠানটি কাজ পাওয়ার পর নিয়মানুযায়ী ওয়ার্ক অর্ডার দেয়ার কথা থাকলেও নানা জটিলতার অজুহাতে সড়ক বিভাগ ওয়ার্ক অর্ডার না দিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী বরাবরে এই জয়েন্টভেঞ্চার প্রতিষ্ঠানের একজনের ওপর দুদকের মামলা রয়েছে উল্লেখ করে কাজটি বাতিলের সুপারিশ করে।

গত বছরের ২৯ আগস্ট মন্ত্রণালয় ওই প্রতিষ্ঠানের দরপত্রটি বাতিল করে নতুন দরপত্র আহ্বান করে। একই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর সিলেট তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয় থেকে তমা কনস্ট্রাকশন-সজীব রঞ্জন দাশ জেবিকে জনস্বার্থে কাজ বাতিল করা হয়েছে মর্মে চিঠি দেয়া হয়।

সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ এবং উন্নত বাস সার্ভিসের দাবিতে আন্দোলনের সংগঠক নাজমুল হক কিরণ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই বেহাল সড়কটি সংস্কার, প্রশস্তকরণ ও উন্নত বাস সার্ভিসের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছি। বাস সার্ভিস সামান্য উন্নত হলেও সড়কের অবস্থার উন্নতি হয়নি। নানা অজুহাতে সড়ক সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ কাজটি আটকে আছে। ঈদসহ নানা উৎসবে এ কারণে সাধারণ যাত্রীদেরকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। আমরা চাই দ্রুত যেন সড়কটিতে কাজ শুরু হয়।

সিলেট সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আনোয়ারুল আমীন বলেন, আগের প্রতিষ্ঠানের কাজটি জনস্বার্থে বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে সংক্ষুব্ধ ঠিকাদার উচ্চ আদালতে গেলে আদালত তিন মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন। আমরা পরবর্তীতে আপিল করলে স্থগিতাদেশ ওঠে গেলেও এখনো রুলটি নিষ্পত্তি হয়নি।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *