অভিযুক্ত রনির বিরুদ্ধে এখনও মামলা হয়নি, জিজ্ঞাসাবাদ চলছে

নিউজ ডেস্ক:: রাজধানীতে প্রাইভেটকারে (ঢাকা মেট্রো- গ ২৯-৫৪১৪) তুলে এক তরুণীকে ধর্ষণচেষ্টাকালে জনতার হাতে আটক রনি হকের বিরুদ্ধে এখনও মামলা হয়নি।

শনিবার রাতে রনিকে আটক করে বেধড়ক মারধরের পর শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন জনতা।

এর পর দুপুর পর্যন্ত রনিকে আটক ও ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলছিল না এ থানার পুলিশ।

তবে দুপুর আড়াইটার দিকে থানার ওসি জিজি বিশ্বাস জানান, আটক রনি হককে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যে তরুণীকে ধর্ষণচেষ্টা করা হয়েছিল তাকে পুলিশ খুঁজছে। তাকে পাওয়ার পর রনির বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

উল্লেখ্য, শনিবার রাতে কলেজগেট সিগন্যালে মদ্যপ বিবস্ত্র রনিকে আটক করে জনতা।

ওই সময় প্রাইভেটকারের ভেতরে এক তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা করছিলেন রনি। তার হাত থেকে বাঁচতে তরুণী ধস্তাধস্তি করছিলেন।

এ দৃশ্য দেখে সেখানে থাকা লোকজন এগিয়ে গিয়ে রনির প্রাইভেরকারটি আটকে ফেলে।
এর পর জনতা গাড়ির ভেতর থেকে আক্রান্ত তরুণী, অভিযুক্ত মদ্যপ রনি ও গাড়িচালককে বের করে আনেন।

তরুণী জনতাকে জানান, তাকে রাস্তা থেকে জোর করে গাড়িতে তুলে ধর্ষণের চেষ্টা করা হচ্ছিল। এর পর জনতা ওই তরুণ ও গাড়িচালককে উত্তমমধ্যম দেন।

শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে রাফি আহমেদ নামে একজন ওই ঘটনার বিবরণসহ একটি ভিডিওচিত্র সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন।

এ ঘটনার বিষয়ে জানতে রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রথমে মোহাম্মদপুর থানার ওসি জামাল উদ্দিন মীরের সঙ্গে যুগান্তরের এ প্রতিবেদকের কথা হয়।

তিনি জানান, কলেজগেটের পশ্চিমাংশ মোহাম্মদপুর থানায় ঘটলেও সেখানে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। পূর্বাংশ শেরেবাংলা নগর থানায় যোগাযোগের পরামর্শ দেন তিনি।

পরে সকাল সাড়ে ১০টায় শেরেবাংলা নগর থানার ডিউটি অফিসার এসআই আবদুল জলিলের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তার ডিউটি শুরু হয়েছে সকাল ৮টায়। রাতে এ রকম কিছু হয়েছে কিনা তিনি এখনও জানেন না। রাতের ডিউটি অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগের পর ঘটনা জানাবেন বলে তিনি জানান।

বেলা ১১টার পর শেরেবাংলা নগর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, শনিবার দিবাগত রাত ৩টায় কলেজগেট থেকে মদ্যপ এক তরুণকে মাতলামি করার অভিযোগে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তিনি ডিউটি অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।

বেলা সাড়ে ১১টায় যোগাযোগ করলে ডিউটি অফিসার আবদুল জলিল জানান, এসআই মিনহাজ আহমেদের নেতৃত্বে ওই যুবককে আটক করা হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে খোঁজ নিয়ে জানানোর কথা বলেন ডিউটি অফিসার।

পরে থানা থেকে দেয়া মোবাইল ফোন নম্বরে এসআই মিনহাজ আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এরপর দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে ফের যোগাযোগ করলে ডিউটি অফিসার আবদুল জলিল জানান, থানার ওসিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছেন।
পরে হালনাগাদ তথ্য জানার জন্য শেরেবাংলা নগর থানার ওসি, ইন্সপেক্টর (তদন্ত), ডিউটি অফিসার ও এসআই মিনহাজ আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে কাউকে পাওয়া যাচ্ছিল না।

সর্বশেষ দুপুর ২টার দিকে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ফোন রিসিভ করে ওসির সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

এরপর আড়াইটার দিকে ওসি জিজি বিশ্বাস অভিযুক্ত রনিকে থানায় জিজ্ঞাসবাদ করা হচ্ছে বলে জানান। তিনি বলেন, মামলা করার জন্য ধর্ষণচেষ্টার শিকার তরুণীকে খোঁজা হচ্ছে।

এদিকে শনিবার রাতের ধর্ষণচেষ্টার এ ঘটনাটি যে রাফি আহমেদের ভিডিও সম্বলিত স্ট্যাটাসের কারণে তা আর রোববার দুপুর থেকে দেখা যাচ্ছে না।

অভিযুক্ত রনি হক ও তার গাড়ির চালককে আটক করে মাররের দুটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন রাফি আহমেদ। সেই ভিডিও দুটিও মুছে ফেলেছেন রাফি।

এর মধ্যে একটি ভিডিওতে ধর্ষণচেষ্টার শিকার তরুণীকে দেখা যায়। ২০-২২ বছরের চশমা পরা আতঙ্কিত তরুণীর চোখেমুখে ছিল আতঙ্ক। তিনি ওড়না দিয়ে চোখের পানি মুছছিলেন।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *