নিউজ ডেস্ক :: টানা বৃষ্টিপাত আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে কানাইঘাটে সুরমা নদী উত্তাল হয়ে উঠেছে। এ এলাকায় সুরমা নদীর পানি বর্তমানে বিপদ সীমার ২০৪ সে. মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ভোর রাত থেকে কানাইঘাট পৌরবাজার সহ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে বন্যা দেখা দেওয়ায় প্রায় দুই লক্ষ মানুষ পানি বন্ধি রয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এমনকি প্রধান তিনটি সড়ক পানিতে ডুবে যাওয়ায় জেলা সদরের সাথে এ উপজেলার মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
জানা যায় সাতবাঁক ইউপির চরিপাড়া, চাপনগর, ঠাকুরের মাটি, সহ বেশ কিছু গ্রামের বাড়ি ঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। তলিয়ে যাওয়া ঘর বাড়ির লোকজন বর্তমানে আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এ ইউপির চেয়ারম্যান মস্তাক আহমদ পলাশ তার ইউপিকে বন্যা কবলিত এলাকা ঘোষণা করে লোক জনের আশ্রয়ের জন্য ইউপি কার্যলয়কে অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র হিসেব প্রস্তুত করে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন ইউপি সদস্য শাব্বির আহমদ। ১ নং লক্ষীপ্রসাদ পুর্ব ইউপির চেয়ারম্যান ফয়াজ আহমদ জানান ভারত থেকে নেমে আসা জোয়ারের পানিতে তার সীমান্তবর্তী ইউপি’র মেচা, উজান বারাপৌত, নক্তিপাড়া, কান্দলা, সাউদগ্রাম, বড়গ্রাম ও কালিজুরী গ্রামের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। এ গ্রামগুলোর মানুষ বর্তমানে পানিবন্দী রয়েছে। লক্ষীপ্রাদ পশ্চিম ইউপির চেয়ারম্যান জেমস লিও ফারগুশন নানকা জানান তার ইউপিটিও সীমান্তবর্তী এলাকায় হওয়ায় উজানের জোয়ারে রাজারমাটি, দক্ষিণ লক্ষীপ্রসাদ, উত্তর লক্ষীপ্রসাদ, খুকুবাড়ি, নেহালপুর, কুওরঘড়ি, বাউরভাগ ৪র্থ খন্ড গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্ধী হয়ে পড়েছেন। বড়চতুল ইউপি’র চেয়ারম্যান মাওঃ আবুল হোসেন চতুলী জানান তার ইউনিয়নটি বন্যার পানিতে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কারন সুরমা নদী ও পার্শ্ববর্তী জৈন্তাপুর উপজেলার সারি নদীর পানিতে এ ইউপি’র বড়চতুল, সোনাতুলা, কাজিরপাতন, রাঙ্গারাই, দলকিরাই মুক্তাপুর, রায়পুর, নয়াগ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এখানকার অনেক লোক বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন এবং কয়েক হাজার মুনুষ পানি বন্ধী হয়ে পড়েছেন। রাজাগঞ্জ ইউপি’র চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম জানান তার ইউপি’র প্রতিটি গ্রামে বন্যা দেখা দিয়েছে।
এর মধ্যে ফালজুর, বীরদল, তালবাড়ি, খালপাড় ও লালারচক গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্ধী রয়েছেন। একইভাবে সদর ইউপি’র ভাটিদিহি, বীরদল, উমাগড়, ছোটদেশ গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে এবং বাণীগ্রাম ও ঝিঙ্গাবাড়ী ইউপিতেও বন্যা দেখা দিয়েছে। কানাইঘাট পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসের গেজ রিডার ফেরদৌসী বেগম জানান, সকাল ৮টায় কানাইঘাট সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ২০৪ সে. মি. এর উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।