নিউজ ডেস্ক:: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, অসুস্থ খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সরকার সময়ক্ষেপণ করছে। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ইউনাইটেড হাসপাতালে তার চিকিৎসাব্যবস্থা হলে যাবতীয় খরচ বহন করা হবে। পরিবার থেকেও বলা হয়েছে তার চিকিৎসার সব ব্যয়বহন করা হবে। এক্ষেত্রে বিলম্ব করার অর্থই হচ্ছে খালেদা জিয়ার জীবন একটা হুমকির সম্মুখীন হওয়া। তিনি অবিলম্বে ইউনাইটেড হাসপাতালেই তার চিকিৎসার ব্যবস্থার দাবি জানান।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে এক ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক লেবার পার্টির একাংশের আয়োজনে কারাবন্দি জোট নেত্রী খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় এই ইফতার মাহফিল হয়। লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও জামায়াতে ইসলামীর আবদুল হালিম। আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, আহসান হাবিব লিংকন, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এনপিপির ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ প্রমুখ।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। অবিলম্বে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে ইউনাইটেড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা নিতে খালেদা জিয়ার অনাগ্রহের পর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের বক্তব্যে নাকচ করে দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা খুব সুনির্দিষ্টভাবে বলেছি যিনি রোগী তার আস্থার ব্যাপার আছে। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই জেলকোডের কোথাও বলা নেই শুধুমাত্র সরকারি হাসপাতালেই চিকিৎসা করতে হবে। সেজন্য দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ইউনাইটেড হাসপাতালে দেশনেত্রী চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।’
দেশের বর্তমান অবস্থাকে ‘ভয়াবহ দুঃসময়’ অভিহিত করে এ থেকে উত্তরণে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে সব গণতান্ত্রিক দল ও শক্তির এক হওয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী কারাগারে যাওয়ার আগে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন। সেই জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। এ জন্য সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও সব মানুষকে এক করে এই ঐক্য গড়ে তুলে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হলে, দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হলে আজকে জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নাই। এই ঐক্য সৃষ্টি করে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের বুকের ওপর চেপে বসা দানবকে সরাতে হবে।’
ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া কোনো কিছুই সম্ভব নয়। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাকে মুক্ত করে এদেশে আমরা অবশ্যই একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারব। যেখানে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সেই নির্বাচন হবে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে। নির্বাচনের সময়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।’
মাদকবিরোধী অভিযানের নামে দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যার কঠোর সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল।
থাইল্যান্ডের ব্যাংককে নিজের চিকিৎসা ও লন্ডনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করে মঙ্গলবার দেশে ফেরেন বিএনপি মহাসচিব।