ট্রাম্প-কিম সামিট: সিআইয়ের ভিন্ন পূর্বাভাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের মধ্যে সিঙ্গাপুর সামিট নিয়ে যখন নতুন যুগের আশা করছেন সমাজবিজ্ঞানীরা তখন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ একটি উল্টো রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, দৃশ্যমান ভবিষ্যতে পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করার কোনো পরিকল্পনা নেই উত্তর কোরিয়ার। এক্ষেত্রে পশ্চিমাদের চোখে একটি প্রলেপ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে কিম জং উনের। ফলে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প যে দাবি করছেন তার ঠিক উল্টো রিপোর্ট দিয়েছে সিআইএ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, অদূর ভবিষ্যতে পারমাণবিক কর্মসূচি বাতিলের পরিকল্পনা রয়েছে উত্তর কোরিয়ার। তাহলে কি সিআইএর রিপোর্ট ভুল নাকি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে ভুল তথ্য গিয়েছে।

এমন প্রশ্ন উঠেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইল। এতে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ স্বৈরশাসক কিম জং উনের সঙ্গে সিঙ্গাপুরে একটি পারমাণবিকতা বিষয়ক সামিটে বসতে অব্যাহতভাবে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প প্রশাসন। তবে রিপোর্টে বলা হচ্ছে, উত্তর কোরিয়া কখনোই তার পারমাণবিক অস্ত্র পুরোপুরিভাবে ত্যাগ করবে না। একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেছেন, সবাই জানেন যে, তারা (উত্তর কোরিয়া) পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত হবে না। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণাকালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন তিনি উত্তর কোরিয়ার নেতার সঙ্গে সাক্ষাত করতে চান। এটা এমন হতে পারে যে, একটি সম্মেলনের টেবিলে হ্যামবার্গার খেতে খেতে। দক্ষিণ কোরিয়ায় নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত ক্রিস হিলও সিআইএর সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই রকম কথা বলেছেন। ২০১৬ সালে বৃটেন থেকে উত্তর কোরিয়ার উপ রাষ্ট্রদূত হিসেবে বহাল থাকা অবস্থায় পালিয়ে যান থাই ইয়ং-হো। তিনিও মনে করেন, বর্তমানে কূটনীতির যে ঘূর্ণাবর্ত বইছে এবং যে সমঝোতা চলছে তাতে নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে আন্তরিক ও পরিপূর্ণতা আসবে না। তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার নিউসিস নিউজ এজেন্সিকে ট্রাম্প-কিম সামিট সম্পর্কে বলেছেন, শেষ পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া একটি পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রই থেকে যাবে। উপরে একটি খোলস দেয়া হবে ‘নন-নিউক্লিয়ার’ রাষ্ট্র হিসেবে। আগামী ১২ই জুন সিঙ্গাপুরে ট্রাম্প-কিম সামিট হওয়ার কথা।

এক সপ্তাহ আগেও এ সম্মেলন হচ্ছে না এমন একটি ধারণা ছিল। কারণ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওই সামিটকে বাতিল বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু তার এক সপ্তাহের মধ্যে তাতে সুবাতাস বইছে বলে তিনি মত দেন। শুরু হয়ে যায় নতুন করে কূটনৈতিক দৌড়ঝাঁপ। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন আকস্মিক বৈঠকে মিলিত হন। মিডিয়ায় ছবি ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, দুই নেতা বুকে বুক মিলিয়েছেন। এমনটা এতদিন ভাবাও যায় নি। অথবা তাই সত্য হয়েছে। তারা আলোচনা করেছেন সিঙ্গাপুর সামিট নিয়ে। এরপর বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণ করতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি টিম পাঠান উত্তর কোরিয়ায়। আবার উত্তর কোরিয়ার গোয়েন্দা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল কিম ইয়ং-চল ছুটে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। উদ্দেশ্য, সামিটের আগে ক্ষেত্র প্রস্তুত করা। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ১২ই জুন সিঙ্গাপুরে মুখোমুখি বসছেন যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার দুই নেতা।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *