সিসিকের ৭৪৮কোটি ৬৪লাখ ৪০হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা (ভিডিও)

সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক)-এর ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী মঙ্গলবার (১২ জুন) নগরীর দরগাহ গেইটস্থ হোটেল স্টার প্যাসিফিক হল রুমে ৭শ ৪৮ কোটি ৬৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার এ বাজেট ঘোষণা করেন।

৭শ ৪৮ কোটি ৬৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার ঘোষিত এই বাজেটে সমান পরিমাণ ব্যায় দেখানো হয়েছে। আয়ের খাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় হোল্ডিং ট্যাক্স খাতকে। এ খাতে আয় ধরা হয়েছে ১৭ কোটি ৬৫ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা। এছাড়াও আয়ের অন্যান্য খাতগুলো হলো স্থাবর সম্পতি হস্থান্তরের উপর কর ৮ কোটি টাকা, ইমারত নির্মাণ ও পুন:নির্মানের উপর ২ কোটি টাকা, পেশা ব্যবসার উপর ৮ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা, বিজ্ঞাপনের উপর ১ কোটি টাকা, বিভিন্ন মার্কেটের দোকান গ্রহীতার নাম পরিবর্তন ও নবায়ন ফি বাবদ ২০ লক্ষ টাকা, বাসটার্মিনাল ইজারা বাবদ আয় ৭৫ লক্ষ টাকা, খেয়াঘাট ইজারা বাবদ ১৫ লক্ষ টাকা, সিটি কর্পোরেশনের সম্পত্তি ভাড়া বাবদ ৮০ লক্ষ টাকা, রাস্তাকাটার ক্ষতিপূরণ বাবদ আয় ২০ লক্ষ টাকা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতে আয় ৮০ লক্ষ টাকা, পানির সংযোগ লাইনের মাসিক চার্জ বাবদ ৩ কোটি টাকা ৫০ লক্ষ টাকা, পানির লাইনের সংযোগ ও পুন:সংযোগ ফিস বাবদ ১ কোটি টাকা, নলকূপ স্থঅপনের অনুমোদন ও নবায়ন ফি বাবদ ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। সম্মানীত নগরবাসী নিয়মিত হোল্ডিং ট্যাক্সসহ অন্যান্য বাকেয়া পাওনা পরিশোধ করলে বাজেট বছরে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব খাতে সর্বমোট ৮৭ কোটি ৪৮ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা আয় হবে বলে আশা করছি।


বাজেটে ব্যায় ধরা খাতগুলো হচ্ছে : সরকারী উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) খাতে ২০ কোটি টাকা, সরকারী বিশেষ মঞ্জুরী খাতে ৪০ কোটি টাকা, অন্যান্য প্রকল্প মঞ্জুরী বাবদ ১ কোটি টাকা, সিলেট সিটি কর্পোরেশন অবকাঠামো নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প ১শ কোটি টাকা, সিলেট মহানগরীর ১১টি ছড়া সংরক্ষণ ও আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প ১১৬ কোটি টাকা, ভারতীয় অনুদানের সিলেট সিটি কর্পোরেশনের উন্নত পরিবেশ ও শিক্ষার মান উন্নয়নে সিটি কর্পোরেশন এলাকার অবকাঠামো নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প ১০ কোটি টাকা, দক্ষিণ সুরমা বাস টার্মিনাল আধুনিকায়ন প্রকল্প ৫০ কোটি টাকা, দক্ষিণ সুরমায় জমি অধিগ্রহণ ও ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা, দক্ষিণ সুরমা এম সাইফুর রহমান পার্কে রাইড স্থাপন প্রকল্প ১৫ কোটি টাকা, বিভিন্ন ছড়া খনন ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ প্রকল্প ৫ কোটি টাকা, নগরীর জলাবদ্ধতা হ্রাস করণ প্রকল্প ৩ কোটি টাকা, সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়ন ও অন্যান্য কাজে জমি অধিগ্রহণ বাবদ ৭০ কোটি টাকা, উৎপাদন নলকূপ স্থাপন ৩ কোটি টাকা, পানির লাইন স্থাপন ৫ কোটি টাকা, ২৭টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের স্থায়ী অফিস স্থাপন প্রকল্প ২ কোটি টাকা, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব ফিলিং স্টেশন স্থাপন খাতে ২ কোটি টাকা, এমজিএসপি প্রকল্প খাতে বরাদ্দ ২০ কোটি টাকা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্যানিটারী ল্যান্ড ফিল্ড নির্মাণ প্রকল্প ৫০ কোটি টাকা, আরবান প্রাইমারী এনভায়রন সেন্টার হেলথ সেক্টর ডেভেলাপমেন্ট প্রকল্প ৫০ কোটি টাকা আরবান প্রাইমারী হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারী প্রকল্প ৫০ লক্ষ টাকা। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে আরবান রেজিলেন্স প্রকল্পের আওতায় ইসিও নির্মাণ প্রকল্প ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা, সিলেট মহানগরীর সুয্যারেজ মাস্টার প্লান এর ফিজিবিলিটি স্টাডি করণ প্রকল্প ৬ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা।, ৫০ এমএলডি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের জন্য ১২.৭২ একর জমি অধিগ্রহণ ৫ কোটি টাকা, নগরীর বস্তি সমূহের উন্নয়ন প্রকল্প খাতে ৫০ লক্ষ টাকা এবং সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব উন্নয়ন খাতে মার্কেট নির্মাণ বাবদ প্রাপ্ত সালামী ও সিটি কর্পোরেশেন আবাসিক প্রকল্পের নির্মাণ ব্যায় গ্রহণ বাবদ মোট ১৮ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

বাজেটে রাজস্ব খাতে সর্বমোট ৬১ কোটি ৪২ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে। তন্মধ্যে সাধারণ সংস্থাপন খাতে ২৯ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা, শিক্ষা ব্যায় ১ কোটি ৩২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা, সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অনুদান খাতে ২ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা, স্বাস্থ্য ও প্রয়:প্রণালী ব্যয় বাবদ ১০ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা, ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ খাতে ব্যয় উন্নয়ন কর পরিশোধ খাতে ২০ লক্ষ টাকা, বৃক্ষ রোপণ ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ১৫ লক্ষ টাকা মোকদ্দমা ফি ও পরিচালনা ফি বাবদ ব্যায় ১৫ লক্ষ টাকা, জাতীয় দিবস উদযাপন ব্যয় খাতে ২০ লক্ষ টাকা, খেলাধুলা ও সংস্কৃতি ব্যায় ১২ লক্ষ টাকা, মেয়র কাপ ক্রিকেট ও ফুটবল টুর্ণামেন্ট ব্যয় বরাদ্দ ৫০ লক্ষ টাকা, রিলিফ/জরুরী ত্রাণ ব্যয় বরাদ্দ ১০ লক্ষ টাকা, আকষ্মিক দূর্যোগ/বিপর্যয় ব্যায় বরাদ্দ ১০ লক্ষ টাকা, রাস্তা আলোকিত করণ ব্যয় বরাদ্দ ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা, কার্যালয় / ভবন ভাড়া বাবদ বরাদ্দ ৫০ লক্ষ টাকা, নিরাপত্তা/সিকিউরিটি পুলিশিং ব্যয় খাতে ৩০ লক্ষ টাকা, অন্যান্য ব্যয় খাতে ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

এছাড়া পানি সরবরাহ শাখার সংস্থাপন ব্যয় সহ পানির লাইনে সংযোগ ব্যয়, পাম্প হাউজ, মেশিন, পাইপ লাইন মেরামত ও সংস্কার সহ সর্বমোট ১১ কোটি ৪৬ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে। তাছাড়া ঘোষিত এই বাজেটে রাজস্ব খাতে অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যয় বাবদ মোট ৫৩ কোটি ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

অনুষ্ঠানের শেষের দিকে বাজেটের উপর উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। পরে সাংবাদিকদের সম্মানে এক ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *